বর্ষায় ত্রিফলা বাতিস্তম্ভ থেকে দুর্ঘটনা এড়াতে এ বার ‘ইনসুলেশন জ্যাকেট’ ও ‘সার্কিট ব্রেকার’ লাগানোর পরিকল্পনা করেছে হাওড়া পুরসভা

নিজস্ব সংবাদদাতা : বর্ষায় ত্রিফলা বাতিস্তম্ভ থেকে দুর্ঘটনা এড়াতে এ বার ‘ইনসুলেশন জ্যাকেট’ ও ‘সার্কিট ব্রেকার’ লাগানোর পরিকল্পনা করেছে হাওড়া পুরসভা। শনিবার পুরসভার ত্রিফলা রক্ষণাবেক্ষণকারী ১৩টি সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করার পরে প্রাথমিক ভাবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ঠিক হয়েছে, পরীক্ষামূলক ভাবে কয়েকটি নির্দিষ্ট এলাকায় এই ‘ইনসুলেশন জ্যাকেট’ ও ‘সার্কিট ব্রেকার’ লাগানো হবে। গত মঙ্গলবার হাওড়া পুরসভার সামনেই বৃষ্টির জমা জলে হাঁটতে গিয়ে ত্রিফলা বাতিস্তম্ভ ছুঁয়ে ফেলায় এক তরুণী বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গিয়েছিলেন। সেই ঘটনার পরেই নড়েচড়ে বসে পুর প্রশাসন।ত্রিফলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাকে শো-কজ় করা হয়। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, বর্ষায় শহরের সমস্ত ত্রিফলা আলো বন্ধ রাখা হবে। পুরসভার মাধ্যমে বরাতপ্রাপ্ত যে সমস্ত ঠিকাদার সংস্থা হাওড়া শহরের ত্রিফলা আলোগুলির দেখাশোনা করে, এ দিন তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন পুরকর্তারা। সেই বৈঠকে নেতৃত্ব দেন হাওড়া পুরসভার চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী।পরে সুজয়বাবু জানান, বৈঠকে ঠিক হয়েছে, বর্ষার সময়ে ত্রিফলা বাতিতে শর্ট সার্কিটের জেরে আবার যাতে কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে, তার জন্য বাতিস্তম্ভগুলিকে উপর থেকে নীচ পর্যন্ত ইনসুলেশন জ্যাকেটে মুড়ে দেওয়া হবে। এর ফলে বাতিস্তম্ভে কেউ হাত দিয়ে ফেললেও সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। সেই সঙ্গে বাতিস্তম্ভগুলিতে সার্কিট ব্রেকার লাগানোর পরিকল্পনাও করা হয়েছে। যাতে ঝড়বৃষ্টির সময়ে গাছের পাতা বা ডালের মতো কিছু বাতিস্তম্ভে এসে পড়লেই সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এর ফলে শর্ট সার্কিট হওয়ার আশঙ্কা কমবে। সুজয়বাবুর দাবি, ত্রিফলা বাতিস্তম্ভ ঘিরে এমন পরিকল্পনা রাজ্যে এটাই প্রথম। বর্ষা পুরোদমে আসার আগেই এই কাজ শুরু করা হবে বলেও এ দিন জানিয়েছেন তিনি।

     

    পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওড়া শহরের ৫০টি ওয়ার্ডে মোট ২৮৬০টি ত্রিফলা আলো রয়েছে। ১৩টি সংস্থা সেগুলির রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করে। সুজয়বাবু বলেন, ‘‘শনিবারের বৈঠকে ওই সংস্থাগুলির যে কর্মীরা এই কাজে যুক্ত আছেন, তাঁদের নামের তালিকা ও ফোন নম্বর চাওয়া হয়েছে। সংস্থাগুলিকে বলা হয়েছে, সপ্তাহে অন্তত এক বার ত্রিফলা আলোগুলি পরীক্ষা করে দেখতে হবে, কোথাও কোনও শর্ট সার্কিট হয়ে আছে কি না। পাশাপাশি, একটি লগ বুক রাখতে হবে এবং তাতে পুরসভার আধিকারিকদের দিয়ে সই করাতে হবে। কোন কোন বাতিস্তম্ভ কবে পরীক্ষা করা হল, তা ওই লগ বুকে লিখে পুরসভায় জমা দিতে হবে।’’