দুস্কৃতির গুলিতে নিহত দলীয় বিধায়ক সত্যজিতের বাড়িতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়

শরীফুল ইসলাম, নতুন গতি:

    নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের জনপ্রিয় বিধায়ক নিহত সত্যজিৎ বিশ্বাসের বাড়িতে এলেন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

    উল্লেখ্য, শনিবার , বাড়িথেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে পাড়ার সরস্বতী পুজোর অনুষ্ঠানে একেবারে প্রকাশ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক কে গুলি করে খুন করা হয়।

    নদীয়া জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্ব এই হত্যা কাণ্ডের পিছনে বিজেপির খুনের রাজনীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনেছেন আগেই।

    আজ, সোমবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় হাঁসখালির বিধায়কের বাড়িতে এসে তাঁর ছবিতে মাল্যদান এবং নিহত বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাসের স্ত্রী-পুত্র ও পরিবার-পরিজনের সঙ্গে দেখা ও কথা বলার পর সাংবাদিক সম্মেলন করে
    একই অভিযোগ এনে অভিষেক বলেন, “তিন চার মাস আগে থেকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি উত্তর চব্বিশ পরগনা এবং পশ্চিম মেদিনীপুর বিভিন্ন জায়গায় যেখানেই যাচ্ছেন , প্রকাশ্য জনসভায় হুমকি দিচ্ছেন মেরেদেব, পুঁতে দেব, গর্তে ঢুকিয়ে দেব , অনাথ করে দেব এই ভাষায় । প্রতিনিয়ত তাঁর কর্মীদের উদ্দেশ্যে হত্যা ষড়যন্ত্র উস্কানী মূল কথা বলছেন।এই হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত অভিজিৎ পুন্ডরী আরএসএসের লোক। তার মা পর্যন্ত বলছেন ছেলে বিজেপি করে ।এর পরেও বলতে হবে এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে কারা জড়িত?”
    এই হত্যা কাণ্ড ‘গোষ্ঠীদ্বন্দের ফল’ সাংবাদিকদের ছোড়া এক প্রশ্নের উত্তরে
    অভিষেক বাবু বলেন , “সত্যজিৎ এলাকার জনপ্রিয় নেতা ছিলেন, মতুয়া সংঘের প্রতিনিধি , তরুণ মতুয়া মুখ। রাজনীতিতে একেবারে তৃণমূল স্তর থেকে উঠে এসেছিল। অত্যন্ত জনপ্রিয় ওঁর কোনো প্রতিদ্বন্দী ছিল না। এটাকে গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব বলে চালিয়ে দেওয়া যাবে না।”
    এর পর রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের যুব সভাপতি সাংবাদিকদের দ্বার্থহীন ভাষায় বলেন,
    “বিজেপি সর্বত্র হিংসার রাজনীতি শুরু করেছে। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী অঞ্চল গুলো ওদের টার্গেট। ঝাড়খন্ড বর্ডার বলরামপুর এলাকায় ওরা চেষ্টা করেছিল । ওখানে আমরা আসার পর স্থিতাবস্থা বজায় হয়েছে। কুচবিহার দিনহাটা ,মোহাম্মদপুর বাজার এইসব অঞ্চল গুলোই অশান্তি বাঁধানোর চেষ্টা করছে। হাঁসখালিতে সত্যজিৎ ওদের পথের কাটা ছিল । দিন চারেক আগে ঠাকুর নগরে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ, এলাকায় দশবার লোডশেডিং, দেহরক্ষীর ছুটি নেওয়া। এসব ঘটনায় পরিষ্কার সত্যজিৎ হত্যা একটা পরিকল্পনা মাফিক খুনের ঘটনা।”

    এর পর অভিষেক কিছুটা আবেগ বিহ্বল হয়ে পড়েন। তিনি সাংবাদিক দের উদ্দেশ্যে করে বলেন, “সত্যজিৎ আমার সহযোদ্ধা ছিল। নদীয়ার যুব সভাপতি। এক্ষেত্রে তাই আমার দায়বদ্ধতা অনেক বেশি।
    এই বেদনা দায়ক নির্মম পরিকল্পিত সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদের কোনো ভাষা নেই। অপরাধীরা সাজা পাবেই। দুজন গ্রেফতার হয়েছেন। দোষীরা কেউ রেয়াত পাবে না। এটা ভেবে সান্ত্বনা পাওয়ার কিছু নেই। দুর্নীতি করবো, খুন করবো আর দিল্লি গিয়ে পায়ে ধরে রেহাই পেয়ে যাবো। মনে রাখবেন এখানে প্রশাসনে আছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘাড় ধরে দোষীদের শ্রীঘরে ঢোকাবে। আমাদের প্রশাসনে সম্পূর্ণ আস্থা আছে।”

    আজ, হাঁসখালির সাংবাদিক সম্মেলনে অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের পাশে ছিলেন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের রাজ্য সম্পাদক শান্তিপুরের বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্য, রানাঘাট কেন্দ্রের সাংসদ তাপস মন্ডল সহ তৃণমূলের বিশিষ্ঠ নেতৃত্ব।