|
---|
লুতুব আলি : বর্ধমান,২৭ জুন,কেন্দ্রীয় সরকার কৃষক বিরোধী বলে আখ্যা দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোট এলেই বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বদের দুই বেলা এরাজ্যে আনাগোনা শুরু হয়ে যায়। তারা এসে বাংলাকে ভাগ করার কথা বলেন, হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে দাঙ্গা বাধানোর উস্কানিমূলক রচনা দেয়। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বর্ধমানের গোদা স্বাস্থ্য নগরীর মাঠে প্রশাসনিক বৈঠকে এই অভিযোগ করেন। মুখ্য মন্ত্রী আরও বলেন, কেন্দ্রে বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার কৃষকদের স্বার্থ রক্ষার ব্যাপারে আস্থাশীল নয়। কেন্দ্রীয় সরকারের জনবিরোধী কৃষি আইনের বিরুদ্ধে সর্বভারতীয় স্তরে যে আন্দোলন সংঘটিত হয়েছিল সেই আন্দোলনে সর্বপ্রথম তিনি তাদের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। গত ১১ বছরে বাংলায় কৃষকদের তিনগুণ বৃদ্ধি হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এদিন মঞ্চ থেকে বোতাম টেপার সঙ্গে সঙ্গেই ৮৯ লক্ষ্য কৃষকদের ব্যাংক একাউন্টে ২৩৮৫ কোটি টাকা সরাসরি ঢুকে যায়। এ রাজ্যের ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সী কৃষকেরা মারা গেলে পরিবার ২ লক্ষ টাকা পান। গত নির্বাচনের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে নির্বাচনে জিতলে কৃষকদের ও ক্ষেতমজুরদের আর্থিক অনুদান দ্বিগুণ করবেন। মুখ্যমন্ত্রীর সেই প্রতিশ্রুতির বাস্তবে রূপদান ঘটেছে। কৃষকদের আর্থিক অনুদান ৬ হাজার টাকা বাড়িয়ে ১০ হাজার করেছেন বলে মুখ্যমন্ত্রী জানান। রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় এখনো যারা আসতে পারেননি তাদেরকে দুয়ারের সরকার কর্মসূচির মধ্যে নথিভূক্ত করতে পারবেন বলে ঘোষণা করেন। এই দিন মুখ্যমন্ত্রী কৃষি আধিকারিকদের উদ্দেশ্যে হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, জমি, জায়গা মিউটেশনের আর বিলম্ব করা চলবে না। দুয়ারের সরকার কর্মসূচির মধ্যেও মিউটেশনের ব্যবস্থা থাকবে। মুখ্যমন্ত্রী এদিন আরও বলেন, ২৫ থেকে ৬০ বছর বয়সী মহিলা দের লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পে সুযোগ পান। যাদের ৬০ বছর পেরিয়ে গেছে তারা বার্ধক্য ভাতা র সুযোগ পাবেন। ১১ বছরে ৫৭ লক্ষ টন খাদ্যশস্যের উৎপাদন বেড়েছে। শস্য বীমার জন্য রাজ্য বছরে ৭০০ কোটি টাকা খরচ করে। রাজ্য সরকার কৃষকরত্ন দিয়ে কৃষকদের সমানভাবে সম্মানিত করে আসছে। মাটিগাথা প্রকল্প গড়ে তোলা হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানান। এখানে কৃষকদের যন্ত্রপাতি মেরামত এর ব্যবস্থা থাকবে। কৃষি ক্ষেত্রে রাজ্য ডাল, ভুট্টা, তৈলবীজ উৎপাদন বৃদ্ধি করে নজির সৃষ্টি করেছে। রাজ্য কৃষি ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন ঘটিয়েছে বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার তা সহ্য করতে পারছে না। বাংলার প্রতি বঞ্চনা, বাংলা আর সহ্য করতে পারবেনা। প্রয়োজনে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলবেন বলে এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানান। এদিনের অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী শোভন দেব চট্টোপাধ্যায়, স্বপন দেবনাথ, মলয় ঘটক, জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা, পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় সহ প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক বিভিন্ন কর্তাব্যক্তিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।