মানবিক সংস্থানের নতুন প্রোজেক্ট ‘অর্পণ

নতুন গতি: মানবিক সংস্থানের নতুন প্রোজেক্ট ‘অর্পণ’ এর শুভ উদ্বোধন হল মেদিনীপুর কলেজের সামনে সকাল ১০:৩০ টায়।

    নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মূর্তিতে মাল্যদানের মধ্য দিয়ে শুভ সূচনা হয়। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অম্লান কুসুম ঘোষ, অতিরিক্ত জেলা শাসক কেম্পাহোন্নআইয়া, পৌরপ্রশাক সৌমেন খান, মেদিনীপুর কলেজের অধ্যক্ষ গোপাল বেরা, চেম্বার অফ কমার্সের সভাপতি আনন্দ গোপাল মাইতি, সমজসেবি প্রসেঞ্জিৎ সাহা, আধ্যাপক সুরজিত ঘোষ ও অনান্য অতিথিবৃন্দ।

    সংস্থার সম্পাদ্ক অনুপম রায় জানান ‘অর্পণ’ কী?
    “প্রায় সকলের বাড়িতেই পুরনো জামাকাপড় বা অনেক পুরনো বই ইত্যাদি পড়ে থাকে দিনের পর দিন। অনেক সময়, বিলি করে দেওয়ার মতোও কাউকে পাওয়া যায় না। বিশেষ করে শীতবস্ত্র। জ্যাকেট, সোয়েটার, পুলওভার, টুপি একটু পুরনো হয়ে গেলেই বাতিলের খাতায় রেজিস্টার করে ফেলি অনেকে। সেই পরিধানযোগ্য ‘বাতিল’ পোষাক গুলো কিংবা পুরনো বইপত্রগুলো দিয়ে দিন, আমাদের। আমরা আপনার পাড়া থেকে বা আপনার বাড়ির সামনে থেকে গিয়ে সেইসব জিনিসপত্র নিয়ে আসবো। আমাদের গাড়ি আপনার পাড়ায় যাবে। আপনারা সেখানে জমা করে দিতে পারেন আপনাদের অতিরিক্ত জিনিসগুলো। সেগুলো আমরা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে বিলি করে দেবো দুঃস্থ, প্রান্তিক মানুষদের মধ্যে। এই ত্রিচক্র সাইকেল ভ্যানটির নাম ‘অর্পণ’, যার উপরে জিনিসপত্র জমা করার জন্য ড্রপবক্স থাকবে।

     

    ‘অর্পণ’ কেন?
    সেই রাতেও ছিল কনকনে ঠান্ডা। মেদিনীপুর শহরে যেন দার্জিলিং এর আমেজ। 2014 সালের এইরকমই এক ঠান্ডার রাতে মানবিক সংস্থানের তিন-চারজন সদস্য মিলে সারা শহর ঘুরে জামাকাপড়, কম্বল ইত্যাদি বিলি করে এসেছিল পথবাসী মানুষদের। পরপর তিনদিন। প্রথমদিন মেদিনীপুর শহরে রাত দু’টোর সময়, পরের দিন দমদম স্টেশনে রাত দেড়টার সময়, তার পরের দিন কল্যাণী স্টেশনে রাত দু’টোর সময়। কথায় বলে, মাঘের শীতে নাকি বাঘও পালায়। কিন্তু গৃহহীন বহু মানুষ এই মাঘ মাসেও রাস্তায় খোলা আকাশের নীচে গুটিশুটি মেরে ঠান্ডায় কাঁপতে কাঁপতে কাটিয়ে দেন দীর্ঘ-শীতল রাত। কোনো জমকালো স্টেজ থেকে নয়, বরং আর্তের কাছে গিয়ে তাদের গায়ে শীতবস্ত্র জড়িয়ে দিয়ে আসার মধ্যেই সার্থকতা খুঁজে পেয়েছিল মানবিক সংস্থান। তারপর থেকে ‘সেই ট্র‍্যাডিশন সমানে চলছে’। কিন্তু অনেকেই চান এইসব কাজে কিছু সাহায্য করতে। নিদেনপক্ষে নিজেদের পুরনো বই বা জামাকাপড় দিয়েও ওনারা দুঃস্থ মানুষদের পাশে দাঁড়াতে চান। কিন্তু কোথায় দেবেন, কীভাবে দেবেন, ভেবে উঠতে পারেন না। সেই জন্যই আমরা চালু করছি এমন একটি গাড়ি, যা আপনার দান করা জামাকাপড়, বইপত্র নিয়ে আসবে আপনার বাড়ি থেকে।