বড়দিনের আনন্দে মেতে উঠতে চলেছে গ্রাম থেকে শহর জাতি ধর্ম নির্বিশেষে

শরীফুল ইসলাম, নদীয়া : মাত্র আর ক’ দিনের অপেক্ষা। বড় দিনের বড় মজাই মেতে উঠবে রাজ্য। সাজবে শহর থেকে গ্রাম।
২৫ শে ডিসেম্বর ক্রিসমাস উপলক্ষে অনুষ্ঠিত’ উৎসব মেলা’ কেন্দ্র করে খুশির হাওয়াই মুখরিত হতে চলেছে বারো মাসে তেরো পার্বন প্রিয় বাঙালীর মন।রাজ্যে খ্রিস্টান সম্প্রদায় আক্ষরিক অর্থে সংখ্যালঘু হলেও নদীয়া জেলার দুই প্রান্ত জুড়ে এই সমাজের একটা বিরাট অংশের বসবাস। ‘ক্রিসমাস’ উদযাপন কেন্দ্র করে একই সম্প্রদায়ের দুই পক্ষ- ক্যাথলিক ও প্রোটেস্ট‍্যান্ট-এর পাশাপাশি হিন্দু- মুসলিম, শিখ -জৈন যে যেখানে আছে , পারস্পরিক সম্পর্কের বন্ধনে আবদ্ধ হয়। উৎসব মেলা কেন্দ্র করে ভারতীয় চিরন্তন ঐতিহ্য ‘ঐক্যে- সংহতি’ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য বাতাবরণ তৈরী হয় –যা আজকের দিনে বিশেষ তাৎপর্য ও প্রাসঙ্গিক।
খ্রিস্টান ধর্মের প্রবর্তক যীশুর জন্মদিন টি ওই সম্প্রদায়ের কাছে তাত্ত্বিক দিক থেকে উদযাপন করা একান্ত ভাবেই গুরুত্বপূর্ণ ও পবিত্র কর্ম হলেও ক্রিসমাস উপলক্ষ্যে উৎসবমেলা ঘিরে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে প্রত্যেকের অংশগ্রহণ , উৎসাহ-উদ্দীপনা থাকে সীমাহীন যা একটি সম্প্রদায়ের ধর্মীয়গণ্ডি উত্তীর্ণ করে সার্বজনীন রূপ নেয়।
মেলায় হাজার হাজার মানুষের অংশ গ্রহন ,সুসজ্জিত দোকান-পশারী, প্রিয়জনদের জন্যকেনাকাটা, দলবেঁধে খাওয়া-দাওয়া, বিভিন্ন রঙের বেশ ভূষা পড়ে আগত ও বহিরাগত দর্শনার্থীদের ভিড়ে খুশির রঙে মেলা প্রাঙ্গণ হয়ে ওঠে বর্ণময়।
বড় দিনের বিশেষ আকর্ষণ এই ক্রিসমাস মেলা বসে মূলত চার্চ গুলি ঘিরেই। নদিয়ার বিখ্যাত ক্রিসমাস মেলা বসে কৃষ্ণনগর ক্যাথলিক চার্চ সংলগ্ন আরশি পাড়ায়। এটিই সম্ভবত প্রাচীন ও অন্যতম। আরশি পাড়া ছাড়াও মিশন স্কুলের পাশে প্রোটেস্ট‍্যান্ট চার্চে, রানাঘাট বেগোপাড়া ক্যাথলিক চার্চ ও আরেকটি বড় মেলা বসে চাপড়া চার্চে। প্রতিটি মেলায় অসংখ্য মানুষের ঢল নামে উল্লেখযোগ্য ভাবে।
সাত সকালে শিউলির গাছ ঝুড়ে কাঁচা খেজুর রস জ্বাল দিয়ে পাকানো নলেন গুড়ের সন্দেশ, পৌষের ‘পিঠে-পুলি’ ক্রিসমাস কেক আর হিমেল হাওয়াই উষ্ণ পোশাকে মজে এখন বাংলার আম জনতার হৃদয়।