লক ডাউন সচেতন করতে গিয়ে আক্রান্ত সিভিক ভলেন্টিয়ার

নতুন গতি ,মালদা :২৫ জুলাই নজরদারি চালাতে গিয়ে আক্রান্ত হলেন এক সিভিক ভলেন্টিয়ার। ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়া হলো ইংরেজবাজার থানার অভিযানকারী অফিসারকে। আর তারপরেই রণক্ষেত্রের চেহারা নেই মালদা শহরের বালুচর এলাকা। লাঠিপেটা করে অভিযুক্তকে গাড়িতে তুলতে বাধ্য হয় ইংরেজবাজার থানার পুলিশ। এই পরিস্থিতিতে অভিযুক্ত পরিবারের লোকেরা পুলিশের কাজে বাধা সৃষ্টি করেছে বলে অভিযোগ ।

    শনিবার দুপুরে এই ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়েছে মালদা শহরের বালুচর এলাকায় । করোনা মোকাবিলায় পরিস্থিতির মধ্যে সরকারি কাজে বাধা, পুলিশ কর্মীদের হেনস্থা করার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ।  পাশাপাশি এদিন গোটা জেলার বিভিন্ন থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ প্রায় আড়াইশো জনকে আটক করেছে। বিশেষ করে মালদা শহরের বিভিন্ন এলাকায় লকডাউন অমান্যকারীদের বাগে আনতে পুলিশকে ব্যাপক লাঠিচার্জ করতে হয় বলে অভিযোগ। রাজ্য সরকারের লকডাউনের নির্দেশের পরেও মালদা শহরের বহু এলাকায় ঠেলাগাড়ি করে ফল , সবজি বিক্রেতাদের লাঠিপেটা করতে বাধ্য হয় পুলিশ। এমনকি অবাঞ্চিত রাস্তা দিয়ে চলাচকারী মানুষদেরও ধরপাকড় করে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ।

    এদিন দুপুরে উল্লেখযোগ্য ঘটনার মধ্যে মালদা শহরের বালুচর এলাকায় জমায়েত ঠেকাতে গিয়ে এক সিভিক ভলেন্টিয়ারকে আক্রান্ত হতে হয়। রীতিমতো ওই সিভিক ভলেন্টিয়ারের জামার কলার হিচরে খানিকটা এলাকা নিয়ে যায় অভিযুক্ত রিন্টু সাহা নামে এক ব্যক্তি। এরপরই পুলিশের অভিযানকারী কর্তারা ছুটে আসলে তাদের সঙ্গে ওই ব্যক্তি ও তার পরিবারের ধাক্কাধাক্কি হয়। এমনকি পুলিশের এক অফিসারকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এরপরই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে অভিযানকারী পুলিশকর্তারা। রীতিমত বাড়ির সামনে থেকে লাঠিপেটা করে মারতে মারতে ওই অভিযুক্ত ব্যক্তিকে পুলিশের প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়। সরকারি কাজে বাধা এবং পুলিশকে হেনস্তা করার অভিযোগে ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ।

    শনিবার লকডাউন সফল করতেই সকাল থেকেই মালদা শহরসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান শুরু করেছিল পুলিশ।  কোথাও ঠেলাগাড়িতে ফল, সবজি বিক্রেতাদের লকডাউন অমান্য করায় আটক করা হয়। আবার কোথাও অবাঞ্চিত ভাবে রাস্তায় মোটর বাইক নিয়ে চলাচলকারীদের আটক করা হয়। এদিন যেভাবে পুলিশ কড়া হাতে লাঠি নিয়ে ময়দানে নেমে লকডাউন পরিস্থিতি কার্যত সফল করতে নেমেছিলেন, তার প্রশংসা করেছে বিভিন্ন মহল । এমনকি পুলিশের কাজে বাধা এবং পুলিশকে নিগৃহীত করা নিয়েও বিভিন্ন মহলে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

    মালদা শহরের রথবাড়ি , রবীন্দ্রভবন , রবীন্দ্র এভেনিউনিউ , কেজে সান্যাল রোড, নেতাজি সুভাষ রোড, স্টেশন রড সহ বিভিন্ন এলাকায় বেশ কিছু দোকান খোলা ছিল । সেখানে গিয়েও পুলিশ লাঠিপেটা করে ওইসব দোকানিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেই। বন্ধ করে দেওয়া হয় বাজারহাট ও বিভিন্ন দোকান। যদিও এদিন সকাল থেকেই মালদার অধিকাংশ এলাকায় বিশাল পুলিশবাহিনী নিয়ে লকডাউন কড়াকড়ি করতেই নজরদারি চালায় পুলিশ।

    অভিযানকারী পুলিশের সাফকথা, রাজ্য সরকারের নির্দেশে লকডাউন পরিস্থিতি তদারকিতেই সর্বত্রই অভিযান চালানো হয়েছে। অবাঞ্ছিত ভাবে আড্ডা, রাস্তায় ঘোরাফেরা মানুষদের ধরপাকড় করা হয়েছে । এই কাজ করতে গিয়ে শহরের বালুচর এলাকায় এক পুলিশ কর্মী ও অফিসার নিগৃহীত হয়েছেন। এই ঘটনায় এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করার পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ দায়ের হয়েছে।

    পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া জানিয়েছেন,  শনিবার লকডাউনের মধ্যে বিভিন্ন থানার পুলিশ তাদের এলাকায় কড়া নজরদারি চালিয়েছে। জেলায় মোট আড়াইশো জনকে আটক করা হয়েছে । একজনকে মালদা শহরের বালুচর এলাকা থেকে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার এবং পুলিশকে হেনস্তা করার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুধুমাত্র মালদা শহরে ১০০ জনেরও বেশি মানুষকে আটক করা হয়েছ । করোণা মোকাবিলায় লকডাউন সফল করতে পুলিশ সব রকম ভাবে প্রস্তুত রয়েছে । কড়াকড়ি ভাবে বিভিন্ন এলাকায় নজরদারি চালানো হচ্ছে।

    ছবি ———- মালদা শহরের বালুচর এলাকায় লকডাউন অমান্যকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি।