চাঁচল থানার মূল ফটকে বসে বিক্ষোভ বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মুর

উজির আলী,চাঁচলঃ ২৪ জুন

    দলের এক নেতাকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে প্রতিবাদে থানার সামনে অবস্থান-বিক্ষোভে বসলেন উত্তর মালদহের সাংসদ খগেন মুর্মু। বুধবার সকালে মালদহের চাঁচল থানার সামনে ওই ঘটনাকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। সাংসদের নেতৃত্বে বিজেপি নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভের জেরে থানার মূল ফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রায় দেড়ঘন্টা ধরে অবস্থান-বিক্ষোভ চলতে থাকে। পরে আইসির সঙ্গে দেখা করে ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে নিরপেক্ষে তদন্তের দাবি জানিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান সাংসদ। ধৃত বিজেপি নেতাকে ছাড়া না হলে ও পাশাপাশি বিজেপির অভিযোগের ভিত্তিতে তৃণমূলের তিন নেতাকে গ্রেফতার করা না হলে ফের বড় রকমের আন্দোলন হবে বলে হুমকি দিয়েছেন সাংসদ। পুলিশ তৃণমূলের হয়ে কাজ করছে বলে অভিযোগ তোলেন তিনি।

    সূত্রের খবর, দীর্ঘদিন ধরেই থানার সানমে থানারোডটি বেহাল হয়ে পড়ে রয়েছে। একাধিকবার পঞ্চায়েত-প্রশাসনকে জানিয়েও ফল হয়নি বলে অভিযোগ। এরপর বেহাল রাস্তা সংস্কার না হওয়ার প্রতিবাদে গত সপ্তাহে রাস্তার জমা জলে মাছ ধরার প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিলেন বাসিন্দারা। সেখানে বাড়ির পাম্প থেকে রাস্তায় জল ফেলার অভিযোগ ওঠে বিজেপি নেতা প্রসেনজিত শর্মার বিরুদ্ধে। তা নিয়ে তৃণমূলের তিন নেতার সঙ্গে বিবাদের ঘটনাও ঘটে। প্রসেনজিতকে বাড়িতে চড়াও হয়ে মারধর করেন পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য অমিতেশ পাণ্ডে, চাঁচল গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী মোক্তার হোসেন ও গ্রাম পঞ্চায়েতের এক সদস্য বিপ্লব মণ্ডল বলে অভিযোগ। পাশাপাশি প্রসেনজিতের বিরুদ্ধেও পাল্টা মারধরের অভিযোগে পুলিশে অভিযোগ দায়ের হয়। ওই ঘটনার জেরে মঙ্গলবার বিজেপি নেতা প্রসেনজিতকে পুলিশ জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতার করে। তার বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার অভিযোগে মামলা হওয়ায় জামিন পাননি তিনি। কিন্তু প্রসেনজিতকে মারধরের ঘটনায় পুলিশ তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ।

    এরপরেই এদিন ঘটনার প্রতিবাদে থানায় বিক্ষোভ দেখানোর কর্মসূচি নেওয়া হয়। পার্টি অফিসে জড়ো হওয়ার পর সাংসদের নেতৃত্বে বিজেপি গোটা শহরে প্রতিবাদ মিছিল করে। হাজির ছিলেন বিজেপির জেলা সম্পাদক দীপঙ্কর রাম, সুভাষকৃষ্ন গোস্বামী সহ স্থানীয় নেতৃত্ব। পরে থানায় হাজির হয়ে তারা বিক্ষোভ শুরু করেন। আইসির সঙ্গে দেখা করার পর ফের থানার মূল ফটকের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ শুরু করেন সাংসদ।
    সাংসদ বলেন, পুলিশ তৃণমূলের কথামতো কাজ করছে। প্রতিবাদ জানালেই আমাদের কর্মীকে মিথ্যে মামলায় গ্রেফতার করা হচ্ছে। প্রসেনজিত বেহাল রাস্তা সংস্কারের জন্য প্রতিবাদ দানিয়েছিলেন। তাকেই তৃণমূলের তিন নেতা মারধর করে। উল্টে প্রসেনজিতকেই খুনের চেষ্টার মামলা দিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে। সাংসদ বলেন, প্রসেনজিত ছাড়া না পেলে ও তৃণমূলের তিন নেতা গ্রেফতার হলে এরপর থানার সামনে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থানে বসব। পুলিশ প্রশাসনের সব কাজ বন্ধ করে দেব।

    যদিও এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের চাঁচল-১ ব্লক সভাপতি সচ্চিদানন্দ চক্রবর্তী বলেন, আমরা পুলিশকে চাপ দিতে যাব কেন। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ব্যবস্থা নিয়েছে। বিজেপি নেতা রাস্তায় জল ফেলে সমস্যা তৈরি করেছিল।
    চাঁচলের এসডিপিও সজলকান্তি বিশ্বাস বলেন, বিজেপির অভিযোগ থাকলে সেটাও খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতীত্বের অভিযোগ ঠিক নয়।