|
---|
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: দেশপ্রেমের আবেগকে জিইয়ে রাখতে আন্তর্জাতিক নারী দিবসে দুই শহিদ পরিবারের সদস্যদের রাজ্য বিজেপি পার্টি অফিসে হাজির করা হয়েছিল। শোনা গিয়েছিল, পার্টি অফিস থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত তাঁদের নাকি মিছিলে হাঁটানো হবে। যদিও শহিদ পরিবারের সদস্যদের দাবি, গেরুয়া শিবিরের তরফে বলা হয়েছিল, এদিন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি মহাজাতি সদনে তাঁদের সংবর্ধনা দেবেন। কিন্তু এদিন দুপুরে পার্টি অফিসে গিয়ে শহিদ পরিবারের সদস্যরা আবিষ্কার করেন, গোটাটাই আষাঢ়ে গল্প। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তো দূরঅস্ত, মহাজাতি সদনে অনুষ্ঠানের কোনও পরিকল্পনাই নেই। তারপরই কার্যত ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন পুলওয়ামাকাণ্ডে নিহত জওয়ান বাবলু সাঁতরার মা ও দিদি। গত ১৫ জানুয়ারি জম্মু-কাশ্মীর সীমান্তে জঙ্গিদের গুলিতে মৃত আরেক জওয়ান বিনয় প্রসাদের পরিবারও গোটা ঘটনায় বিরক্তি প্রকাশ করেন। শহিদ বিনয়ের মা শকুন্তলা দেবী, স্ত্রী বিদ্যা দেবী, এক বছরের মেয়েও এদিন হাজির হয়েছিলেন রাজ্য বিজেপি অফিসে। দু’টি পরিবারই একসুরে জানায়, তাঁরা কোনও রাজনৈতিক দলের সদস্য নন, স্বভাবতই বিজেপির মহিলা মোর্চার মিছিলে হাঁটার প্রশ্ন নেই। পরিস্থিতি জটিল হওয়ার আশঙ্কায় মিছিল শুরুর পরই দলের কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিনহা পার্টি অফিসে তড়িঘড়ি তাঁদের সম্মাননা জানান। এনিয়ে দলের মধ্যেই তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।এ প্রসঙ্গে প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রাহুলবাবু পরে বলেন, কে বা কারা শহিদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল, তা আমার জানা নেই। তবে ওঁরা এখানে এসেছিলেন। সহযোগিতার মনোভাব নিয়েই তাঁরা সংবর্ধনা গ্রহণ করেছেন। প্রশ্ন উঠছে, বিভ্রান্তিকর তথ্য পরিবেশন করে কেন বিজেপি পার্টি অফিসে শহিদ পরিবারের সদস্যদের টেনে আনা হল? এপ্রসঙ্গে বিজেপির মহিলা মোর্চার রাজ্য সভানেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। দলের রাজ্য কমিটির এক নেতার দাবি, এই ঘটনা চূড়ান্ত অপেশাদার মানসিকতার নিদর্শন। সমন্বয়ের অভাবের জন্যই দলের মুখ পুড়ল বলে মনে করেন তিনি। অন্যদিকে, এদিন নারী স্বাধিকার সমন্বয়ের তরফে এদিন মৌলালি থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মিছিলের আয়োজন করা হয়। বাম মনোভাবাপন্ন মহিলারা এই কর্মসূচি থেকে রাজ্যে নারী নির্যাতন ও মহিলাদের সশক্তিকরণের দাবিতে আওয়াজ তোলেন।