|
---|
নিজস্ব সংবাদদাতা : মায়ের লড়াই ব্যর্থ হতে দেননি।বরং যোগ্য সন্মান দিয়েছেন। ৯৪ শতাংশ নম্বর নিয়ে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেছেন ব্যান্ডেলের স্নেহা দাস। ইংরেজি নিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে থাকলেও কার্যত তা অসম্ভব। পদে পদে মনে পড়ে তাঁকে এই পর্যন্ত পড়ানোর পিছনেও মায়ের অক্লান্ত পরিশ্রমের কথা। কখনওই ভুলতে পারেন না। নানাভাবে সাহায্য করতে চান মাকে। চাকরি করে মায়ের কষ্ট দূর করার ইচ্ছে থাকলেও, উপায় নেই। যদিও এতদিন ছবি আঁকা ছিল তার প্যাশন। তাঁর রং তুলিতে জীবন্ত হয়ে উঠেছে অনেক ছবি। বর্তমান পরিস্থিতিতে এই প্যাশনকেই হাতিয়ার করে মায়ের পাশে দাঁড়াতে চান স্নেহা। ছবি এঁকেই দূর করতে চান মায়ের দুঃখ।
মাসে মাত্র আড়াই হাজার টাকা বেতন। একটি কলেজ ক্যান্টিনে রান্না করেন স্নেহার মা সুপ্তি দাস। এই অল্প টাকায় মেয়ের পড়ার খরচ চলে না। তাই বাড়তি রোজগারের আশায় একটি বস্ত্র বিপনিতে পার্ট টাইম কাজ করেন। ব্যান্ডেল গোপনাথপুরের স্নেহা এই বছর উচ্চমাধ্যমিকে ৪৭১ নম্বর পেয়েছেন। শৈশবেই বাবাকে হারিয়েছেন স্নেহা। মুম্বইতে জুয়েলারির কাজ করতেন বাবা সুশীল দাস। সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময়ই মৃত্যু হয় তাঁর বাবার। তাঁর মৃত্যুর পর স্নেহাদের ঠাঁই হয় তাঁর মামার বাড়িতে। দাদু সুদর্শন চক্রবর্তী বেঁচে থাকতে তাঁদের খাওয়া দেওয়ার কোনও অভাব হয়নি। তখন মাসিরাও অনেক সাহায্য করেছেন। গত বছর মৃত্যু হয়েছে দাদুর। তার পরেই দ্বিতীয়বার আবার ছাদ ভেঙে পড়ে পরিবারের মাথায়। কোনও পারিশ্রমিক ছাড়াই এতদিন শিক্ষকরা স্নেহাকে পড়িয়েছেন। ছোট থেকেই মেধাবী, তাই বরাবরই তাঁকে গাইড করেছেন তাঁর স্কুল চুঁচুড়া বাণী মন্দিরের শিক্ষিকারা। তাঁকে পড়াতে দিন রাত লড়াই করেছেন তাঁর মা। আর মায়ের লড়াই ব্যর্থ হতে দেননি। এবার ছবি আঁকার মধ্য দিয়েই মায়ের মুখে হাসি ফোটাতে চান স্নেহা।