জয়দেব কেন্দুলি পুন্যস্নানে আগত স্মরণার্থীদের নিরাপত্তা ও কোভিড সচেতনতায় পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন

সেখ রিয়াজুদ্দিন বীরভূম:- প্রায় চারশো বছরের প্রাচীন, ঐতিহ্যবাহী বীরভূমের জয়দেব কেন্দুলির মেলা। প্রতিবছর মকর সংক্রান্তিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লক্ষ লক্ষ লোকের সমাগম ঘটে, অজয় নদীর ঘাটে পুণ্যস্নানের উদ্দেশ্যে। কিন্তু এবছর রাজ্যসহ জেলায় করোনার গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী থাকায় জয়দেব কেন্দুলির পুণ্যস্নান ও মেলা ঘিরে শুরু হয় নানা জল্পনা। প্রথমার্ধে সরকার মেলা বন্ধ থাকার কথা ঘোষণা করলেও শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত হয় পুণ্যার্থীদের জন্য শুধুমাত্র পুণ্যস্নানের বন্দোবস্ত করা হবে, করোনা বিধি সর্তকতা অবলম্বন করে। শুক্রবার ভোর থেকে শুরু হয়েছে পুণ্যস্নান অজয় নদীর ঘাটে, তবে অন্য বারের থেকে এবারের চিত্রে যেন সীমারেখা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। যেখানে লক্ষ লক্ষ লোকের সমাগম ঘটে, সেখানে এ বছর কয়েক হাজার লোকের সমাগম ঘটেছে মাত্র। বীরভূম জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন কিন্তু নিরাপত্তার বিষয়ে কোথাও ঘাটতি রাখেননি।রয়েছে বোর্ড, বোম্ব স্কোয়াড,ডগ স্কোয়াড,রেসকিউ টিম ইত্যাদির ব্যবস্থা ।

    উল্লেখ্য ইলামবাজার থানার ওসি তন্ময় ঘোষ এর আহ্বানে ‘প্রত্যাশা’ নামক স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অন্যতম কান্ডারি এ আর এম পারভেজের নেতৃত্বে প্রত্যাশার যুব সদস্যরা ১৪ জানুয়ারি, শুক্রবার ভোররাতে জয়দেব কেন্দুলির অজয় নদীর তীরে পৌঁছে যায় সামাজিকতার দায়িত্ব পালনে। পুণ্যার্থীদের কোভিড বিধি মানতে সচেতন করা, এবং অজয় নদের জলে পুণ্যস্নানে যাতে কোন দুর্ঘটনা না ঘটে সেই দিকটি দেখার দায়িত্ব পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে যৌথভাবে পালন করতে দেখা যায় টিম ‘প্রত্যাশা’র জওয়ানদের। ‘প্রত্যাশা’র সভাপতি আব্দুল খালেক মল্লিক জানান একদা ‘যশ’ নামক ঘূর্ণি ঝড়ের সময় ইলামবাজার ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক মহঃ জসিমউদ্দিন মন্ডল মহাশয়ের পরামর্শে “প্রত্যাশা রেসকিউ টিম”গঠিত হয়,বিপর্যয় মোকাবিলা করতে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় ইলামবাজারে ভারতীয় সেনাবাহিনীর জন্য ছেলে মেয়েদের শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রস্তুত করতে বেসরকারি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে কম্বাইন স্পোর্টস একাডেমী যার কর্ণধার এ এম আর পারভেজ। সেখানেই চাকরির জন্য প্রস্তুতকারীদের পাশাপাশি সামাজিকতার কাজে তথা বিপর্যয় মোকাবেলা করে মানুষের পাশে দাড়াতেই বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষন দিয়ে প্রশিক্ষিত করে তোলেন এই প্রত্যাশা’র সদস্যদের তথা রেস্কিউ টিমের সদস্যদের।
    জেলা ছাড়া ও দূর দুরান্ত থেকে পুণ্য ব্রতে সাধু-সন্ত,মানব-মানবী, ভক্ত সমাগমে অনুষ্ঠিত পুণ্যস্নান যেন নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয় তার নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার দায়িত্বে পুলিশ প্রশাসন সঙ্গে পারভেজ, ইয়াকুব খাদিম, আব্দুল আজিজ সহ অন্যান্য সদস্যদের নেতৃত্বে “প্রত্যাশা রেসকিউ টিম”-
    এটাই বাংলা, এটাই বাংলার সংস্কৃতি।