লোকায়ত জীবনের মর্মগাথা – “বাঙালি মুসলমানের লৌকিক জীবন”

নিজস্ব সংবাদদাতা : সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে মইনুল হাসান সম্পাদিত গ্রন্থ “বাঙালি মুসলমানের লৌকিক জীবন।” বিগত কয়েক দশক ধরে শ্রী হাসান ইসলাম ধর্ম ও মুসলমান সমাজের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক জীবনকে আধার করে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ রচনা করেছেন যা ইতিপূর্বেই গুণীজনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে এবং এ বিষয়ে তাঁর পাণ্ডিত্য আন্তর্জাতিক স্তরে স্বীকৃত। এই গ্রন্থটিও সেই ধারাবাহিকতার ফসল। কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ উপাচার্য অধ্যাপক গৌতম পালকে বইটি উপহার হিসেবে তার হাতে তুলে দেন মইনুল হাসান।

    ধর্মীয় অনুশাসনকে একপাশে সরিয়ে রেখে বাঙালি মুসলমান সমাজ আপন লৌকিক সংস্কৃতিকে নির্মান করেছে গানে-গল্পে নানা-প্রকার বিচিত্র আচার অনুষ্ঠানে সক্রিয় অংশগ্রহণে। তাদের পীর-দরবেশের মাজারে মাথা ঠোকে, সিরনি চড়ায় ভিন্ন-ধর্মের নারী- পুরুষও। এ ভাবেই সহজের পথে এ পারের হিন্দু-মুসলমানের লোকায়ত বাঙালি সমাজ চির স্পন্দমান। সুলিখিত ভূমিকায় মইনুল লিখছেন – “… তাই যখন খবর পাওয়া যায় মুসলমানের ফেলে যাওয়া মসজিদ রক্ষা ও পরিচর্যা করছে পূর্ববঙ্গ থেকে আসা হিন্দু পরিবার বংশপরম্পরায় তখন লৌকিকতার জয়গান গাওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না।” এই লোকায়নের হাত ধরেই ধর্মীয় পরিচয় অপেক্ষা বড় হয়ে ওঠে তার বাঙালি পরিচয়, যার ” মনের দরজা খুলে রেখেছে বাউল।”
    এই বই-এ স্থান পেয়েছে বাঙালি মুসলমান সমাজের নৃ-তত্ত্ব, লোকসংস্কৃতি, উৎসব, বাউল-ফকির, বিয়ের গান, ছড়া-প্রবাদ, ব্রতাচার এমনকি পঞ্জিকার কথাও, কুড়িটি সুনির্বাচিত প্রবন্ধে। বাঙালি সমাজকে গভীর ভাবে জানতে আগ্রহী ভাবুকের অবশ্যই সংগ্রহে রাখতে হবে এই বই।
    বইটির প্রচ্ছদ করেছেন দেবাশীস সাহা, প্রকাশক রূপালী। বইটি তিনি উৎসর্গ করেছেন আলিমুজ্জমান, এমদাদুল হক নুর ও ‘উদার আকাশ’ পত্রিকার তরুণ সম্পাদক ফারুক আহমেদকে।