পাঁচজন শিক্ষিকার শারীরিক অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল, তবে ৪০-৫০ মিলিগ্রামের মতো কীটনাশক এদের শরীরে গিয়েছে

নতুন গতি ওয়েব ডেস্ক: বদলির প্রতিবাদে পুলিশের সামনেই বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা পাঁচজন শিক্ষিকার অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক। এঁদের মধ্যে তিনজনকে আইসিইউ-তে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

    ৩ জন শিক্ষিকা আরজি কর ও ২ জন এনআরএসে ভর্তি রয়েছেন। হাসপাতাল সূত্রে খবর, ৪০-৫০ মিলিগ্রামের মতো কীটনাশক এদের শরীরে গিয়েছে। ক্ষতি হয়েছে লিভার ও শ্বাসযন্ত্রের।

    রাতে শ্বাসকষ্টের সমস্যা শুরু হওয়ায় এনআরএসের ২ ও আরজি করের এক শিক্ষিকাকে স্থানান্তরিত করা হয় আইসিইউ-তে। তাঁদের শারীরিক অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর।

    অন্যায়ভাবে বদলি করা হয়েছে অভিযোগ করে গতকাল বিকাশভবনের সামনে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন পাঁচজন শিক্ষিকা। তাঁদের দাবি, দিনের পর দিন আন্দোলন করেও লাভ হয়নি। কাটেনি বেতন বৈষম্য। মেটেনি বদলির সমস্যা। এই অভিযোগ তুলে একেবারে পুলিশের সামনেই বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন পাঁচ জন।

    বেতন বৈষম্য, বদলি-সহ একাধিক অভিযোগে দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন চালিয়ে আসছে পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চ। কখনও নবান্নে, কখনও আবার এক্কেবারে শিক্ষামন্ত্রীর পাড়ায়।

    এই আন্দোলনের জেরে কয়েকজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ, ছাড়া পাওয়ার পর আন্দোলনকারী ১৭ জন শিক্ষক-শিক্ষিকাকে বদলি করা হয়েছে।  যাঁদের মধ্যে ৫০ ঊর্ধ্ব পাঁচজন শিক্ষিকাকে উত্তরবঙ্গে বদলি করা হয়েছে বলে অভিযোগ।

    প্রতিবাদে এদিন বিকাশভবনের সামনে জমায়েত হন পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চের সদস্যরা। পুলিশ আটকালে ধস্তাধস্তি বেধে যায় দু-পক্ষের মধ্যে। এরপর আচমকাই শিশি থেকে কিছু বার খেতে শুরু করেন একের পর এক শিক্ষিকা।

    এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার হইচই পড়ে যায় বিকাশভবনের সামনে। আন্দোলনের পর বিকাশভবনে যান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। ঘটনা নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী মুখ না খুললেও, চরমে পৌঁছেছে রাজনৈতিক তরজা।

    তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, যা ঘটেছে তা দুর্ভাগ্যজনক। তবে দেখতে হবে প্ররোচনা কারা দিলেন। বদলির জন্য হলে এই সমস্যা চিরদিনের। দূরে পোস্টিং এগুলি সব জায়গায় আছেন। বরং মমতা চাইছেন, যাতে কাছাকাছি পোস্টিং হয়।

    অন্যদিকে, সরকারকে নিশানা করেছে বিরোধীরা। সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, নির্বোধের মতো কথাবলা বন্ধ করুক, প্ররোচনা দিতে হবে এটা কথা নয়। বিষ খাওয়াকে সমর্থন করি না। চাকরি প্রার্থীদের কথা শোনার মতো কেউ নেই। মন্ত্রী দেখা করবেন, সরকার কথা বলবে না। সরকার প্ররোচনা দিচ্ছে।

    রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, এ রাজ্যে সব থেকে কম বেতন পান শিক্ষকরা। দীর্ঘদিন ধরে ডিএ বাড়ানো হয়নি।প্রতিবাদে তাঁরা আন্দোলনে নেমেছেন। এ রাজ্যে সরকারের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুললেই তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা হচ্ছে।