আস্থা ভোট ঘিরে ধুন্ধুমার বনগাঁয়

নতুন গতি নিউজ ডেস্ক: আস্থা ভোট ঘিরে এদিন সকাল থেকেই চাপা উত্তেজনা ছিল বনগাঁ পুরসভায়। বনগাঁ পুরসভা নিজেদের দখলে বলেই ঘোষণা করে দিল তৃণমূল কংগ্রেস। পুরসভার মধ্যেই স্লোগান দিতে থাকেন তৃণমূল কাউন্সিলররা। তৃণমূলের দাবি, বেলা ৩টের সময়ে আস্থা ভোট হওয়ার কথা ছিল। ৩:১৫ পর্যন্ত অপেক্ষা করেছিলেন আস্থা ভোট করানোর দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক। কিন্তু তৃণমূল চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্যের বিরুদ্ধে যাঁরা অনাস্থা এনেছিলেন, তাঁরা কেউই নির্দিষ্ট সময়ে উপস্থিত হতে পারেননি। উপস্থিত কাউন্সিলরদের ভোটেই জয়ী হন চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্য। আর তাতেই স্পষ্ট হয়ে যায় যে ফের বনগাঁ পুরসভার দখল নিজেদের হাতেই রাখল তৃণমূল। যদিও তৃণমূলের দাবি মানতে নারাজ বিজেপি৷

    তাঁদের অভিযোগ, দুই কাউন্সিলরের গ্রেপ্তারিতে হাইকোর্ট স্থগিতাদেশ দেওয়া সত্বেও, তাঁদের আস্থা ভোটে অংশগ্রহণ করতে দিচ্ছে না পুলিশ৷ শাসকদলের মদতে কাজ করছে স্থানীয় প্রশাসন৷ আস্থা ভোটে যাতে তৃণমূল জয়লাভ করতে পারে সেই চেষ্টা করছে পুলিশ৷বিজেপি কাউন্সিলরদের অভিযোগ, হাইকোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও তাঁদের পুলিশ তাদের পুরসভায় ঢুকতে দেয় নি। পুলিশ আর তৃণমূলের গুণ্ডাবাহিনী বাধা দিচ্ছে। আর তৃণমূলের পাল্টা দাবি, দুই কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে। তাঁদের গ্রেফতার করতে হবে। পুরসভার বাইরে বচসা এ নিয়ে ক্রমশই রাজনৈতিক সংঘর্ষের চেহারা নেয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে নামাতে হয় র‍্যাফ এবং বিরাট পুলিশ বাহিনী। প্রসঙ্গত, বনগাঁ পুরসভার এক মহিলা তৃণমূল কাউন্সিলরকে অপহরণের মামলায় অভিযুক্ত দুই বিজেপি কাউন্সিলরের গ্রেপ্তারির উপর শুক্রবারই স্থগিতাদেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। দুই বিজেপি কাউন্সিলর হিমাদ্রি মণ্ডল ও কার্তিক মণ্ডলের গ্রেপ্তারি এক সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। উল্লেখ্য, ২২ ওয়ার্ড বিশিষ্ট বনগাঁ পুরসভায় ২১ জন কাউন্সিলরই তৃণমূলের ছিল। আর একটি ওয়ার্ড ছিল সিপিএম দখলে। লোকসভা ভোটের ফল বেরনোর পর থেকেই ডামাডোল চলছে পুরসভায়।

    হাইকোর্টের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও অপহরণে অভিযুক্ত দুই বিজেপি কাউন্সিলর হিমাদ্রি ও কার্তিক মণ্ডলকে পুরসভার ভিতরে আজ ভোট দিতে ঢুকতে দেওয়া হয় নি বলেই অভিযোগ। ফলে পুরসভার সামনে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বিজেপি কর্মী সমর্থকরা। সেসময় ভোটকক্ষে ছিলেন ৯ তৃণমূল কাউন্সিলর, একজন কংগ্রেস কাউন্সিলর। কংগ্রেসের ওই কাউন্সিলর তৃণমূলকেই ভোট দেবেন বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন। ২২ আসনের বনগাঁ পুরসভায় ১০ জনের সমর্থনেই আস্থাভোটে জয়ী হন চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্য। এদিন আস্থা ভোটের শেষেই আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বনগাঁ পুরভবন চত্বর। বিজেপি পুরভবনে ঢোকার চেষ্টা করলে পরিস্থিতি নতুন করে খারাপ হয়। পুলিসের সঙ্গে শুরু হয় বিজেপি কর্মীদের খণ্ডযুদ্ধ। পুলিসের সামনেই পড়ে বোমা। পরিস্থিতি সামলাতে লাঠিচার্জ করতে হয় পুলিসকে। ফাটানো হয় কাঁদানে গ্যাসের সেল।