দলে আমাদের কোনো সম্মান নেই, কেশপুরে দুজনের মৌরিসিপাট্টা চলত’, স্বীকৃত সম্মেলনে অভিযোগ তৃণমূল কংগ্রেসের পুরনো নেতাদের

নিজস্ব সংবাদাতা ,নতুন গতি,কেশপুর:-২০১৯ লোকসভা ভোটের পর শুরু হয় তৃণমূলের ধস। সেই ধসকে কমানোর জন্য পিকের ফর্মুলায় দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দল গোছাতে শুরু করেন। প্রথমে দিদি কে বলো কর্মসূচি। সেটা সফল ভাবে রূপায়নের পর গত 2রা মার্চ কলকাতার ইনডোর স্টেডিয়ামে পচাত্তর দিন ব্যাপী এক নিবিড় জনসংযোগ কর্মসূচি গৃহীত হয়। রবিবার সেই কর্মসূচির অন্তর্গত তৃণমূল কংগ্রেসের পুরোনো কর্মীদের নিয়ে স্বীকৃত সম্মেলন গোটা রাজ্য জুড়ে অনুষ্ঠিত হয়। দলের দুর্দিনের কর্মীদের সম্বর্ধনা দেওয়া ও মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনায় এই কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য। 

    সেই উদ্দেশ্য সফল করতে কেশপুর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস কার্যালয়ে স্বীকৃত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। আমন্ত্রিত দলের পুরোনো কর্মীদের গোলাপ ফুল, উত্তরীয় পরিয়ে সম্বর্ধনা দেওয়া হয়। এদিনের কর্মসূচিতে কেশপুরের বিধায়ক শিউলি সাহা, কেশপুর ব্লক সভাপতি উত্তমানন্দ ত্রিপাঠি, জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ রফিক , চিত্ত গড়াই সহ সমস্ত অঞ্চল নেতৃত্ব উপস্থিত ছিলেন। তবে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শুভ্রা দে সেনগুপ্তকে এই স্বীকৃত সম্মেলনে দেখা যায় নি। কালিপদ নিয়োগী, জগন্নাথ মিদ্দ্যা, সেখ বাসীরুদ্দিন সহ অনেক দলের পুরোনো কর্মীরা দলে তাদের অবদান তুলে ধরে ক্ষোভ উগরে দেন। প্রাক্তন শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ জগন্নাথ মিদ্দ্যা বলেন আমাদেরকে ডেকে এনে স্বীকৃতি দেওয়া হলো,এতে খুব খুশি হলাম, কিন্তু অঞ্চল নেতৃত্বরা সেই দলের দুর্দিনের কর্মীদেরকে মান্যতা দেবে তো। এতে বিধায়ক শিউলি সাহা বলেন যেহেতু এটা নেত্রীর নির্দেশ, তাই সবাই আপনাদেরকে স্বীকৃত দিতে বাধ্য। মহম্মদ রফিক বলেন কেশপুরে আগে দুজনের মৌরিসিপাট্টা চলত, সেই মৌরিসিপাট্টা আর চলবে না। এখন আপনারাই দলের সম্পদ। এদিনের এই স্বীকৃতি সম্মেলনে অবশ্য প্রাক্তন ব্লক সভাপতি উপস্থিত ছিলেন না। তাই খোলা মনে সমস্ত অভাব অভিযোগ করেন পুরনো বসে যাওয়া কর্মীরা। পুরনো বসে যাওয়া বিক্ষুব্ধ কর্মীরা অবশ্য এক বাক্যে স্বীকার করেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতি তাদের কোনো অভাব অভিযোগ নেই। কিন্তু একশ্রেণীর নেতাকর্মীরা যে ঔদ্ধত্য, অন্যায় অত্যাচার চালাচ্ছে তাতে সততার সঙ্গে রাজনীতি করা একপ্রকার অসম্ভব হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তাই ক্ষোভে দুঃখে বসে গেলেও আমরা স্বীকৃতি পাওয়ায় বর্তমান ব্লক সভাপতি উত্তমানন্দ ত্রিপাঠির নেতৃত্বে আবার দলের পক্ষে কাজ করতে শুরু করব।

    বিধায়ক শিউলি সাহা জানান, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শ নিয়ে আগামী দিনে পুরোনো কর্মীরা আবার স্ব মহিমায় দল করবে। অভাব অভিযোগ থাকতেই পারে, সেই অভাব অভিযোগ মেটানোর জন্যই আজকের এই স্বীকৃত সম্মেলন। দল সবাইকে নিয়েই চলবে। সম্মেলন শেষে দ্বি প্রাহরিক আহারের বন্দোবস্ত করা হয়। শিউলি সাহা, উত্তমানন্দ ত্রিপাঠি নিজে হাতে খাবারের পরিবেশন করান। এতে বেজায় খুশি দলের দুর্দিনের সাথীরা।