নন্দীগ্রামে গেরুয়া শিবিরে ভাঙন, তৃণমূলে ঘর ওয়াপসি ২০০ পরিবারের

নতুন গতি নিউজ ডেস্ক: শুভেন্দু অধিকারীর খাসতালুকেই গেরুয়া শিবিরে ভাঙন! রবিবার নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের গোকুলনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল ছেড়ে BJP-তে যাওয়া শঙ্কর দাস সহ প্রায় দুই শতাধিক BJP পরিবার পুনরায় ঘাস-ফুল শিবিরে যোগদান করলেন। এঁদের মধ্যে নন্দীগ্রাম আন্দোলনের অন্যতম নেত্রী, নির্যাতিতা রাধারানি আড়িও ‘ঘর ওয়াপসি’ করেন। এদিন শুধু BJP ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া নয়, আগামী দিনে গোকুলনগর গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূলেরই জয় হবে বলেও দাবি জানিয়েছেন শঙ্কর দাস।

    জানা গিয়েছে, এদিন নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেস কমিটির উদ্যোগে একটি কর্মী যোগদান সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেই ‘ঘর ওয়াপসি’ করেন শঙ্কর দাস। তাঁর নেতৃত্বেই গোকুলনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রায় দুই শতাধিক BJP পরিবার তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেন। যদিও শঙ্কর দাসের দাবি, দুই শতাধিক নয়, এদিন তাঁর নেতৃত্বে গোকুলনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের চার শতাধিক পরিবার BJP ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করেন। তাঁদের দলবদল অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিম পাঁশকুড়ার বিধায়ক ফিরোজা বিবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচন এজেন্ট শেখ সুফিয়ান, ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি স্বদেশ রঞ্জন দাস সহ অন্যান্য স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। এঁরা শঙ্কর দাস সহ ওই BJP পরিবারদের সাদরে তৃণমূলে গ্রহণ করেন।

    একসময়ের তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য তথা স্থানীয় তৃণমূলের সম্পাদক শঙ্কর কুমার দাস বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরেই দলবদল করে গেরুয়া শিবিরে যোগ দেন। সেটা ঐতিহাসিক ভুল ছিল দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, “আমার BJP-তে যোগদান করা একটা ঐতিহাসিক ভুল ছিল। আমরা শুভেন্দু অধিকারীকে আন্দোলনকারী হিসাবেই দেখেছিলাম। আগে ওনার সঙ্গে ছিলাম, তাই ওনার হাত ধরেই চলে গিয়েছিলাম। কিন্তু বিধানসভা ভোটে যে ভুল হয়েছে সেটা আর আগামী দিনে হবে না। BJP-র এই জয় আর জয় থাকবে না। গোকুলপুরে আর ওদের জয় থাকবে না। গোকুলনগর-৬ অঞ্চল থেকে ৪০০ পরিবার যোগ দিয়েছে। আমরা তৃণমূলের কর্মী হিসাবে থাকতে চাই।”

    অন্যদিকে, BJP-কে ‘মিথ্যাবাদীর দল’ আখ্যা দিয়ে শেখ সুফিয়ান বলেন, “নন্দীগ্রাম মামলা রাজ্য সরকার তুলে নিয়েছিল। BJP পুনরায় খুলিয়েছে। ফলে গোকুলনগরের ৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা পুনরায় খুলে গিয়েছে। ওরা BJP করত। ওরা শুভেন্দু অধিকারীকে বলতে গেলে পাত্তা পায় না। শুভেন্দু বেকারদের বায়োডাটা নিয়ে চাকরি দেবে বলেছিল। কিছু দেয়নি। উন্নয়ন করেনি। BJP মিথ্যাবাদী সকলে বুঝতে পেরেছে।” একইসঙ্গে তিনি বলেন, “নন্দীগ্রাম আন্দোলনের অন্যতম নেত্রী, নির্যাতিতা রাধারানি আড়িকেও শুভেন্দু অধিকারী ভুল বুঝিয়ে কাছে টানার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তিনি বুঝতে পেরেছেন, যারা তাঁদের ধর্ষণ করেছিল, খুন করেছিল, তাদের সঙ্গে শুভেন্দু রাজনীতি করছে। ওদের সঙ্গে থাকা যাবে না।”

    যদিও দলে ভাঙনের কথা অস্বীকার করেছেন BJP-র তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তপন ব্যানার্জী। তিনি বলেন, “শঙ্কর দাস সহ দুই শতাধিক BJP পরিবারের তৃণমূলে যোগদানের কোনও খবর আমার কাছে নেই। যদি এরকম কিছু হয়ে থাকে বিষয়টা খতিয়ে দেখব।”