একুল ওকুল দু’কুলই হারালেন দেবশ্রী! এবার কি রাজনীতির ইতি?

নবাব মল্লিক, রায়দিঘী: ছিল বড় চমক। কিন্তু, হল না। দল বদল করতে তিনি গিয়েছিলেন, বিজেপির সদর দপ্তরে। কিন্তু, শোভন বিদ্রোহে বানচাল দেবশ্রী রায়ের বিজেপিতে যোগ দান। শোভন বিদ্রোহে কার্যত দু’কুল খোয়ালেন দেবশ্রী! কিন্তু কেন?

    বুধবার সকালেই শোভন-বৈশাখীর পর দিল্লিতে বিজেপির পার্টি অফিসে পৌঁছান তৃণমূল বিধায়ক দেবশ্রী রায়। দিল্লিতে বিজেপির সদর দপ্তরে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করতে দেখা গিয়েছে দেবশ্রীকে। আর এই নিয়ে শুরু হয় জল্পনা। কিন্তু, পরে শোভনের আপত্তিতে দেবশ্রীকে দলে যোগদানের আর্জি খারিজ করে দেওয়া হয় বলে বিজেপি সূত্রে খবর।

    কে দিল্লিতে এনেছে দেবশ্রীকে? দিল্লির পার্টি অফিসে শুরু হয় চাপানউতোর।দেবশ্রীর বিজেপিতে যোগদান ঘিরে তুঙ্গে ওঠে টানাপোড়েন। দেবশ্রী থাকলে আমি যোগ দেব না। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আগে রীতিমতো বিদ্রোহ ঘোষণা করেন শোভন। বিজেপি সূত্রে পাওয়া এই খবরে তুঙ্গে বঙ্গ রাজনীতি। ফলে, বিজেপির দপ্তরে গিয়েও দেবশ্রীকে বিজেপিতে যোগ দেওয়ানো যায়নি। শোনা যাচ্ছে, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে শোভনবাবু নাকি জানিয়েছেন, দেবশ্রী যেদিন বিজেপিতে যোগ দেবেন, সেই দিনই তাঁর বিজেপিতে শেষ দিন। এরপরই দেবশ্রীকে ফিরিয়ে দেয় বিজেপি। কিন্তু, এই ঘটনায় চূড়ান্ত বিড়ম্বনায় পড়েন অভিনেত্রী বিধায়ক।পর্যবেক্ষক মহলের ধারণা, বিজেপিতে যোগ দিতে চেয়ে সটান দিল্লির অফির থেকে নিরাশ হয়েছেন দেবশ্রী। না যুক্ত হতে পারলেন বিজেপিতে। না ফিরতে পারবেন তৃণমূলে। কেননা, দেবশ্রী যদি তৃণমূলে ফিরতেও চান, দল তাঁকে ফের মেনে নেবে কি না, তা নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা। এক্ষেত্রে উঠতে পারে বিশ্বাসযোগ্যতা। ২০২১ এর নির্বাচনে টিকিট পাওয়া নিয়েও হতে পারে সমস্যা। ফলে, বিজেপি যোগ দিতে গিয়ে তা সফল না হওয়ায় কার্যত একুল ওকুল দুকুলই হারালেন এই অভিনেত্রী! মত পর্যবেক্ষক মহলের।

    এই নিয়ে মুকুল রায়ের মন্তব্য, ”আমি জানি না দেবশ্রীকে কে নিয়ে এসেছে। আমার সঙ্গে ওঁর কোন যোগাযোগ নেই। আমার সঙ্গে কোনও কথা হয়নি। কার জন্য এসেছে, কীসের জন্য এসেছে, কে নিয়ে এসেছে, আমি কিছুই জানি না।” দিলীপ ঘোষের মন্তব্য, ”আমরা অনেক বাজার করি। সব রান্না করি না। কোনোটা ফ্রিজে রাখতে হয়। এমন অনেকেই লাইনে আছে। দেখুন না কী হয়।”

    দূরত্ব তৈরি হচ্ছিল অনেক দিন আগেই। এক সময় দেবশ্রীর রায়দিঘি বিধানসভার যাবতীয় কাজ দেখতেন শোভনবাবু নিজেই। পরিচিত মহলের দাবি, দু’জনের মধ্যে ছিল বন্ধুত্ব। যা নিয়ে প্রকাশ্যে হাসিঠাট্টাও হত বেশ। দল ও দলের বাইরেও ছিল বন্ধুত্ব নিয়ে আলোচনা। যাতে কখনও কখনও যোগ দিতেন শোভনপত্নী রত্নাদেবী। বিষয়টি উপভোগ করতেন দু’জনেই। কিন্তু বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় দৃশ্যমান হওয়ার পর থেকে দৃশ্যত শোভন-দেবশ্রী দূরত্ব তৈরি হতে শুরু করে। এতটাই যে, মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এসে দেবশ্রী নাকি অভিযোগ করেছিলেন, শোভনবাবু আর কাজ দেখছেন না। যদিও, ধীরে ধীরে তা দূরত্বের আকার নেয়। পরে, শোভন-জীবনে ঘেটে বৈশাখী উত্থান।