|
---|
নতুন গতি ওয়েব: সোমবার ভোরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ৮৩ বছর বয়সে ইহলোক ত্যাগ করলেন কত্থক সম্রাট বিরজু মহারাজ। কত্থক ধারার নৃত্যের এক প্রাণপুরুষ জন্মেছিলেন নৃত্যশিল্পে অনুরাগী পরিবারে। কত্থক নৃত্যকে পুনরুজ্জীবিত করার কারিগর ঈশ্বরী প্রসাদজির পরিবারে ১৯৩৮ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি জন্ম বিরজু মহারাজের। মাত্র ৯ বছর বয়সেই বাবাকে হারান। বাবার নাম জগন্নাথ মহারাজ তবে তিনি অচ্চন মহারাজ নামেই খ্যাত। পিতার মৃত্যুতেও নাচ শিখতে কোনও সমস্যা হয়নি বিরজুর। তালিম পেয়েছিলেন দুই কাকা পণ্ডিত লাচ্চু মহারাজ এবং পণ্ডিত শম্ভু মহারাজের থেকে। বিরজু মহারাজের নাম প্রথমে কিন্তু বিরজু ছিল না। প্রথমে তাঁর নাম রাখা হয় ‘দুঃখহরণ’। তারপর নাম হয় ব্রিজমোহন। এই ব্রিজমোহন থেকেই বিরজু। খুব কম বয়স থেকেই অনুষ্ঠানে পারফর্ম করা শুরু করেন কথকের অন্যতম এই প্রাণপুরুষ। মাত্র সাত বছর বয়সের মধ্যেই বাবার সঙ্গে দেশের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত নৃত্যশৈলী দেখিয়েছেন। কেরিয়ারের শুরুও কম বয়সেই। ভারত সরকারের হয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে প্রতিনিধিত্ব করেছেন বিরজু। রাশিয়া, আমেরিকা, জাপান, ব্রিটেন, আরব আমিরশাহি, ফ্রান্স, জার্মানি, ইটালি, চেক প্রজাতন্ত্র, অস্ট্রিয়া, কোথায় না যাননি। মাত্র ২৮ বছর বয়সেই সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি পুরস্কার পান। এছাড়া কালিদাস সম্মান, নৃত্য চূড়ামণি, অন্ধ্র রত্ন, সোভিয়েত ল্যান্ড নেহরু অ্যাওয়ার্ড, রাজীব গান্ধী শান্তি পুরস্কার এমন বহু পুরস্কার পেয়েছেন। সিনেমাতেও যখন খাঁটি কত্থক নৃত্যের দরকার পড়েছে, শরণাপন্ন হতে হয়েছে বিরজু মহারাজের। সত্যজিৎ রায়ের ‘শতরঞ্জ কি খিলাড়ি’ ছবিতে দুটি সিকোয়েন্সে ব্যবহৃত হয়েছে তাঁর কোরিয়োগ্রাফ। ‘দিল তো পাগল হ্যায়’ এবং ‘দেবদাস’ ছবিতে বিরজু মহারাজের কোরিওগ্রাফিতেই নেচেছিলেন মাধুরী দীক্ষিত। পদ্মবিভূষণ জয়ী নৃত্যশিল্পীর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ গোটা দেশ।