রাজ‍্য জুড়ে আমন (শান্তি)একতা সম্মেলন করবে জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ

নিজস্ব প্রতিনিধি : পশ্চিম বাংলায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ‍্যকে অক্ষুণ্ন রাখার জন্য জেলায় জেলায় তিন মাস ধরে “শান্তি ও একতা” সম্মেলন করতে চলেছে। পশ্চিমবঙ্গ রাজ‍্য জমিয়তে উলামা এ নিয়ে জমিয়তে উলামা ভবনের আবু তালেব চৌধুরী কনফারেন্স রুমে রাজ‍্য জমিয়তে ওয়াকিং কমিটির বৈঠক হয়। সেখানে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে জমিয়তে সূত্রে জানা গেছে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের রাজ‍্য সভাপতি মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী সাহেব‌। বৈঠক শেষে চৌধুরীসংবাদমাধ্যম কে জানান রাজ‍্য জুড়ে অনুষ্ঠিত হবে আমন ও একতা সম্মেলন যেমন জমিয়তের প্রতিনিধি থাকবে অনুরূপ ভাবে ফুরফুরা, বেরেলভী, আহলে হাদিস সহ অন‍্যান‍্য মতাদর্শের প্রতিনিধিদের সম্মেলনে অংশ নেবেন। একই ভাবে দেশপ্রেমিক ধর্মনিরপেক্ষ বিদ্বজ্জনদের আমন্ত্রণ জানানো হবে ওই সভাগুলিতে। আগামী ১ সেপ্টেম্বর মালদার সুজাপুরের পাশাপাশি মেদিনীপুর, বারুইপুর, বর্ধমান, বসিরহাট, চুঁচুড়া, আরামবাগ, তমলুক, মুর্শিদাবাদ, কৃষ্ণনগর সহ রাজ‍্যের বিভিন্ন শহরে আমন ও একতা সম্মেলন করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে রাজ‍্য জমিয়ত কিন্তু কেন প্রয়োজন হল এ ধরনের সম্মেলন ? সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরীর ব‍্যাখ‍্যা, জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ তার জন্মলগ্ন থেকেই জাতীয় সংহতি ও ঐকের উপর অবিচল হয়ে আছে। জমিয়ত উৎশৃঙ্খলতা, নাশকতা, সাম্প্রদায়িকতা, বিচ্ছিন্নতাকে প্রশয় দেয়নি। বরং শক্তি দিয়ে তার সাধ‍্যের মতো প্রতিরোধ করে টিকে আছে। তাই এই কঠিন সন্ধিক্ষণে দৃঢ়তার সঙ্গে জমিয়তের প্রতিটি ইউনিটকে সেই ধারা অব‍্যাহত রাখতে হবে।
আলোচনায় উঠে আসে যে, আগামী ১২ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে সর্ব ভারতীয় জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের মজলিসে মুনতাজিমার সভা অনুষ্ঠিত হবে।পশ্চিমবঙ্গ থেকে যাতে ৩০০ প্রতিনিধি যোগদান করে, সেইজন্য জেলা সভাপতি, সম্পাদক কে নির্দেশ দেওয়া হয়। যারা সেখানে যোগদান করবেন, তাদের নাম নামের তালিকা রাজ‍্য অফিসে এবং দিল্লি অফিসে পাঠাতে হবে।
মাদ্রাসা শিক্ষা নিয়ে এই দিন সুদীর্ঘ আলোচনা হয় । সেখানে স্থির হয়, আবসিক ছাত্রদের খানাপিনা, পোশাক সহ যাবতীয় প্রয়োজনের প্রতি মাদ্রাসা কর্তৃ পক্ষ গভীর ভাবে নজর দেবেন। কোনোও ভাবে কোনও দুষ্কৃতীকারী মাদ্রাসার ক্ষতি সাধন না করতে পারে সে বিষয়ে নজর দেওয়া ও অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে কোথাও কোথাও সিসিটিভি লাগানোর বিষয়ে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ দের অনুরোধ জানানো হয়। মাদ্রাসার অর্থ ধর্মীয় শিক্ষা গ্ৰহণ নয়,পারিপার্শ্বিক সামাজের সঙ্গে মেলবন্ধন, ভালোবাসা, সুষ্ঠু পরিবেশ পড়াশোনা এ বিষয়গুলি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ কে মেনে চলতে হবে। মাদ্রাসার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এলাকার অমুসলিম বন্ধুদের আহ্বান জানিয়ে কী কী উন্নতি করেছেন, সেটা তাদের সামনে তুলে ধরা দরকার। ছাত্র-শিক্ষকদের ঠিকানা, সঠিক পরিচিতি, ভোটার আইডি, আধার কার্ড ইত্যাদি মাদ্রাসায় রাখতে হবে। সাম্প্রদায়িক শক্তির চড়াই- উতরাই থাকবে; এর মাঝখানে হা-হুতাশ না করে অবিচল থাকাই দায়িত্ব পরায়ণতা পা না দেন, সে বিষয়ে সজাগ থাকার অনুরোধ এ দিনের সভা থেকে জানানো হয়।
২০১৯-২১ সালের প্রাথমিক সদস্য সংগ্ৰহের পর্ব শুরু হতে চলেছে। সে বিষয়ে জেলাও শাখা সংগঠনের জিম্মাদারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়।

    আলিপুরদুয়ার থেকে দক্ষিণ২৪ পরগনা প‍র্যন্ত ২২ টি জেলার সভাপতি, সম্পাদকরা এ দিন অংশগ্রহণ করেন। এ দিনের সভায় উপস্থিত ছিলেন মাওলানা আব্দুস সালাম রহিমী, মাওলানা আবুল কাসেম, দাউদ হাসান, মাওলানা জাকারিয়া কাসেমী, মুফতি আব্দুস সালাম, মুফতি রফিকুল ইসলাম, মাওলানা ইমদাদুল্লাহ চৌধুরী, মাওলানা আনিসুর রহমান, মাওলানা বদরুল আলম, মুফতি আমিনুদ্দিন,হাফেজ নজরুল ইসলাম প্রমুখ।