|
---|
নিজস্ব সংবাদদাতা, নতুন গতি, পাঁশকুড়া : দ্য ভ্যালী অফ ফ্লাওয়ার্স নামে পরিচিত দোকান্ডাকে আবর্জনা মুক্ত করতে আবারও এগিয়ে এলো অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন মেদিনীপুর ক্যুইজ কেন্দ্র সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি। শনিবার সকালে সংগঠনের পক্ষ থেকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁসাই নদীর তীরে অবস্থিত এবং ফুল চাষের জন্য বিখ্যাত গ্রাম দোকান্ডা এবং তৎসংলগ্ন এলাকার ফুল চাষের ক্ষেত গুলির আশেপাশের এলাকার আবর্জনা সাফাই করা হলো। ‘ফুলের দেশে দিনের শেষে, কংসাবতীর নির্মলতা রক্ষা হোক’ এই বার্তাকে পাথেয় করে দোকন্ডায় আবর্জনা সাফাই অভিযানে হাত লাগালেন ক্যুইজ কেন্দ্রের সদস্য-সদস্যা-শুভানুধ্যায়ী ও ছাত্র-ছাত্রীদের প্রায় পঞ্চাশ জনের একটি পরিবেশ প্রেমী স্বেচ্ছাসেবী দল।
এদিনের সাফাই অভিযান কর্মসূচি উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন বিধায়ক চিত্তরঞ্জন দাশ ঠাকুর, সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ড.মৌসম মজুমদার,পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কমিটির সম্পাদক কৃষ্ণপ্রসাদ ঘড়া,পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কমিটির সম্পাদক সুভাষ জানা, কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি স্নেহাশীষ চৌধুরী, সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য,সপ্তর্ষি চক্রবর্তী, সংগঠনের সদস্য-সদস্যা অপূর্ব কুমার জানা,আলোক মাইতি, ভাস্করব্রত পতি, সৌমিত্র মান্না, অরিন্দম দাস,দীপ বসু,চন্দন মন্ডল,অলক গাঁতাইত,শবরী বসু,স্বর্ণলতা বেরা,কালীচরণ দাস, শুভঙ্কর ভূঁঞ্যা, নরসিংহ দাস,শুভময় মুলা সংগঠনের শুভানুধ্যায়ী উষৎপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সুশীল কুমার মান্না, স্থানীয় সমাজসেবী সবুজ জানা,চেন্নাইয়ের ইঞ্জিনিয়ার ভাস্কর গাঁতাইত, কামাল শেখ,কাঞ্চন কুমার বেরা, নিরঞ্জন মাঝি,সঞ্জিত জানা,কৌলিক ঘোড়াই, সন্দীপ ঘোড়াই প্রমুখ। এছাড়াও এই মহতী উদ্যোগের অংশ নিয়েছিল একাধিক স্কুলের ছাত্ররা।
করোনার সংক্রমণ কিছুটা কমতে এবং শীতকালীন ফুলের মরসুমে সোশ্যাল মিডিয়াতে একটি বহু চর্চিত বিষয় হয়ে ওঠে এই দোকান্ডা এবং পশ্চিম কল্লা সহ পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলি। সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হওয়ার ফলে দূরদূরান্ত থেকে এখানে এখানে এসে রীতিমতো ভিড় জমাতে থাকেন বহু পর্যটক। তাদের মধ্য একশ্রেণীর পর্যটকের অপ্রীতিকর কাজের জন্য নষ্ট হচ্ছে দোকোন্ডার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।পর্যটকদের একাংশ শুধুমাত্র ফুল দেখে বা ফুল কিনে ক্ষান্ত থাকছেন না, তাঁদের অনেকেই অসাবধানভাবে ফুল বাগানে ঢুকে নষ্ট করে ফেলেছেন ফুলগাছ।বাগানের আলপথ দিয়ে যাতায়াতের সময়েও পর্যটকদের অসাবধানতায় নষ্ট হচ্ছে ফুল গাছ। আর এগুলোই ফুল চাষীদের কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে । গ্রামের ফুলচাষীরাও চান পর্যটকরা আসুন,ফুল দেখুন ফুল কিনুন,কিন্তু তারা যেন কোন ভাবেই চাষীদের চাষের ক্ষতির কারণ না হয়ে দাঁড়ান।
এরই পাশাপাশি বেশ কিছু পর্যটকরা এখানে এসে পিকনিক করছেন এবং পিকনিক করার পরে থার্মোকলের থালা,বাটি সহ অন্যান্য আবর্জনা ফেলে যাচ্ছেন এই ফুলের উপত্যকাতে। পিকনিক বাদেও খাদ্যদ্রব্যের প্যাকেট হিসেবে ব্যবহৃত প্লাস্টিক ও অন্যান্য আর্বজন যত্রতত্র ফেলছেন একশ্রেণীর পর্যটক। যার ফলে এখানকার পরিবেশ ভীষণভাবে অস্বাস্থ্যকর হয়ে উঠছে। এদিন সাফাই অভিযানের পাশাপাশি মাইক প্রচারের মাধ্যমে স্থানীয় দোকানদার এবং পর্যটকদের প্লাস্টিক,থার্মোকলসহ অন্যান্য আবর্জনা যত্রতত্র না ফেলার অনুরোধ করা হয়। পাশাপাশি প্লাস্টিক ও থার্মোকল না ব্যবহার করার অনুরোধ করা হয়। পরিবর্তে শালপাতার থালার মতো পরিবেশ বান্ধব বস্তু ব্যবহারের আহ্বান জানানো হয়।সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দায়িত্বটা শুধু মাত্র তাঁরা একা নিলে হবে না , পরিবেশ পরিষ্কার- পরিচ্ছন্ন রাখার লক্ষ্যে সবাইকেই এগিয়ে আসতে হবে। এদিন ক্যূইজ কেন্দ্রের পক্ষ থেকে দোকান্ডা এলাকায় মোট ১১৭ বস্তা আবর্জনা পরিষ্কার করা হয়।
উল্লেখ্য গতবছরও দোকান্ডায় ক্যুইজ কেন্দ্রের তরফে এই ধরনের অভিযান চালানো হয়েছিল। এদিনের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীদে সংস্থার তরফে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রিংকু চক্রবর্তী ও সম্পাদক সুজন বেরা অভিনন্দন জানিয়েছেন।