সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিচয়ের মাধ্যমে  গাজোলের এক ছাত্রীর সঙ্গে ভাব হয়েছিল বর্ধমানের এক যুবকের

নতুন গতি নিউজ ডেস্ক ,মালদা:  সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিচয়ের মাধ্যমে  গাজোলের এক ছাত্রীর সঙ্গে ভাব হয়েছিল বর্ধমানের এক যুবকের।  সেই গভীর সম্পর্ককে ঘিরে অশান্তির জেরে বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হলো এক কলেজ ছাত্রী । শনিবার চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে গাজোল থানার পানডুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের গোলঘর গ্রামে।

    মৃত ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগ,  তাদের মেয়ের ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের কিছু ছবি তুলেছিল তার প্রেমিক বর্ধমানের ওই যুবক । আর তা নিয়ে ওই ছাত্রীকে ব্ল্যাকমেই করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ। পুরো বিষয়টি নিয়ে মৃত ছাত্রীর বাবা অনিল সাহা অভিযুক্ত বর্ধমানের যুবক অরুণ ঘোষের বিরুদ্ধে গাজোল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুরো বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ ।

    পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে,  মৃত ছাত্রীর নাম রুমা সাহা (১৮)।  এবছর সে গাজোলের শ্যামসুখী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পাস করে। এরপর সে গাজোল কলেজে কলা বিভাগের ফার্স্ট ইয়ারে ভর্তি হয়েছিলেন। শনিবার সকালে ওই ছাত্রী কলেজ যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বের হয়।  কিছুক্ষণের মধ্যে অসুস্থ অবস্থায় সে বাড়ি ফিরে আসে । এরপর সে অচৈতন্য হয়ে পড়ে। মুখ দিয়ে গ্যাজলা বেড়াতে থাকে। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় পরিবারের লোকেরা ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন চিকিৎসার জন্য। সেখানেই  ওই ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে বলে মেডিক্যাল কলেজের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন।

    মৃতের এক জামাইবাবু অমিত সিনহা জানিয়েছেন,  সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বর্ধমানের যুবক অরুণ ঘোষের সঙ্গে তার শ্যালিকার পরিচয় হয়েছিল। এরপরে মোবাইলের মাধ্যমে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। ওই যুবক মালদাতেও এসেছিল। কিন্তু পরে আমরা জানতে পেরেছি অরুণ ঘোষ তার শ্যালিকার কিছু অন্তরঙ্গ ছবি তুলে ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করছিল। এই নিয়েই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিল রুমা । তারই জেরে হয়তো কীটনাশক খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছে সে। পুরো ঘটনার ব্যাপারে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে । আমরা ওই যুবকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও জানিয়েছে।

    মৃত ছাত্রীর বাবা অনিল সাহা পেশায় কৃষক। তিনি বলেন , আমার মেয়ে শান্ত স্বভাবের ছিল। পড়ালেখাতেও ভালো ছিলো । ও আত্মহত্যা করতে পারবে পারে এটা ভাবতেই পারছি না। বাইরের একটি ছেলের সঙ্গে ভাব হয়েছিল বলে পরে জানতে পারি।  ওই যুবকই মেয়ের কোন ক্ষতি করেছে। তার জন্যই রুমা আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। মেয়ের মৃত্যুর জন্য দায়ী বর্ধমানের ওই যুবক অরুণ ঘোষ । আমরা তার গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছি।

    গাজোল থানার পুলিশ জানিয়েছে,  পুরো বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। অভিযোগের ভিত্তিতে বর্ধমান জেলার পুলিশের সঙ্গে এব্যাপারে যোগাযোগ করা হচ্ছে।

    ছবি —— মৃত ছাত্রী ।

    কান্নায় ভেঙে পড়েছে পরিবার।