|
---|
নিজস্ব সংবাদদাতা : যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য বৃদ্ধিতে এবার জুড়ে যাচ্ছে কলকাতার দুই ‘লাইফ লাইন’ মেট্রো রেল এবং সরকারি বাস। শহরের যানজট কাটাতে পরিবেশবান্ধব পরিবহণ মেট্রোতে চেপে ভ্রমণের পর বাড়ির বাস পাওয়া যাবে নিকটবর্তী মেট্রো স্টেশন থেকেই। মহানগরের উত্তরে দক্ষিণেশ্বর, নোয়াপাড়া থেকে শুরু করে দক্ষিণে কবি সুভাষ পর্যন্ত মেট্রো স্টেশন থেকে বাসরুট চালু হবে। পরে শহরতলির দক্ষিণে ঠাকুরপুকুর এবং উত্তরে বারাসত পর্যন্ত নির্মীয়মাণ মেট্রো রুট শুরু হলে সেখানেও রাজ্য সরকার এই নয়া পরিষেবা চালু করবে। পরিবহণ দপ্তরের ভাষ্য অনুযায়ী নয়া পরিষেবার নাম হবে ‘ফিডার সিস্টেম’। শনিবার ‘টক টু মেয়র’ কর্মসূচিতে বেহালা পশ্চিম পুটিয়ারির বাসিন্দা শিশির রায়ের এক প্রশ্নের জবাবে মেট্রোর সঙ্গে সরকারি বাস পরিষেবা জুড়ে দেওয়ার কথা জানিয়েছেন কলকাতার মহানাগরিক, পরিবহণমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।মহানগরের উত্তর থেকে দক্ষিণে এখন পুরনো মেট্রো পরিষেবা চলছে। আবার শীঘ্রই পূর্ব থেকে পশ্চিমেও মেট্রো চলতে শুরু করবে বছরখানেক বাদে। পরিবহণ মন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হয়, দু’টি মেট্রোর ক্ষেত্রেই কি একই পরিষেবা চালু করবে পরিবহণ দপ্তর? প্রশ্নের জবাবে ফিরহাদ জানান, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর ভাবনাকে অনুসরণ করে পরিবহণ দপ্তর একটা ‘কম্প্যাক্ট প্ল্যানিং’ করে রাখছে, যেমন যেমন রুট চালু হবে তেমনই পর পর ফিডার সার্ভিস চলবে। কারণ, রেলমন্ত্রী থাকার সময়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই কলকাতাকে ঘিরে ‘গ্রিন লাইন’ ট্রান্সপোর্ট মেট্রো পরিষেবার একাধিক নতুন রুট নির্মাণ শুরু করান। এখন তাঁর সরকারের পরিবহণ দপ্তর সেই ভাবনাকে গুরুত্ব দিয়ে ফিডার সার্ভিস চালু করবে।” পশ্চিম পুটিয়ারির প্রবীণ নাগরিক শিশিরবাবু এদিন তাঁর বাড়ি থেকে মেট্রো যাওয়ার জন্য অটো বা বাস সার্ভিসের দাবি জানান। মেয়রকে স্মরণ করিয়ে দেন, পরিবহণমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর ফিডার সার্ভিস চালুর প্রস্তাবও।কলকাতার জনবসতি বৃদ্ধি পাওয়ায় শহরতলির বারাসত, মধ্যমগ্রাম থেকে বারুইপুর, জোকা, আমতলা পর্যন্ত শহরতলির জনপদ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। মেট্রো চেপে শহরে এসে চাকরি করে ফের পরিবেশবান্ধব গ্রিন লাইনেই ঘরে ফিরবে। আপাতত গড়িয়া বা টালিগঞ্জ এবং উত্তর নোয়াপাড়া থেকে ফিডার সার্ভিস চলবে। স্বয়ং ফিরহাদ জানান, ‘‘মেট্রো স্টেশনগুলিতে আমরা ফিডার সার্ভিস দেব। যাত্রীরা বাসে করে এসে মেট্রো স্টেশনে নামবেন। আবার বাড়ি ফেরার জন্যও একই বাসের ব্যবস্থা থাকবে। মুম্বইয়ে এমন বাস সার্ভিস আছে। তাই সেখানে লোকাল ট্রেনে করে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে যাওয়া যায়। মূলত মেট্রো যাত্রীদের জন্য এমন ফিডার সার্ভিস শুরু হলেও অন্য রুটের পরিবহণেও সুবিধা পাওয়া যাবে।’’ আমজনতার জন্য কলকাতাকে ঘিরে দক্ষিণবঙ্গের যানবাহন পরিষেবার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাও এদিন কার্যত ব্যাখ্যা করেন পরিবহণমন্ত্রী।তাঁর দাবি, ‘‘কাজের সূত্রে প্রতিদিনই বহু মানুষ কলকাতায় আসেন। কলকাতার পরিধিও দিন দিন বাড়ছে। উত্তরে বারাসত পর্যন্ত এর পরিধি বেড়েছে। দক্ষিণে বানতলা ছাড়িয়ে যাবে। তাই দূষণহীন মেট্রো রেলই হয়ে উঠছে প্রকৃত যোগাযোগের মাধ্যম।’’ মহানগরকে যানজটমুক্ত করতে সরকারি ভাবনার কথা জানিয়ে পরিবহণমন্ত্রী বলেন, ‘‘কলকাতায় মাত্র সাত শতাংশ রাস্তা আছে। যেভাবে গাড়ি বাড়ছে, তাতে আগামী দিনে যানজট বাড়বে এটাই স্বাভাবিক। যানজট যাতে কম হয় তার জন্য আমরা একাধিক উড়ালপুল করেছি। তবুও শহরের গতি বাড়াতে বিকল্প ভাবতে হবে। আর সেই ভাবনা থেকেই ফিডার পরিষেবা দেওয়া হবে।’’উত্তর শহরতলির নয়া পরিষেবার তথ্য উল্লেখ করে পরিবহণমন্ত্রী বলেন, “বারাকপুর থেকে নির্দিষ্ট সময় পর পর পরিবেশবান্ধব বাস দিয়ে ‘ফিডার’ সার্ভিস থাকবে। কামারহাটির ভিতরের এলাকা দিয়ে ‘ফিডার’ সার্ভিস থাকবে দক্ষিণেশ্বর পর্যন্ত। সেই রকম মেট্রো রেল জুড়ে ‘ফিডার’ সার্ভিস থাকবে। বাস বা অটো মারফত এই পরিষেবা থাকেব।” নিজের কেন্দ্রের উদাহরণ দিয়ে ফিরহাদ বলেন, ‘‘আমি থাকি চেতলায়। আমার কাছাকাছি মেট্রো স্টেশন কালীঘাট মেট্রো। তাই চেতলা থেকে ফিডার পরিষেবা পেতে হবে।’’