|
---|
নিজস্ব সংবাদদাতা : এমবার্গো জারি পুরবাজেটে। ২০২২-২৩ সালের বাজেট কার্যকর করার আগেই খরচে লাগাম পরাতে পুরসভার বিজ্ঞপ্তি। সেপ্টেম্বরে ফের রিভিউ মিটিং, জানালেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। বাজেট পেশ করেও আগামী অর্থ বর্ষের খরচের মাত্রা বেঁধে দিল পুরসভা। ২০২২-২৩ বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয়ের উপরে এমবার্গো ঘোষণা করে বিজ্ঞপ্তি জারি করলেন কলকাতা পুরসভার কমিশনার।
কলকাতা পুরসভার কমিশনার বিনোদ কুমারের জারি করা সাকুর্লারে বলা হয়েছে, পুর সম্পদের রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামত এবং স্থায়ী সম্পদ তৈরির জন্য যে অর্থ বাজেটে বরাদ্দ হয়েছে, তার মধ্যে ৬০ শতাংশ টাকার প্রাথমিক অনুমোদন কোষাগার থেকে দেওয়া হবে। বাকি ৪০ শতাংশ টাকা আপাতত আটকে রাখা হচ্ছে। বরাদ্দকৃত ৬০ শতাংশ টাকায় বিভাগীয় কাজগুলি সম্পাদন করে যাবতীয় নথি জমা দিলেই বাকি টাকার অনুমোদন করা হবে।পর পর দু ‘ বছর করোনা অতিমারির কারণে নাগরিক পরিষেবা ব্যাপক পরিমাণে ধাক্কা খেয়েছে। আগামী অর্থবর্ষে পরিস্থিতি কিছুটা উন্নত হওয়ায় সেই ধাক্কা সামলে নেওয়া যাবে বলে ভেবেছিলেন পুরসভার কর্তারা। কিন্তু রাজস্ব আদায় কোথা থেকে হবে? তা নিয়েই রীতিমতো উদ্বিগ্ন পুর প্রশাসন। মনে করা হচ্ছে সে কারণেই বুঝে শুনে বরাদ্দ বাজেট থেকে খরচ করার সিদ্ধান্ত নিল প্রশাসন। তাই বাজেটে বরাদ্দকৃত অর্থ খরচের উপরে এমবার্গো জারি করল কলকাতা পুরসভা। অবশ্য পরবর্তীকালে কোষাগারের অবস্থা বুঝেই টাকা অনুমোদন দেওয়া হবে বলে সূত্রের খবর।
২০২২-’২৩ অর্থবর্ষে রাজস্ব আদায়ে ধরা হয়েছে ৪ হাজার ২৩৩ কোটি ১১ লক্ষ টাকা। ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৪১০ কোটি ১১ লক্ষ টাকা। বাজেট ঘাটতি ১৭৭ কোটি টাকা। স্বাভাবিকভাবেই আগামী আর্থিক বর্ষে বাজেটে বিভিন্ন বিভাগের জন্য কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ করা হলেও, খরচের প্রশ্নে রাশ টেনে ধরল পুর প্রশাসন। পুর কমিশনার সার্কুলার জারি করে জানিয়ে দেন, দু’টি খাতে খরচের উপর আপাতত লাগাম টানা হবে। চলতি আর্থিক বর্ষের বাজেট পেশ হওয়ার সময় দেখা যায়, ওই খরচে রাশ টানায় সুফলও মিলেছে। ঘাটতির পরিমাণ গত আর্থিক বর্ষের থেকে এবার অনেকটাই কমে গিয়েছে। তাই এবারও খরচের প্রশ্নে রাশ টেনে ধরাই উপযুক্ত বলে মনে করেছেন পুর কর্তারা।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, গত তিন-চার বছর আগেও বাজেটে বরাদ্দ করা অর্থের ১০০ শতাংশ খরচের উপরে ছাড়পত্র দিয়ে দেওয়া হত। কিন্তু তাতে দেখা গিয়েছে, পরবর্তী আর্থিক বর্ষে আয়-ব্যয়ের মধ্যে ঘাটতি অনেকটাই বেড়ে যেত। যা নিয়ন্ত্রণ করতে বেগ পেতে হত অর্থ বিভাগের আধিকারিকদের। খরচের উপরে রাশ টেনে ধরায় সেই সমস্যা অনেকটাই কেটে গিয়েছে। ঘাটতিও অনেকটাই কমছে। পুরসভা সূত্রে খবর, গত কয়েক বছরে পুরসভার রাজস্ব আদায়ের মূল স্তম্ভগুলি থেকে টাকা আদায় কমে গিয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে নজর না রাখলে বছরের শেষে প্রকল্পের জন্য টাকার জোগান দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। যার জেরে মাঝপথে কাজ স্থগিত করে দিতে হয়, অথবা আগামী আর্থিক বর্ষের বাজেটে বরাদ্দ অর্থের উপর ভরসা করতে হয়। সেকারণেই গত দু’-তিন বছর ধরে অর্থ ব্যয়ের উপরে লাগাম টানা জরুরি হয়ে পড়েছে।মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানান, সেপ্টেম্বর মাসে আবার রিভিউ মিটিং করা হবে সেখানেই পৌরসভার বাজেট নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে। পরিস্থিতি বুঝে তখন বাকি বরাদ্দের ছাড়পত্র দেওয়া হতে পারে বলে ইঙ্গিত দেন তিনি।