রাজ্য জুড়ে ট্রাক ধর্মঘটের জেরে রামপুরহাট এলাকার ক্রাসার নিঃস্তব্দ। কর্মহীন প্রায় পঞ্চাশ হাজার শ্রমিক

আজিম শেখ,নতুন গতি, বীরভূম: রাজ্য জুড়ে রাস্তায় পুলিশি অত্যাচার, ওভারলোডিং, সহ ছয় দফা দাবী নিয়ে গত তিনদিন থেকে চলছে ট্রাক ধর্মঘট।এই ধর্মঘটের ফলে জেলার পাথর শিল্প কার্যত নিঃস্তব্দ। জেলার রামপুরহাট মহকুমার শালবাদরা, বারমেসিয়া, বড় পাহাড়ী, নলহাটি র বাহাদুরপুর, মুরারই এর রাজগ্রাম সন্তোষ পুর এই সমস্ত এলাকায় কয়েক হাজার পাথর ক্র্যাসার রয়েছে। পুরো মহকুমা জুড়ে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ কর্মরত এই পাথর শিল্পে। বেশীর ভাগই দিনমজুর। প্রতিদিন কাজ করে তবেই সংসার চলে। তিনদিন থেকে ট্রাক ধর্মঘটের ফলে কাজ নেই তাদের। অনেকের বাড়ি তে হাঁড়ি চাপেনা। মালিকরা ও চিন্তায় প্রতিটি শ্রমিক কে প্রতিদিন অগ্রিম মজুরি দিতে হচ্ছে। নতুন করে প্রোডাকশন করতে সাহস করছেন না মালিকরা। স্টকে যা মাল মজুত আছে তা বিক্রি না হওয়া পর্যন্ত নতুন করে স্টক বাড়াতে চাইছেন না। বারমেসিয়ার ক্র্যাসার ব্যাবসায়ী উন্নত সেখ, আসিফ আহমেদ, সাগর সেখ রা জানান শুধু রামপুরহাটের তিনটি পাথর শিল্পাঞ্চল শালবাদরা, বারমেসিয়া,বড় পাহাড়ী তে তিনশ র বেশি ক্র্যাসার আছে। গড়ে তিন কোটি টাকার ব্যাবসা হয়। মালিক শ্রমিক মিলে তিরিশ হাজারের ও বেশি মানুষের রুজি রোজগার হয় এখানে। সরকারের উদাসীনতায় তা এখন বন্ধ। আমরা ট্রাক মালিকদের ধর্মঘট কে সমর্থন করি। কারণ তারা যদি নিরাপদে মাল বহন করতে না পারেন তাহলে আগামী দিনে আমাদের ব্যাবসা বন্ধ করে দিতে হবে। আমরা চাই সরকার প্রশাসন বিষয়টির শীঘ্রই সমাধান করুন। একই বক্তব্য রাজগ্রামের পাথর ব্যবসায়ী গাড়ির মালিক মফিজুল সেখের। অন্যদিকে যেহেতু বিষয়টি রাজ্যজুড়ে চলছে স্থানীয় প্রশাসন কিছু করতে পারছেন না। এবিষয়ে বিজেপির জেলা যুব ওবিসি র সভাপতি অমৃত লাল ঘোষ জানান রামপুরহাট মহকুমা তথা বীরভূম জেলার অর্থনৈতিক অবস্থাটা বেশীর ভাগই নির্ভর করে পাথর শিল্পের উপরে ।তিনদিন থেকে ট্রাক ধর্মঘটের জেরে দৈন্দদিন বাজারে প্রভাব পরেছে। দোকানপাট, বাজার হাট সব কিছুতেই মন্দা দেখা দিয়েছে। বর্তমান সরকারের কোনো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেই। কোনে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবার সাহস নেই। যার ফলে মানুষকে ভুগতে হচ্ছে। তাদের গড়িমসিতে বহুমানুষ না খেয়ে মরেছে, সেদিকে খেয়াল নেই সরকারের। আমরা চাই বিষয়টি তে মুখ্যমন্ত্রী নিজে হস্তক্ষেপ করে দ্রুত সমাধান করুন। বাম নেতা পার্থ প্রতিম গুহ জানান মুখ্যমন্ত্রী সম্প্রতি ‘ দিদিকে বলো’একটি কর্মসূচি নিয়েছেন। এলাকার নেতা মন্ত্রীরা, প্রতিদিন নিয়ম করে এলাকায় যাচ্ছেন । অথচ কয়েকদিন থেকে পাথর শিল্পাঞ্চলে হাজার হাজার মানুষের রুজি রোজগার বন্ধ আছে সেটা কেউ দিদি কে বলছেন না। এখানে কাটমানির গল্প নেই, গরীব মানুষের রুজি রোজগারের বিষয়,সে কারণে মন্ত্রী নেতাদের আগ্রহ নেই। তারচেয়ে কোথায় রাস্তা করতে হবে, উন্নয়ন হওয়া কাজের পুনরায় মেরামতি করতে হবে সেসব খুঁজে বেড়াচ্ছেন। তাতে কাটমানির ভাগ পাওয়া যাবে। তিনি জানান সরকার দ্রুত সমাধান করুন।