ভোটের মুখে বেকায়দায় মোদি, ভারতের কর মুক্ত দেশের স্বীকৃতি কেড়ে নিল আমেরিকা

শরিফুল ইসলাম, নতুন গতি ডেস্ক:

    পুলওয়ামা কাণ্ডে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের পক্ষে নৈতিক সমর্থন দেখিয়ে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে এ কি ইঙ্গিত দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ?

    বিশ্বায়নের দোসর হয়েও ভারতের বাজারে মার্কিন পণ্যের বাণিজ্য পর্যাপ্ত সাফল্যের মুখ দেখতে প্রায় ব্যর্থ এই অজুহাতে কর মুক্ত দেশ হিসেবে ভারতের স্বীকৃতি কেড়ে নিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

    ভারত সরকারের ছায়া সুলভ অসহযোগিতার দরুন উন্নয়ন শীল দেশ হিসেবে ভারতের বাজারে ক্রমেই বার্ত হয়ে পড়ছে মার্কিন পণ্য এই অভিযোগ দীর্ঘদিনের।
    সম্প্রতি, মার্কিন সংসদে স্পিকার কে লিখিত চিঠি দিয়ে রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প জানান, আমেরিকার পক্ষ থেকে ভারতকে দেওয়া রপ্তানি বাণিজ্যের সব রকম সুবিধা তুলে নেওয়া হল।

    এত দিন ভারতীয় পণ্য আমেরিকায় রপ্তানীর ক্ষেত্রে প্রায় চল্লিশ হাজার কোটি অর্থমূল্য’র পণ্য সামগ্রী পর্যন্ত ভারত সে দেশের বাজারে রফতানী করত বিনা শুল্কে যা ট্রাম্প প্রশাসনের ঘোষণার পর থেকে সেই ছাড় বন্ধ হয়ে গেল।

    জম্মু-কাশ্মীর জঙ্গিহানায় পর পরই আমেরিকা পাকিস্তানের কাছ থেকে ‘মোস্ট ফেভার্ট নেশন’-এর তকমা প্রত্যাহার করে নিলে পাক-প্রশাসন মুখ রক্ষার জন্য দাবি করেছিল যে, বিষয়টি তাঁদের কাছে তেমন কিছু নয়। তখন ইসলামাবাদের সেই দাবি কার্যত উড়িয়ে দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ঘটনাটিকে ফলাও করে মোদি প্রশাসনের কূট নৈতিক জয় হিসাবেই দেখিয়ে ছিল দিল্লি।

    আমেরিকার সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তের প্রেক্ষাপটে ভোটের মুখে দিল্লির আত্ম পক্ষ সমর্থনের সেই জাতীয় কোনো যুক্তি তাই আর ধোপে টিকবে না বলে মনে করছে অভিজ্ঞ মহল।

    এদিকে, রফতানী বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত সকলের দাবি, হোয়াইট হাউজের এই সিদ্ধান্তে ভীষণ সমস্যায় ভুগবেন তাঁরা। কৃষিজাত পণ্য সহ সামুদ্রিক ও হস্তশিল্প ধাক্কা খাবে চরমভাবে। অবশ্য সেক্ষত্রে ভারত সরকার রফতানিকারী বিভিন্ন বাণিজ্যিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে কিছুটা সুরাহ দিতে সমর্থ হবেন হয়তো কিন্তু, নির্বাচনের মুখে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট-এর ফরমানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদীর মুখ রক্ষা করা বিরোধীদের কাছে খুব একটা সহজ হবে না বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

    আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বৃহৎ শক্তি ধর দেশ হিসেবে আমেরিকার গ্রহণযোগ্যতা প্রতিটি দেশের কাছে একটু অন্য রকম। শুধু তাই নয়, কোনো কোনো দেশ আগ বাড়িয়ে মার্কিনপ্রীতির দাবি রেখে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গর্ব অনুভব করেন।

    বৈদেশিক প্রজাতন্ত্র দিবসে প্রধান অতিথির আমন্ত্রণে ট্রাম্পের ‘না’ ; সাম্প্রতিক ই-কমার্স এর মতন বিষয় গুলি নিয়েও ভারতের প্রতি খুব একটা সন্তুষ্টি জনক অবস্থানে নেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এই আবহে মার্কিন প্রশাসনের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত নিয়ে মুখ খুলে ভোটের মুখে বিপদ আরো বাড়াতে নারাজ মোদিজী মনে করছেন দেশের কূটনীতিককুল।