|
---|
নিজস্ব সংবাদদাতা : হাতের কাছে সব কিছু পেয়েও অনেকের পড়াশোনা হয় না অথবা পড়তে চান না। কিন্তু বীরভূমের সিউড়ি এক নম্বর ব্লকের অন্তর্গত কড়িধ্যা গ্রাম পঞ্চায়েতের কালিপুর গ্রামের দেবাশীষ দাস নামে এক উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী কঠোর পরিশ্রম করে এবার পরীক্ষা কেন্দ্রে। দেবাশীষ কড়িধ্যা যদুরায় মেমোরিয়াল এন্ড পাবলিক ইনস্টিটিউশনের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র। দেবাশীষ দাসের বাবা-মা না থাকায় সে দিদার কাছে মানুষ। আবার তার দিদার বয়স অনেক হয়ে যাওয়ার কারণে রোজগারহীন হয়ে পড়েছেন তিনি। এমত অবস্থায় সংসারের হাল ধরতে দেবাশীষ মাছ বিক্রি করার পথ বেছে নিয়েছেন। মাছ বিক্রি করা ছাড়াও রাতে কোথাও ক্যাটারিংয়ের কাজ পেলে সেখানে ছুটে যায় কিছু বাড়তি টাকা রোজগারের তাগিদে। তবে এর পাশাপাশি চলছে তার পড়াশোনাও। আর এই পড়াশোনা করেই এবারের উচ্চমাধ্যমিকে পরীক্ষার্থী হিসাবে পরীক্ষায় বসলেন তিনি।করোনাকালের আগে দেবাশীষ একজন সাধারণ পড়ুয়ার মতই স্কুল জীবন নিয়ে ব্যস্ত ছিল। কিন্তু করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পর লকডাউন জারি হলে চরম আর্থিক অনটন শুরু হয় তাদের পরিবারে। তখন থেকেই দেবাশীষ এমন রোজগারের পথ বেছে নেয়। প্রতিদিন ভোর রাতে ঘুম থেকে উঠে সিউড়িতে আরতে ছুটে যায়। সেখান থেকে ১২ থেকে ১৫ কিলো মাছ কিনে নিয়ে এসে সেগুলি পাড়ায় পাড়ায় বিক্রি করে। সেখান থেকেই যা রোজগার হয় তা দিয়েই চলে সংসার। তবে লকডাউন চলাকালীন রোজগারের পথ বেছে নেওয়ার পর দেবাশীষ পড়াশুনো একরকম ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। পরবর্তীতে পুনরায় স্কুলের দরজা খোলা হলে স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা জানতে পারেন, দেবাশীষ নাকি পড়াশোনা ছেড়ে মাছ বিক্রি করছে। এরপর স্কুলের শিক্ষকরা তার বাড়িতে গিয়ে তাকে এবং তার পরিবারের সদস্যদের বোঝান। এরপরেই দেবাশীষ পুনরায় স্কুলে আসা শুরু করে এবং মাছ বিক্রির পাশাপাশি উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতি শুরু করে। দেবাশীষ দাসের এমন কঠোর পরিশ্রমকে কুর্নিশ জানিয়েছেন স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা এবং তারা দেবাশীষের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করছেন।