দলনেতার বিরুদ্ধে মুখ খোলায় বহিষ্কৃত হাওড়া সদরের বিজেপি সভাপতি সুরজিৎ সাহা

নতুন গতি নিউজ ডেস্ক: শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ আনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বহিষ্কৃত হাওড়া সদরের বিজেপি সভাপতি সুরজিৎ সাহা। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ এনে দলের ২৮ বছরের পুরনো কর্মীকে বহিষ্কারে কথা ঘোষণা করা হয়েছে।

    আগামী ১৯ ডিসেম্বর হাওড়া পুরসভায় ভোট। রাজ্যের প্রস্তাবে সীলমোহর দিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। বিজেপি এতে রাজি না হলেও মঙ্গলবার হাওড়া সদরে দলের সাংগঠনিক বৈঠক করেন শুভেন্দু অধিকারী। সেই বৈঠকেই দলের অন্দরে আদি-নব্য বিবাদ প্রকট হয়ে ওঠে। বিধানসভা ভোটের বিজেপির শোচনীয় পরাজয়ের ময়না তদন্ত করতে গিয়ে শুভেন্দু দলেরই একাংশকে দায়ী করেন। এর মধ্যে অন্যতম ছিলেন হাওড়া সদরের বিজেপি সভাপতি সুরজিৎ সাহা। শুভেন্দুর অভিযোগ, সুরজিতের সঙ্গে রাজ্যের মন্ত্রী তথা হাওড়ার তৃণমূল নেতা অরূপ রায়ের যোগাযোগ ছিল।

    এই অভিযোগ শুনেই প্রচণ্ড় রেগে যান বিজেপির বহু দিনের কর্মী সুরজিতবাবু। পাল্টা শুভেন্দি অধিকারীকে দলের পরাজয়ের জন্য দায়ী করেন তিনি। বলেন, ‘কে প্রকৃত বিজেপি কর্মী তার সার্টিফিকেট শুভেন্দু অধিকারীর থেকে নেব না। নারদাঘুষকাণ্ড থেকে মুক্ত হয়ে আগে নিজের সততার প্রমাণ দিন। ৬ মাস দলে আসা নেতার থেকে বিজেপিকরা শিখব না। বিজেপির বি টিমের অধীনে কাজ করব না।’

    এরপরই পদ্মশিবিরে জোর শোরগোল শুরু হয়। যদিও সুরজিৎ সাহার প্রকাশ্যে শুভেন্দু বিরোধী মন্তব্যকে সমর্থ করেননি বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, ‘দলের বৈঠকের কথা বাইরে বলা নিয়ম বহির্ভূত।’ দলের সর্বভারতীয় সব-সভাপতি দিলীপ ঘোষে বলেছিলেন, ‘দলের কথা দলের অন্দ থাকাই বালো। কিন্তু মনের অভিমান থেকে অনেকেই বলে ফেলেন।’

    এরপরই বুধবার সন্ধ্যায় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে দল থেকে বহিষ্কার করা হয় হাওড়া সদরের বিজেপি সভাপতি সুরজিৎ সাহাকে।

    বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের পর সুরজিৎ সাহা বলেন, ‘আমার অভিযোগ দলের বিরুদ্ধে নয়, ব্যক্তির বিরুদ্ধে। আমরা পুরনো নেতা, কর্মীদের সম্মান দেওয়া হচ্ছে না। যাঁরা অন্য দল থেকে আসছেন তাঁদের নেতা করে দেওয়া হচ্ছে। এর ফল বিধানসবা ভোটে দেখা গেল। কেন দলবদলু নেতাদের থেকে আমার মত ২৮ বছরের পুরনো বিজেপি নেতাদের সার্টিফিকেট নিতে হবে? আমি যা বলেছি তার থেকে অনেক বেশি কড়া কথা তথাগত রায়, সৌমিত্র খাঁ বলেছেন। কোথায় তাঁদের তো সাসপেন্ড করা হল না। এখন দল বুঝছে না, শুভেন্দুর মতো নেতারা যখন দল ছেড়ে যাবেন, তখন বিজেপি আমাদের কথার গুরুত্ব বুধতে পারবেন।’ তাঁকে অপমান করার জন্য শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বহিষ্কৃত বিজেপি নেতা।