কালিয়াচকে “নতুন আলো” ও মালদায় “স্বপ্ন উড়ান” প্রাণ বাঁচাচ্ছে মানুষের,কান্ডারি আলমগীরের হাত ধরে

নতুন গতি নিউজ ডেস্ক : কালিয়াচকের ছেলেরা শুধু বোমা গুলি নিয়ে খেলে না কিছু আলমগীর খানদের মতো মানুষরা মানুষের প্রাণ ফিরিয়ে দিতেও ঝাঁপিয়ে পড়ে

    পুজোর উৎসবে যেমন নতুন পোশাক দিয়ে কচিকাঁচাদের মুখে হাসি ফুটিয়ে ছিল তেমনই ঈদের উৎসবেও ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের মুখে হাসি ফোটাতে ব্যস্ত থাকে কালিয়াচক ও মালদার স্বেচ্ছাসেবক “আলমগীর খান”।
    আলমগীর খান প্রায় ৪ বছর থেকে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাথে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় কাজ করে কালিয়াচকের নাম উজ্জ্বল করেছে।কালিয়াচকে “নতুন আলো” ও মালদায় “স্বপ্ন উড়ান ” নামের দুইটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও খুলে ফেলেছে এই আলমগীর। মানুষের পাশে সে রক্ত জোগান হোক, খাওয়ার এর জোগান বা পুজো, ঈদ, ঠান্ডার সময় বস্ত্র বিতরণ সব কিছুতেই সে সব সময় মানুষের পাশে একজন অভিভাবক হয়ে পাশে দাঁড়ায়।

    কিছুদিন পূর্বে ঈদের জামা কিনে দিতে না পারায় সন্তানদেরকে বিষ খাইয়ে দিয়ে নিজেও বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছিল এক গৃহবধূ। খবরটি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ হলে জানতে পেরে ভীষণ কষ্ট পেয়েছিল সে। তখন সিদ্ধান্ত নেই এইবার ঈদ উপলক্ষে সেই সব বাবা-মা এর পাশে থাকবে যাদের ছেলে মেয়েরা ঈদ উপলক্ষে নতুন পোশাক পায় না। সকলের কাছে অনুরোধ করছিল সে এই খুশির উৎসবে যদি কেউ পোশাক কিনে দিতে না পারে তবে বাচ্চাদের সাথে এমন জঘন্য কাজ দয়াকরে পুনরায় না হয়, তাই তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের মোবাইল নম্বর দিয়ে সকলকে অনুরোধ ও করেন যে, কারও যদি জামা কাপড়ের দরকার হয় তবে যেন ফোন করে জানায়। আর এরকম জঘন্য কাজ করা হতে বেঁচে যায়।

    কালিয়াচকের আলমগীর খান খুব বড়লোক ঘরের ছেলে না। তাঁর সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারেই জন্ম। তাই তার কাছে মোটা টাকা না থাকলেও আছে এমন এক সুন্দর মন ও হৃদয়, যে হৃদয় অসহায় শিশুদের কষ্ট ও যন্ত্রণা অনুভব করতে পারে। যে মন অপর এক মানুষের জীবনের মূল্য কতটা তা বুঝতে পেরে মুমূর্ষ রোগীর প্রয়োজনে রক্ত দিতে তৎক্ষণাৎ ছুটে যায়।
    শুধু তাই নয় আলমগীর খান কিছু সদস্যদের সাথে নিয়ে বিভিন্ন রকম কার্যকলাপের মাধ্যমে মানুষকে সহযোগিতা করে থাকে বলে জানা যায়। কালিয়াচকের থানাপাড়ার নিন্মমধ্যবিত্ত পরিবারের আলমগীর খান কালিয়াচক হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক পাশ করে। তারপর গনি খান ইন্সটিটিউট থেকে মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ার নিয়ে পড়াশোনা শুরু করে বর্তমানে কলকাতার স্বামী বিবেকানন্দ ইন্সটিটিউট থেকে বিটেক করছেন।
    নিজেদের কাছে টাকা না থাকায় সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে সকলের কাছে আর্থিক সহযোগিতা নিয়ে একত্রিত করে সেই অসহায় ছেলে-মেয়েদের, বাবা-মা দের হাতে নতুন পোশাক তুলে দিয়ে তাদের মুখে হাসি ফুটায় ও তাদের পড়াশোনা সামগ্রীও তুলে দেয়। যখন সময় পায় নিজের এলাকার ছাত্র/ছাত্রীদের নিয়ে বসে পড়ে। “নতুন আলো”-র সহ সভাপতি আমাদের জানান যে, তিনি কালিয়াচকেই নিজের একটি কেন্দ্র খুলতে চাই। যেখানে যুবকদের মোটিভেশান দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে।

    আলমগীর ভীষন বড়ো মনের ছেলে, তার কাছে রাত একটা বা সকাল ৬টা কোন ব্যাপার না সব সময় তাকে আমরা ফোনে পায়, আমরা দেখি সে এইসব সামাজিক কার্যকলাপের সাথে যুক্ত। তখন তাকে আমরা ডেকে তার সাথে কাজ করার জন্য অনুরোধ করি। সে সব সময় চেয়েছে কালিয়াচক এর নামে যেন শুধু খারাপ দিক না তুলে ধরে, মানুষ ভালো দিক কতটা আছে তাই যেন মানুষের মনে দাগ দিক। আলমগীর খান শুধু মাত্র একটি নাম নই, সকলের অনুপ্রেরণা এখন আলমগীর। আলমগীর এগিয়ে চলুক তার সব স্বপ্ন বাস্তবায়িত হোক সকল কালিয়াচকবাসি ও মালদাবাসি এটাই চায়।