বছরকে বছর ঘুরে ঘুরে দিন কেটে গেল, পেল না স্থায়ী ঠিকানা

বছরকে বছর ঘুরে ঘুরে দিন কেটে গেল, পেল না স্থায়ী ঠিকানা

     

     

     

     

    আব্দুল হাই, বাঁকুড়াঃ – ওঁরা দিকভ্রান্ত নাগরিক। স্থায়ী বাসস্থান বলতে কিছু নেই। নেই ভোটার কার্ড থেকে আঁধার কার্ড, রেশন কার্ড। তবু তাঁরা ভারতের নাগরিক। এক কথায় যাযাবর সম্প্রদায়। দীর্ঘদিন ধরে এই মানুষরা পরিবার নিয়ে ভারতবর্ষের নানান প্রান্তে ঘুরে বেড়িয়েছে। শিক্ষা না থাকায় কর্মসংস্থান হয়নি। অশিক্ষার অন্ধকার থেকে টেনে তুলে আনার কোনো চেষ্টাও সরকারি বেসরকারিভাবে করা হয়নি। তাই মানুষের জীবনের মূল স্রোতেও তাঁদের ফেরা হয়নি। এভাবেই বছরের পর বছর ঘুরে জীবন কেটে গিয়েছে এঁদের। মূল স্রোতে না থাকার কারণে মানুষ এঁদের স্বাভাবিকভাবেই এড়িয়ে চলতে অভ্যস্ত। ৭টি পরিবারের ৪৮ সদস্যর এমনই একটি দল বেশ কিছুদিন ধরে ঘাঁটি গেড়ে রয়েছে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর রেল স্টেশনের কাছে। এবার ওই যাযাবর সম্প্রদায়কে জীবিনের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিল কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। শনিবার তৃণমূল সমর্থিত আল ইন্ডিয়া মাইনরিটি সেল বাঁকুড়া শাখার উদ্যোগে ওই পরিবারগুলোর হাতে বেশ কিছু খাদ্যসামগ্রী সহ তেল, সাবান, ডিটারজেন্ট এবং শিশুদের জন্য জামা প্যান্ট ও জুতো তুলে দেওয়া হল। যদিও এর আগে শীতের প্রবল কামড় সহ্য করে খোলা আকাশের নিচে পড়ে থাকা মানুষগুলির মাথায় আচ্ছাদন দিতে বিষ্ণুপুর পুরসভার থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়। ৭টি পরিবারকে তাবু তৈরি করার জন্য ত্রিপল দেওয়া হয়েছিল। কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ওই মানুষদের জামাকাপড় থেকে খাদ্যসামগ্রীও দিয়েছে। যা পেয়ে বেশকিছু শিশু নিয়ে পরিবারগুলোর দিন গুজরান হয়েছে। তবে এবার অল ইন্ডিয়া মাইনরিটি সেল যাযাবর সম্প্রদায়ের ওই মানুষদের আর্থসামাজিক উন্নয়নের লক্ষে এগিয়ে এলো। এদিন সেলের বাঁকুড়া জেলা সহ-সভাপতি সৈয়দ পাহলোয়ান বলেন ‘এভাবে দয়া দাক্ষিণ্য নিয়ে খুব বেশিদিন থাকা যায়না। আমরা চাই পাহাড়িয়া যাযাবর সম্প্রদায়ের এই মানুষরা নিজেরা অর্থ উপার্জন করে নিজেদের ডালভাতটুকু জোগাড় করে নিক। সেটা সম্ভব এঁদের অশিক্ষার অন্ধকার থেকে বের করে আনলে। আমরা সমাজসেবামূলক বিভিন্ন কাজ করে থাকি। আমারা চেষ্টা করব যাতে এঁরা অন্ততপক্ষে দিনমজুরের কাজ করে নিজেদের সংসার চালিয়ে নিয়ে যেতে পারে। এইসব মানুষদের জীবনের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনাটাই আমাদের প্রধান লক্ষ’। এদিন খাদ্য এবং অন্যান্য সামগ্রী হাতে পেয়ে খুশি পরিবারের শর্মিলা বেদ, ছায়া বেদ রা।