“জমি নিয়ে বিবাদের জেরে খুন” দাবি আমডাঙায় নিহত তৃণমূল নেতার পরিবারের

দেবজিৎ মুখার্জি, উত্তর ২৪ পরগনা: ভরা হাটের মাঝে বোমাবাজিতে নিহত হয়েছেন আমডাঙার তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের প্রধান রূপচাঁদ মণ্ডল। বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনায় নিমেষেই আতঙ্ক গ্রাস করেছে আমডাঙার কামদেবপুর হাট এলাকা। শুক্রবার সকালেও সেখানে রাজনৈতিক উত্তেজনার পরিবেশ। নিহত রূপচাঁদের বাড়িতে ঘনঘন নেতা-মন্ত্রীদের যাতায়াত চলছে। প্রত্যেকেই দাবি তুলেছেন, দোষীদের কঠোর শাস্তি চাই। কিন্তু তাঁর উপর এই হামলার কারণ কী? পরিবারের অভিযোগ, জমি নিয়ে বিবাদ চলছিল দলেরই একজনের সঙ্গে। সেই রাগ থেকে পরিকল্পনা করে রূপচাঁদকে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া এলাকার উন্নয়নে তিনি অনেক কাজ করেছিলেন। সেই হিংসা থেকেও খুন করা হতে পারে বলে মনে করছেন নিহতের বাবা, ভাই।

    সদ্য ছেলেকে হারিয়েছেন বৃদ্ধ মহম্মদ আলি মণ্ডল। তবু শোকে পাথর হয়ে যাননি। বরং এমন ঘটনা যারা ঘটিয়েছে, তাদের খুঁজে বের করে আইনের হাতে তুলে দিতে বদ্ধপরিকর তিনি। চোখের জল মুছে কঠিন গলায় তিনি জানালেন, সন্দেহভাজন কারা। মহম্মদ আলি মণ্ডলের কথায়, ”এখানকার আবু তাহেরের সঙ্গে একটা জমি নিয়ে ছেলের বিবাদ ছিল। আবু তাহেরও তৃণমূলেরই লোক। ওই জমিতে ছেলে পার্টি অফিস করেছে। কিন্তু তার ভাগ চাইত আবু তাহের। ছেলে আপত্তি জানায়। বলে যে, কোনও কাজ না করে কেন ভাগ চাইছে? তাতেই ও রেগে যায়। কিন্তু পরে পার্টি অফিসে ডেকে বিষয়টা নিয়ে কথাবার্তা হয়, মীমাংসাও হয়। কিন্তু তার পরও ওদের রাগ ছিল। তাই টার্গেট করে ওকে খুন করেছে।” এই ঘটনায় অভিযুক্ত সন্দেহে আনোয়ার নামে যাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ, সে এই আবু তাহেরের ছেলে। অর্থাৎ বাবার সঙ্গে রূপচাঁদের জমি বিবাদের প্রতিশোধ নিতে ছেলে খুন করেছে বলে অভিযোগ পরিবারের।

    দাদাকে হারিয়ে কিছুটা বিভ্রান্ত রূপচাঁদের ভাই মীরাচাঁদ মণ্ডল। ভালো করে কথাও বলতে পারছেন না তিনি। তার মাঝেই বললেন, ”দাদা এখানকার অনেক কাজ করেছিল। রাস্তাঘাট করছিল। উন্নয়ন হচ্ছিল এখানকার। তা লোকের সহ্য হয়নি। রাগ ছিল কারও কারও। তাই খুন করে দিয়েছে।” পরিকল্পনা করেই কি খুন করা হয়েছে? মীরাচাঁদের দাবি, ”দাদাকে সর্বক্ষণ নজরে রাখা হয়েছিল। নাহলে ওই সময়ে যে ও হাটে যাবে, কীভাবে জানবে ওরা?” এখন প্রশ্ন, এই ‘ওরা’ কে? আনোয়ারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সেই উত্তর খুঁজছে পুলিশ। এদিকে, শুক্রবার নিহত রূপচাঁদ মণ্ডলের দেহ নিয়ে রাস্তায় বিক্ষোভ দেখান দলীয় কর্মীরা।