কলকাতা ট্রাফিক পুলিশ বাড়ালো সাহায্যের হাত

নতুন গতি ওয়েব ডেস্ক: রাজ্যে জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা দিতে এসে পরীক্ষা হল খুঁজে না পেয়ে শনিবার বিপদের মুখে পড়তে হয় বিহার থেকে কলকাতায় আসা মানিশ কুমার ও ইরফান আনসারিকে। এমন অবস্থা হয় যে আদৌ সময়মতো হলে পৌঁছে পরীক্ষা দিতে পারবে কিনা তাই নিয়েই মনে দানা বাঁধে সংশয় আর দুশ্চিন্তা। ঠিক সেই সময় ঈশ্বরের দূতের মতোই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন কলকাতার ট্রাফিক পুলিশ। শেষ পর্যন্ত সময়েই পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে জয়েন্ট দিতে পারলেন ভিনরাজ্যের দুই পরীক্ষার্থী।

    কলকাতার রাস্তা ও পরিবহন পুরোটা অচেনা এই দুই বিহারের বাসিন্দার। কলকাতা শহরের যাদবপুর মানেই তারা জানেন দক্ষিণ কলকাতার মেন ক্যাম্পাসটি। অচেনা এত বড় শহরে পরিবহন থাকলেও কোন বাস কোথায় যায় তাও অজানা দুই অল্পবয়সী ছাত্রের। বাস বা ট্রাক্সিচালক যাকেই জিজ্ঞেস করেছেন ঠিকানা মিলেছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন ক্যাম্পাসের। আর সেই ঠিকানাতে পৌঁছে যেন চক্ষু চরক গাছ মনিশ ও ইরফানের। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে পৌঁছে নিরাপত্তারক্ষীকে দেখাতেই উত্তর মিলল অন্য। তাদের জানিয়ে দেওয়া হল তাঁদের পরীক্ষা কেন্দ্র আসলে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস মানে সল্টলেক।

    দুই ছাত্রের কাছেই সময় ও টাকা দুটিরই যথেষ্ট অভাব।  হাতে যা সীমিত অর্থ সম্বল। তার ওপর এগিয়ে আসছে পরীক্ষার সময়ও। দুশ্চিন্তা ও হতাশায় দুই পরীক্ষার্থী দ্রুত বাস ধরার জন্য যাদবপুর ক্রসিং-এ পৌঁছায়। কিন্তু বিধি নিষেধের কারণে বেশিরভাগ বাসই দেখেন অন্য রুটের। সেই সময় সেখানে ঘটনাচক্রে উপস্থিত ছিলেন  কর্তব্যরত যাদবপুর ট্রাফিক গার্ডের সার্জেন্ট নিলয় হালদার। দুই পরীক্ষার্থীকে বিভ্রান্ত দেখে এগিয়ে আসেন তিনি।

    মনীশ ও ইরফানের থেকে পুরো বিষয়টি জানতে চান পুলিশ। ঘটনার গুরুত্ব বুৃঝে  সময় নষ্ট না করে সার্জেন্ট নিলয় ট্রাফিক গার্ডের কনস্টেবল কৃষ্ণ চূড়া ঘোষের মোটরসাইকেলে করে তাদের পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। তারা পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছয়  সময়মতোই। কলকাতা শহরের অচেনা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস দেখে দুই ছাত্রের মুখে হাসি দেখা যায় পরীক্ষার আগে। এদিন দুই পড়ুয়াকে ছেড়ে ফের নিজের ডিউটিতে ফিরে যান কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ। অচেনা শহরের পুলিশের এই সহৃদয় ব্যবহারে কৃতজ্ঞতায় বুক ভরে যায় দুই পরীক্ষার্থীর।