বিশ্ববাংলা কনভেনশন সেন্টারের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ বিশ্ববাংলা কনভেনশন সেন্টারের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত আট বছরে তৃণমূল শাসনকালে দীঘার উন্নয়নের জন্য বহু প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এর ফলে দীঘার সৌন্দর্য বৃদ্ধি থেকে শুরু করে ঐ অঞ্চলের মানুষের কর্মসংস্থানের চিত্রটাই সম্পূর্ণ বদলে গেছে। সৌন্দর্য বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে পর্যটকের সংখ্যা, ফলে বাড়ছে কর্মসংস্থান। এবার দীঘাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে সেখানে উদ্বোধন হল বিশ্ব বাংলা কনভেনশন সেন্টার ‘দিঘাশ্রী’-র। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দীঘা তথা বাংলার উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

    তার বক্তব্যের কিছু অংশঃ

    বাংলা একসময়ে খুব পিছিয়ে ছিল। বাংলার সঙ্গে আগে সবাই বৈমাতৃসুলভ ব্যবহার করত। গত আট বছরে সেই ধারনা সম্পূর্ণ বদলেছে।

    এখনও আমাদের বাম আমলের দেনা শোধ করতে হচ্ছে। এতো দেনা শোধ করেও উন্নয়নের কাজ করা যায়।

    এখন মানুষের জীবন গতিময়। কাজও সেই গতিতে করতে হবে।

    বাংলার দুটি বন্দরে বহুদিন ড্রেজিং করা হয়নি। আমি প্রথম রেলের সঙ্গে বন্দর যোগাযোগ শুরু করেছিলাম পিপিপি মডেলে।

    ১০ বছর আগেও দীঘাতে চিত্তাকর্ষক কিছু ছিলনা। সাত কিলোমিটারের মেরিনা বীচ তৈরী করছি। দীঘায় বিশ্ববাংলা গেট হয়েছে, বিশ্ববাংলা ময়দান হয়েছে। ল্যারিকা হোটেলকে নতুন করে তৈরী করা হচ্ছে।

    আমি জগন্নাথ দেবের ভক্ত। পুরীর আদলে জগন্নাথ মন্দির তৈরী হবে এখানে। দীঘায় ধর্মীয় পর্যটন কেন্দ্রও গড়া হবে।

    এখানে স্থায়ী হেলিপ্যাড তৈরী করা হয়েছে। আগামীদিনে এখানে সি-প্লেন নামানোর বন্দোবস্ত করা হচ্ছে।

    এখানে ইলেকট্রিক বাস দেওয়া হবে সঙ্গে চার্জিং ষ্টেশন। দুটো আন্তর্জাতিক মানের পার্কিং প্লাজা তৈরী করা হবে।

    কলকাতার কনভেনশন সেন্টার বিশ্বমানের।

    এখানে আরেকটা বন্দর তৈরী করা হবে তাজপুরে। কেন্দ্রকে পাঁচ বছর ধরে বলে কোনও কাজ হয়নি। রাজ্য সরকার নিজে এই বন্দর তৈরী করবে। এতে অনেকের কর্মসংস্থান হবে। এই সব অঞ্চলের গুরুত্ব বাড়বে।

    গান্ধীজির ১৫০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে মহিশাদলে বিশ্ববিদ্যালয় তৈরী হচ্ছে।

    পিছাবনী সেতু যেখানে মাতঙ্গিনী হাজরা ও অনেকে আন্দোলন করেছিলেন, সেখানে একটি স্মারক ও সংগ্রহশালা করব।

    কাশ্মীরে এখন পর্যটকরা যেতে পারছে না। এখানে আরও হোটেল বাড়ানো হবে ফলে কর্মসংস্থান বাড়বে।

    সমুদ্রের ধার পরিষ্কার রাখুন। আমাকে আন্দোলন শেখাবেন না। হকারদের জন্য অন্য কোথাও স্টল করতে দেবেন না। প্রশাসন ও জনপ্রিতিনিধিরা এই বিষয়ে নজর রাখুন।

    কোনও পর্যটক যেন এখান থেকে বিরক্ত হয়ে না ফেরে। দার্জিলিংএ কয়েক বছর অশান্তি করে তারা পর্যটন ব্যাবস্থাকে নষ্ট করেছে।

    আপনারা ছোট ছোট খাবারের দোকান করুন। বাংলায় ৩৪.১% পর্যটক বেড়েছে।

    আমরা দুর্গা পুজো কার্নিভ্যাল করি, সেখানে বিপুল বিদেশী পর্যটকও আসে।

    আপনাদের উদ্ভাবনী শক্তি বাড়াতে হবে।

    আমরা প্রতি বছর ৫ লক্ষ গাছ দিই। নারকোল গাছের নার্সারি তৈরী করতে হবে।

    আগামী দিনে পানীয় জল, বিদ্যুৎ, সবুজ বাঁচাতে হবে। আমাদের নিজেদের দায়িত্ব নিতে হবে।

    আমরা ৩লক্ষের বেশী পুকুর কেটেছি, চেক ড্যাম করেছি। জল ধরে রাখা খুব দরকার। বিদ্যুতের অপচয় করবেন না। এতে টাকা ও প্রকৃতি বাঁচবে।

    আমার লক্ষ্য সবসময় কি করে মানুষকে পরিষেবা পৌঁছে দিতে পারি।

    বাংলায় আমরা শিল্প বন্ধ করে ধর্মঘট করতে দিই না। আমাদের শাসনকালে গত আট বছরে একটাও ধর্মঘট হয়নি।

    বাঙ্গাল্র জিডিপি বৃদ্ধির হার ১২.৫৮ শতাংশ। দক্ষতা উন্নয়নে আমরা দেশের সেরা। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে আমরা দেশের সেরা। ই-টেন্ডার, ই-গভর্ন্যান্স, মহিলা ক্ষমতায়ন, কৃষকদের উন্নয়নে আমরা দেশের সেরা।

    উৎকর্ষ বাংলা, সবুজ সাথী ও কন্যাশ্রী প্রকল্পের জন্য রাষ্ট্রসঙ্ঘের পুরষ্কার পেয়েছি।

    কাজের প্রতিযোগিতা হোক, দাঙ্গা-দলাদলি-সন্ত্রাসের প্রতিযোগিতা নয়। নির্বাচন আসবে যাবে, কিন্তু, পাঁচ বছর কাজ তো করতে হবে।

    আমার দলকে আমি বলি সংসদে গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতে। কোনও কাজে লজ্জা নেই।

    এই কনভেনশন সেন্টারের নাম দিঘাশ্রী। এখানে লাগোয়া হোটেলে ৬৩টি রুমও আছে।