সব বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে এবার স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে চিকিৎসা বাধ্যতামূলক

সব বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে এবার স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে চিকিৎসা বাধ্যতামূলক

    মহঃ মফিজুর রহমান, নতুন গতি : আর কোনো টালবাহানা নয় ! রাজ্যের সব বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে এবার স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে চিকিৎসা বাধ্যতামূলক করলো রাজ্য সরকার । কোনো নার্সিংহোম বা বেসরকারি হাসপাতাল তা অমান্য করলেই সেই প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স একেবারে বাতিল করে দেওয়া হবে । মঙ্গলবার বিকেলে এমনই করা হুঁশিয়ারি দিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর । মঙ্গলবার জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে রাজ্যের স্বাস্থ্য ভবন স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে , কোন নার্সিংহোম বা বেসরকারি হাসপাতাল যদি স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে চিকিৎসা পরিষেবা না দেয় তাহলে সেই প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স নবীকরণ আটকে দেওয়া হবে । প্রয়োজনে স্থায়ীভাবে বাতিল করা হবে লাইসেন্সও । ১০ টি বা তার বেশি শয্যাবিশিষ্ট বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোম সহ এই ধরনের রাজ্যের সব চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে রোগীকে চিকিৎসা পরিষেবা দিতে বাধ্য থাকবে । কোনও অজুহাত দেখিয়ে রোগীকে চিকিৎসা পরিষেবা থেকে বঞ্চিত করা যাবে না । স্বাস্থ্য দপ্তরের এই নির্দেশ অমান্য করলেই সেই চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেবে রাজ্য সরকার ।

    উল্লেখ্য , বাংলার সকল নাগরিককে আরও উন্নত ও নিশ্চিত স্বাস্থ্য পরিষেবা দিতে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প চালু করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । রাজ্যে বিধানসভা ভোটের ঠিক প্রাক্কালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষিত স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প নিয়ে কম সমালোচনা করেন নি বিরোধীরা । গোটাটাই ভোটের চমক আর ভাওতাবাজি বলে আখ্যা দিয়েছিলেন বিরোধী শিবিরের নেতা নেত্রীরা । বিরোধীদের পাল্টা হিসেবে বাংলার নাগরিকদের আশ্বস্ত করতে বিভিন্ন মঞ্চে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি ছিল স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে চিকিৎসা পরিষেবা পেতে কোনও অসুবিধা হলে একটা কমপ্লেন করবেন আমরা সঙ্গে সঙ্গে অ্যাকশন নেব । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নানা নির্দেশ , নানা হুঁশিয়ারির পরেও স্বাস্থ্যসাথীর রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবা না দিয়ে ফিরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে বেশকিছু বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে । ফলে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড থাকা সত্ত্বেও হয়রানির শিকার হন ওই সব রোগী এবং তাদের পরিবার । স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে চিকিৎসা হয়রানির বেশ কিছু খবর বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয় । এটাকে হাতিয়ার করে ভোটের বাজার গরম করতে আসরে নামেন বিরোধীরা । স্বাস্থ্যসাথীর পরিষেবা সম্পর্কে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণাকে কেবল ‘ফাঁপা’ প্রতিশ্রুতি বলে একযোগে কটাক্ষ করে বাম- কংগ্রেস- বিজেপি । খোদ মুখ্যমন্ত্রীর নানা নির্দেশ , নানা হুঁশিয়ারির পরেও কিছু বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোম কিভাবে রোগী ফেরাতে সাহস পায় তা নিয়েও প্রশ্ন তোলে বিরোধী শিবির । ভোটের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে এই ইস্যুতে অহেতুক বিরোধীরা ভোটের ময়দান গরম করুক চান না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । তাই আর মৌখিক নির্দেশ বা হুঁশিয়ারি নয় ! এবার পাকাপাকি নোটিফিকেশনের মাধ্যমে স্বাস্থ্য দপ্তরের কড়া দাওয়াই । স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে চিকিৎসা পরিষেবা দিতে অস্বীকার করলেই সংশ্লিষ্ট বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোমের লাইসেন্স একেবারে বাতিল করবে রাজ্য সরকার।