বিরোধীরা যাতে প্রার্থীই দিতে না পারেন, দিলেও তাঁরা যাতে একটিও ভোট না পান সে দিকে নজর রাখার উপদেশ দিয়ে বিতর্কে জড়ালেন তৃণমূল বিধায়ক কল্যাণ ঘোষ

নিজস্ব সংবাদদাতা : রাজ্যে সামনের পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিরোধীরা যাতে প্রার্থীই দিতে না পারেন, দিলেও তাঁরা যাতে একটিও ভোট না পান, দলীয় নেতা-কর্মীদের সে দিকে নজর রাখার উপদেশ দিয়ে বিতর্কে জড়ালেন হাওড়ার ডোমজুড়ের তৃণমূল বিধায়ক কল্যাণ ঘোষ। গত বারের অর্থাৎ, ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের ‘দগদগে ক্ষত’ নিয়ে এখনও রাজনৈতিক টানাপ়ড়েনের মাঝে বিধায়কের এমন মন্তব্যে অস্বস্তিতে পড়ল শাসকদল।

     

    সম্প্রতি নেটমাধ্যমে কল্যাণের একটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে। ওই ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, একটি জনসভায় ভাষণ দিচ্ছেন বিধায়ক তথা হাওড়া সদরের তৃণমূল সভাপতি। সেখানে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিরোধীরা যাতে এখানে প্রার্থীই দিতে না পারে। আর যদি প্রার্থী দেয়, তা হলে যাতে কোনও ভোট না পড়ে, সে দিকে লক্ষ রাখতে হবে।’’ যদিও ওই ভিডিয়ো যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।

     

    কল্যাণের এই মন্তব্য প্রকাশ্যে আসার পরেই আগের পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে শাসকদলকে বিঁধতে শুরু করেছে বিরোধীরা। বিজেপির রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য উমেশ রাই বলেন, ‘‘তৃণমূল একটা উচ্ছৃঙ্খল দল। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে হিংসা ছড়িয়েছে। ভোট লুট করেছে। এ বারেও ভোটের আগে থেকেই হুমকি দিতে শুরু করেছে। তবে এ বার প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। আমরা রাষ্ট্রপতিকে জানাব, নির্বাচন কমিশনকে জানাব। বোঝাই যাচ্ছে কী ভাবে ভোট হবে!’’যদিও কল্যাণের বক্তব্য, তাঁর ভাষণের ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। তিনি যা বলতে চেয়েছেন, তা বোঝার জন্য গোটা ভাষণ শোনা দরকার বিরোধীদের। জানা গিয়েছে, গত পয়লা বৈশাখ হাওড়ার জগদীশপুরে একটি দলীয় কর্মসূচিতে গিয়ে ওই মন্তব্য করেছিলেন কল্যাণ। তা নিয়ে এখন হইচই শুরু হতেই তিনি বলেন, ‘‘আমি আসলে বলতে চেয়েছি, মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নমূলক প্রকল্প এমন ভাবে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে যাতে বিরোধীরা ভোটে দাঁড়ানোর সাহস না পায়। আর যদি তাঁরা দাঁড়ানও, তা হলে যাতে তাঁদের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়।’’ বিরোধীরা তাঁর নামে অপপ্রচার করছেন বলে দাবি করে কল্যাণ আরও বলেন, ‘‘একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পর বিরোধীদের পায়ের মাটি সরে গিয়েছে। তাঁদের এখনও অপপ্রচার করা ছাড়া আর কোনও কাজ নেই।’