আলিপুর জেল পরিণত হলো হেরিটেজ মিউজিয়ামে

নতুন গতি প্রতিবেদক : আজ থেকে ১০০-১৫০ বছর আগে আজকের আলিপুর ছিল ঘন জঙ্গলে ঢাকা! আদি গঙ্গার দুই পাড়ে ছিল ঘন জঙ্গল! সেই জঙ্গল বিস্তৃত ছিল বেহালার সাবর্ন চৌধুরী দের বাড়ির আগে পর্যন্ত। আজকের জেমস লং সরণিতে চলত মার্টিন বার্ন কোম্পানির ট্রেন।

    ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হাত বদলের পর পরাধীন ভারতবর্ষ শাসন করছে ব্রিটিশ সরকার। জন-মানবহীন এমন একটা জায়গা ছিল জেল তৈরির পক্ষে আদর্শ। দেশপ্রেমিকদের উপর চলত অকথ্য, পাশবিক অত্যাচার! সেইসব চিৎকার হারিয়ে যেত আদি গঙ্গার ঢেউয়ের আওয়াজে! কয়েদীদের বুকফাটা কান্না চাপা পড়ে যেত শিয়ালের চিৎকারে! গারদের ছোট ছোট খুপরি ঘরে প্রবেশ করত না আলো-বাতাস! সন্তান হারানোর কান্নায় কত-শত মায়ের কান্না চাপা পরে গেছিল অবিচারের ফাইলে।

    ওল্ড আলিপুর জেল তৈরি হয় ১৮৬৪ সালে। পরবর্তী কালে নাম পরিবর্তন হয়ে আজকের প্রেসিডেন্সি জেল। দেশপ্রেমিক দের গ্রেফতারের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় কয়েদ হয়ে যায় সংকুলান! আইন পাস করে ১৯০৬ সালে তৈরি হয় আজকের আলিপুর সেন্ট্রাল জেল। আদি গঙ্গার তীরে। লাল ইটের তৈরি ব্রিটিশ নকশায় প্রায় ৮০ একর জমিতে তৈরি হয় এই কয়েদখানা। যা আজকের দিনে হেরিটেজ সাইট। ২০১৯ সালে এই জেল বন্ধ হয়ে যায় এবং স্থানান্তরিত হয় বারুইপুরে। স্বাধীনতার আগে এবং পরে বহুদিন পর্যন্ত বিভিন্ন দেশনেতা এখানে জেল খেটেছেন।

    এমন বহু ইতিহাস লুকিয়ে আছে প্রতিটি ইটের খাঁজে! বুক ফাটা কান্না আজও অনুরণিত হয় গারদের দেয়ালে। সেইসব ইতিহাস জানতে হলে চলে আসুন আলিপুর মিউজিয়ামে।

    মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী উদবোধন করেছেন সম্প্রতি। খুলে যাচ্ছে জনসাধারণের জন্য। বেলা ১২টা থেকে রাত ৯টা। প্রবেশ মূল্য মাত্র ৩০ টাকা। লাইন এন্ড সাউন্ড ১০০ টাকা! সময় ৭-৮ টা এবং ৮-৯ টা! পেটপুজো করার জন্য আছে অত্যাধুনিক ক্যাফেটেরিয়া।