হরিশ্চন্দ্রপুরে জল নিষ্কাশন নিয়ে গ্রামবাসীদের মধ্যে সংঘর্ষে আহত ১৩

মহম্মদ নাজিম আক্তার, নতুন গতি, হরিসচন্দ্রপুর: তুলসিহাটা অঞ্চলের বসতপুর এলাকায় তৈরি হয়েছিল বাহাদুরা ক্যানেল। উদ্দেশ্য ছিল বন্যা র জল নিষ্কাশন করা।বর্তমানে সেই ক্যানেলের পাশে এলাকার কিছু লোক পুকুর খনন করা তে পুকুরের বাঁধে ক্যানেলের মুখ বন্ধ হয়ে যায়। সমস্যায় পড়ে ওই এলাকার বিস্তীর্ণ অঞ্চলের বেশ কয়েকটি গ্রামের কয়েক হাজার কৃষকের জমি। এবারের অতিবৃষ্টিতে সেই ক্যানেল দিয়ে জল নিষ্কাশন না হওয়াতে কৃষি জমিতে জল জমে যায়। আজ সকাল থেকেই সেই ক্যানেলের মুখ কাটা নিয়ে গণ্ডগোল সৃষ্টি হয়। এই গণ্ডগোলের জেরে পুকুরের মালিকপক্ষ ও এলাকার কৃষক শ্রেণী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সংঘর্ষের জেরে দু’পক্ষে মোট ১৩ জন আহত হন। এদের মধ্যে দু’জনকে মালদায় রেফার করা হয়েছে। ওই এলাকার কৃষক বাঁচাও কমিটির সম্পাদক দিল রোজ জানালেন ব্রিটিশ আমলে তুলসিহাটা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার এই ক্যানেল এর উপরে কাঠের সাঁকো ছিল। আজ থেকে ৩৫ বছর আগে বাহাদুরা ক্যানালের উপর সাঁকোর পরিবর্তে পাকা ব্রিজ নির্মাণ করা হয়।বছরখানেক আগে ওই এলাকার বসতপুর গ্রামের মুষ্টিমেয় কিছু লোক তারা ক্যানেলের পাশে একটি পুকুর খনন করে এবং সেই পুকুরের পাড় দিয়ে ক্যানেলে একটি মুখ বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে তুলসিহাটা বড় রশিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের মুড়াগাছি রশিদাবাদ, বিদ্যানন্দপুর, অঙ্গারমনি, শ্রীচন্দ্রপুর, সহ দশ-বারোটি গ্রামের প্রায় কয়েক হাজার হেক্টর জমি প্রভাবিত হয়। বৃষ্টির জল ওই ক্যানেল দিয়ে পাস না হতে পেরে ওই এলাকার ধান ও পাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়।এই নিয়ে আমরা এলাকার ব্লক প্রশাসন থেকে শুরু করে মহকুমা শাসক এবং জেলাশাসকের দ্বারস্ত হয়েছি। সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের মাধ্যমে ওই ক্যানেল এর নিচে দিয়ে হিউম পাইপ বসানো হবে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সেই পাইপ বসাতে বাধা দেয় পুকুরের মালিক পক্ষ। আজ পঞ্চায়েত প্রধানের প্রতিনিধি ও প্রশাসনিক প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে এই ক্যানেলে হিউম পাইপ বসানো হবে। যথারীতি আজ প্রধান এখানে পাইপ বসাতে আসে। কিন্তু পুকুরের মালিক পক্ষ ও এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক এদের মধ্যে বাদানুবাদ সৃষ্টি হয় এবং এর ফলে তারা নিজেরাই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সংঘর্ষের ফলে পাইপ বসানোর কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে গ্রামের কৃষক শ্রেণীর লোক ওই ক্যানেল কেটে দেয়। অবিলম্বে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে সমস্যার সমাধান হোক। এদিকে ওই পুকুরের মালিক পক্ষের মসদর আলী জানান আমরা ওই পুকুরে মাছ চাষ করেছি। আমরাও চাই না এলাকার কৃষকদের ক্ষতি হোক। প্রশাসনের ওপর আমাদের আস্থা আছে।

     

    এদিকে এই ঘটনা প্রসঙ্গে তুলসিহাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শকুন্তলা সিংহ জানান প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আজ আমরা পঞ্চায়েত থেকে এলাকায় হিউম পাইপ বসানোর জন্য গিয়েছিলাম। কিন্তু ওই কাজে আমরা এলাকায় গিয়ে বাধা পায়। এবং ওখানে দু’পক্ষের মধ্যে গন্ডগোল শুরু হয়ে যায়।পরিস্থিতি উত্তেজনা দেখে আমরা ওখান থেকে চলে আসি। স্থানীয়রাই ক্যানেল কেটে দেয়।

    হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নং ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক অনির্বাণ বসু জানান আজকের ঘটনা টা কখনোই মেনে নেওয়া যায় না। আমরাও চাই ওখানে সমস্যার সমাধান হোক। কিন্তু কখনোই তা গন্ডগোল এর মাধ্যমে নয়। আজকের ঘটনার প্রশাসনিক পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হবে।এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার বিশাল পুলিশবাহিনী এলাকায় চলে যান। প্রশাসনিক কর্তাদের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।