রাজারামপুর গ্রামের কালীপুজো প্রায় ২০০ বছরের প্রাচীন অষ্টমীর দিন তিথি মেনে এই পুজোর শুরু হয়

নিজস্ব সংবাদদাতা : পূর্ব মেদিনীপুর জেলা বা মেদিনীপুরের বিভিন্ন এলাকায় বছরের বিভিন্ন সময়ে কালীপুজোর চল রয়েছে। এই কালীপুজো গুলো কোনটাই বর্তমান কালের। বেশিরভাগই শতাব্দী প্রাচীন। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দকুমার ব্লকের কুমারচক গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার রাজারামপুর গ্রামের কালীপুজো প্রায় ২০০ বছরের প্রাচীন। প্রতিবছর দলের আটদিন পর অর্থাৎ শীতলা অষ্টমীর দিন তিথি মিনি এই পুজোর শুরু হয়। পুজো উপলক্ষে পুজোর দিন বহু ভক্তের সমাগম হয়। কথিত আছে একসময় মহামারীর প্রকল্পে এই গ্রাম প্রায় জনমানব শূন্য হয়ে পড়েছিল। সেইসময়ই গ্রামের এক ব্যক্তিকে দেবী কালী মা স্বপ্নাদেশে নির্দেশ দেন গ্রামের শ্মশানের ওপর তাঁর আরাধনা করতে তাহলে গ্রাম মহামারী রোগ থেকে মুক্তি পাবে। সেই থেকেই শুরু হয় রাজারামপুর গ্রামের এই শ্মশান কালী পুজো। একসময় গ্রামের মানুষজন মায়ের পুজো দিত। কিন্তু পরে পরে লোকমুখে দেবীমাহাত্ম্য ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে প্রতি বছর শীতলা অষ্টমীর দিন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন প্রান্তের পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী জেলার মানুষজনেরাও আসে এই কালী মায়ের কাছে পুজো দিতে। সাধারণত আমরা কালী মায়ের যে রূপ দেখি তার চেয়ে রাজরামপুর গ্রামের এই কালী মায়ের রূপ আলাদা। শ্মশান এর ওপর পূজিত হয় বলে মায়ের দুটি হাত লক্ষ্য করা যায়। কালী মা এখানে সংহার মূর্তিতে পূজিত হয় না। সন্তানের মঙ্গল কামনায় রোগ মুক্তির আশায় ও বিভিন্ন মনস্কামনা পূরণের জন্য মায়ের কাছে মানত করে ভক্তরা। মানুষ কামনা পূরণেরপর পুজো দেয়। এক সময় মাটির কুঁড়েঘরে কালী মা পূজিত হলেও বর্তমানে পাকার মন্দির। মন্দিরের পাশে রয়েছে পূণ্য পুকুর। মানত পূজা দেওয়ার আগে পূর্ণ পুকুরে স্নান করে ভক্তরা। অনেকে আবার মন্দিরের চারপাশে দণ্ডী কাটে। করোনা আবহে গত দু’বছর মন্দিরে পুজো হলেও ভক্তের সমাগম বন্ধ ছিল। কিন্তু এবছর করোনা আবহ না থাকায় প্রচুর ভক্ত পুজো দিতে এসেছে। পুজো কমিটির এক সদস্য জানিয়েছেন প্রাচীন রীতিনীতি নিয়ম মেনেই শীতলা অষ্টমী তিথি থেকেই শুরু হয়েছে কালী মায়ের পুজো। সারাদিন ধরে চলবে পূজা পাঠ। পুজো উপলক্ষে গ্রামে সাত দিনের মেলা বসেছে। মেলা মঞ্চ থেকে প্রতিদিন পরিবেশত হবে যাত্রাপালা, ও সংগীতের অনুষ্ঠান।