“কাশ্মীর থেকে সংবিধানের 370 / 35 (A) বিলোপ সম্পর্কে কয়েকটি মত l”

 

    শরিফুল ইসলাম, নতুন গতি : ভারত-পাকিস্তান নিয়ন্ত্রণ রেখা বিতর্কে দাবি পাল্টা দাবির মধ্যেই কাশ্মীর থেকে আর্টিকেল 370 বাতিলের কেন্দ্রীয় সরকারী সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরপরই দেশ জুড়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে l সংবিধান সংশোধনের মতন মৌলিক বিষয় নিয়ে শাসক দলের নজির বিহীন ও ঐতিহাসিক পরিবর্তনের প্রেক্ষাপট কে সামনে রেখে শাসক দল বিজেপির শরিক তো বটেই, বিরোধী শিবির,বুদ্ধিজীবী মায়সাধারণ নাগরিকদের মধ্যেও বিতর্ক চলছে সমান তালে l

    উল্লেখ্য, সোমবার, সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কাশ্মীর উপত্যকায় জনগণের বিশেষ অধিকার 370 ধারা বাতিলের পাশাপাশি জম্মু- কাশ্মীর এবং লাদাখ কে দুটি পৃথক উপত্যকায় বিভক্ত করে সরাসরি কেন্দ্রীয় শাসনাধীনে নিয়ে আসেন l স্বাভাবিক ভাবেই প্রায় সত্তরবর্ষীয় যুক্ত রাষ্ট্রীয় ব্যবস্হার অধীন থেকে স্বতন্ত্র রাজ্যের অধিকার হারায় জম্মু কাশ্মীর l

    এর পরেই কংগ্রেস, তৃণমূল, বাম দল সহ বিভিন্ন দলের সাংসদ সদস্যরা কেন্দ্রের এই ঘোষণার বিরুদ্ধে সোচ্ছার হন l

    সংবিধানের 370 ধারা বাতিলের এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের পক্ষে ও বিপক্ষে অতঃপর দেশের সঙ্গে রাজ্য জুড়েও বিতর্কের সূত্রপাত ঘটে l

    বিজেপি সরকারের এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করে প্রদেশ কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা সোমেন মিত্র বলেন, ‘ দেশে কার্যত জরুরী অবস্থা চলছে l দেশের বেকারত্ব, শ্রমিক -কৃষক মেহনতি মানুষের জ্বলন্ত সমস্যার অভিমুখ ঘোরাতেই কাশ্মীরে উদ্ভূত পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে কেন্দ্র l”

    প্রাক্তন সাংসদ সিপিএমের মোহাম্মদ সেলিম বলেন, ‘সরকারী প্রচেষ্টায় রাষ্ট্রের একটি বৈধ অঙ্গ রাজ্যের ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হলো l সর্ব দলীয় ও রাজনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার মীমাংসা না করে পরিস্থিতি আরো সংকটাপন্ন করে তুলছে কেন্দ্র l 370 ধারা বিলোপের প্রস্তাব উত্থাপন হলো কিন্তু আলোচনার জন্য তা সার্কুলেটের প্রয়োজন বোধ করলেন না গৃহ-মন্ত্রক l এটা গণতন্ত্রের পক্ষে একটি নেতিবাচক দৃষ্টান্ত হয়ে থাকলো l’

    কাশ্মীর থেকে আর্টিকেল 370, 35(A) বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় মতামত ব্যক্ত করেছেন সরাবজি l কাশ্মীর প্রসঙ্গে ভারতের এই প্রাক্তন আটর্ননি জেনারেল সংবিধানের সংশ্লিষ্ট ধারা উঠিয়ে নেওয়া ঠিক হয়নি বলেও মনে করেন l কেন্দ্র সরকারের এই সিদ্ধান্ত সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘সরকারী এই নির্দেশে বিচক্ষণতা কম রাজনীতির বেশি l’ তাঁর মতে, ‘এটি কখনোই বৈপ্লবিক সিদ্ধান্ত নয় l সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তের ভবিষৎ নিয়েও আশাবাদী নয় বর্ষীয়ান এই সংবিধান বিশেষজ্ঞ l’

    রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত’র উদ্দেশ্যের পদ্ধতিগত বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন l তিনি আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মীমাংসার পক্ষপাতী l এছাড়াও প্রাক্তন দুই মুখ্যমন্ত্রী সহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্বের গৃহ বন্দির বিষয় টি নিয়েও যথেষ্ট উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় l