|
---|
মহম্মদ নাজিম আক্তার, নতুন গতি, হরিশ্চন্দ্রপুর: দীর্ঘ সাত বছর আগে প্রতিবন্ধী সার্টিফিকেট মিললেও এখনো পর্যন্ত মেলেনি সরকারি প্রতিবন্ধী ভাতা। প্রতিবন্ধী ছেলের ভাতার জন্য বৃদ্ধ বাবা বহুবার দরবার করেছেন বহু জায়গায়। ভাতা করে দেওয়ার বদলে অর্থ চাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। সামর্থ্য না থাকায় সেটুকু দিতে পারেননি। তারপরে হয়নি কোন কাজ। এখন চিকিৎসার অভাবে শারীরিক মানসিক প্রতিবন্ধী ছেলেকে নিয়ে অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন হতদরিদ্র সেতাবউদ্দিন ও বেদুরা বিবি।
তাদের বাড়ি হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার রাঙাইপুর গ্রামে। তাদের ছেলে তারিক আনোয়ার ছোট থেকেই মানসিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধী। ২০১৩ সালে ছেলের প্রতিবন্ধী সার্টিফিকেট মিলেছিল। কিন্তু আজও জোটেনি প্রতিবন্ধী ভাতা। মালদা ও বহরমপুর সহ বিভিন্ন জায়গায় ছেলের চিকিৎসা করিয়েছেন। ছেলের চিকিৎসাতে সর্বস্বান্ত হয়ে গিয়েছেন। বন্ধক রেখেছেন জমি। তবু আশার আলো দেখা যায়নি। বিভিন্ন জায়গায় দরবার করেও মেলেনি সরকারি ভাতা। এমনকি তাদের স্বামী-স্ত্রী ৬০ বছর পেরিয়ে গেলেও তাদের কপালে জোটেনি বয়স্ক ভাতা। এমন অবস্থায় ভাবে দিন কাটাচ্ছেন বৃদ্ধ সেতাবউদ্দিন ও বেদুরা বিবি। দুজনেরই বয়স ৬০ পেরিয়ে গিয়েছে। জনপ্রতিনিধি থেকে প্রশাসনিক কর্তা সবাইকে অনুরোধ করেছেন কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
বৃদ্ধ সেতাব উদ্দিন জানালেন তার দুই ছেলের মধ্যে এক ছেলে মানসিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধী। তাকে সব সময় আগলে আগলে রাখতে হয়। তাকে খাওয়ানো, স্নান করানো সমস্ত কিছুই আমাদের দুইজনকে করতে হয়। আমাদেরও বয়স হয়েছে। এই অসুস্থ শরীরে কতদিন করতে পারো জানিনা। দীর্ঘদিন হয়ে গেল আমাদের ছেলের কোন প্রতিবন্ধী ভাতা আজও জোটেনি। বিভিন্ন জায়গায় দরবার করেছিলাম কোথাও জুটেছে আশ্বাস কোথাও বা টাকা চাওয়া হয়েছে কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। আমি চাই সরকার আমাদের দিকটা বিবেচনা করুক। আমি আমার প্রতিবন্ধী ছেলের চিকিৎসা করাতে পারি।
এ প্রসঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দা মেহেবুব আলম জানালেন পরিবারটি খুব গরিব। তারা তাদের প্রতিবন্ধী ছেলেকে নিয়ে চরম আর্থিক সংকটে পড়েছেন। সেতাবউদ্দিন বাবুর সাতখানা মেয়ে ছিল। লোকের সহযোগিতাতেই ওই সাতজনের বিয়ে হয়েছে। প্রশাসন এর উচিত ওই বৃদ্ধের প্রতিবন্ধী ছেলের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া।
স্থানীয় মেম্বার আব্দুর রহমান জানালেন উনি ওনার ছেলের জন্য সমস্ত কাগজপত্র আমাকে দেন নি। সমস্ত কাগজপত্র পেলে আমি চেষ্টা করব খুব যাতে ওনার ছেলের প্রতিবন্ধী ভাতা চালু হয়ে যায়।
এ প্রসঙ্গে গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান রিসবা খাতুন জানালেন ব্যাপারটি আমার জানা ছিল না। তবে বিষয়টি আমি খোঁজ নিয়ে দেখবো যাতে ওই ছেলেটি প্রতিবন্ধী ভাতা পায় সে চেষ্টাই করা হবে।
হরিশ্চন্দ্রপুর – ১ নং ব্লকের বিডিও অনির্বাণ বসু জানালেন সমস্ত কাগজপত্র ও প্রতিবন্ধী সার্টিফিকেট নিয়ে ব্লকের পঞ্চায়েত ডেভেলপমেন্ট অফিসারের সঙ্গে যোগাযোগ করুক। আমরা চেষ্টা করবো ব্লক স্তর থেকে যাতে উনি প্রতিবন্ধী ভাতা টা পান।