লকডাউনে রক্তদান ঈদের তোফা রক্তদান। আমরা ফ্যামিলি গ্রুপের রক্তদান শিবির।

নতুন গতি ওয়েব ডেস্ক: আজকাল সোশ্যাল মিডিয়ায় মানবিকতার নজির হাজার-হাজার দেখা যায়। এই প্যানডেমিক পরিস্থিতি হওয়ার পর আরও বেশি ভাবে মানবিক মুখ দেখা যায় সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে। কিন্তু আজ থেকে ছয় বছর আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় তৈরি হয় আমরা ফ্যামিলি গ্রুপ যারা জন্ম লগ্ন থেকেই মুমূর্ষু রোগীর জন্য হসপিটালে হসপিটালে দৌড়ে রক্তদান করে থাকেন। গত বছরও লকডাউন এর সময় এরা বিভিন্ন হসপিটালে হসপিটালে দৌড়ে যায়, শুধু গতবছর কেন প্রতি মাসেই তারা অন্তত কমপক্ষে পাঁচ থেকে সত টা হসপিটালে দৌড়ে যায় মুমূর্ষু রোগীকে রক্ত দিতে প্রায় প্রতি মাসে। এবছরও তারা বিভিন্ন হসপিটালে হসপিটালে দৌড়ে গেছে রক্ত দিতে। কিন্তু এতে রক্তের ঘাটতি পূরণ হয়না, ক্যান্সার আক্রান্ত ও থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত অসহায় মানুষদের জন্য এরা রক্তদান শিবির করেন। ফেসবুক এর মাধ্যমে প্রচার শুরু করে রক্তদান শিবিরের।

    কথা মতোই আজকের দিন টা ঠিক হয় রক্তদান শিবির এর জন্য কিন্তু হঠাৎ করে দেখা যায় লকডাউন ঘোষণা হয়। এই লকডাউন ঘোষণা হওয়ার পরে তারা ভাবেন কিভাবে রক্তদান শিবির করবেন? রক্ত দাতাগণ আসবে কি করে? ট্রেন বাস বন্ধ, ট্রান্সপোর্টেশন সম্পূর্ণ বন্ধ। এই পরিস্থিতিতে সার্বিকভাবে রক্তদান শিবির করার পরিকল্পনা বাতিল করার পক্ষে সকলের মত ছিল কিন্তু আমরা ফ্যামিলি গ্রুপ কখনও হারতে শেখেনি তাই এই হাজার বাধা বিপত্তি সত্ত্বেও আজ এই ভরা লকডাউনে তারা রক্তদান শিবির আয়োজন করেছিল জগাছা প্রেস কোয়ার্টার মাঠে।

    উক্ত রক্তদান শিবিরে সফলভাবে 43 জন রক্ত দাতা রক্ত দান করেন। এই রক্ত তারা সরকারি ব্লাডব্যাংক এসএসকেএম হসপিটাল কে দান করেন। এসএসকেএমের মেডিকেল অফিসার আপ্লুত হয়ে বলেন এত কম সময়ের প্রস্তুতিতে ভরা লকডাউন থাকা সত্ত্বেও এই যে 43 জন রক্ত দাতা রক্ত দান করেছেন তাতে আমরা অত্যন্ত আপ্লুত।

    ফেসবুক সংগঠন বলে বিভিন্ন রক্তদাতা বিভিন্ন জেলা থেকে এদের কাছে ছুটে আসে কেউ আসে সোনারপুর থেকে, কেউ আসেন আমতা থেকে, কেউ আসেন হুগলি থেকে, বিভিন্ন জেলা থেকে এদের ফেসবুকের বন্ধুরা মিলে পালন করে ঈদের তোফা রক্তদান উৎসব।

    এরা বিশ্বাস করে ঈদের সবথেকে বড় তোফা রক্ত। তাই রক্তদানের মাধ্যমে তারা পালন করে ঈদের তোফা অনুষ্ঠানটি।

    কিন্তু কিভাবে হল 24 ঘণ্টার নোটিশে যেখানে লকডাউন সেই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে এতগুলো রক্তদাতা তারা পেল কি করে এরা ফেসবুকে নিজেদের মধ্যে জোট বাঁধে যাদের নিজস্ব বাইক আছে তারা বিভিন্ন জায়গায় দৌড়ে দৌড়ে রক্তদাতাদের কে নিয়ে আসে এবং রক্ত দান করে তাদের বাড়িতে সুরক্ষিতভাবে পৌঁছে দেয়।

    প্রতি রক্তদাতাকে এরা শঙ্খ বাজিয়ে এক অভিনব কায়দায় সম্মান জানায় সঙ্গে উপহারস্বরূপ দেয় এক নতুন গাছের চারা।

    সংগঠনের কর্ণধর রাজা ব্যানার্জি বলেন
    আজ হসপিটাল গুলো রক্তশূন্য রক্ত অক্সিজেনের মতো কোনো প্লান্ট বা কারখানায় পাওয়া যায়না এই রক্ত মানুষের শরীরে তৈরি হয় আর আমরা যদি রক্ত না দিই তাহলে রক্তশূন্যতা ব্লাড ব্যাংক গুলোতে থাকবে এবং মানুষের প্রাণ যাবে তাই।

    আমাদের রক্তে যদি বাঁচে মুমূর্ষ মানুষের প্রাণ,
    বলতে পারেন কেন করব না আমরা রক্তদান।