মাধ্যমিকে রাজ্যে পঞ্চম স্থানাধিকারী সামিয়া ইয়াসমিন ডাক্তার হতে চাই

লু তুব আলি : মাধ্যমিকে রাজ্যে পঞ্চম স্থান পাওয়া সামিয়া ইয়াসমিন ডাক্তার হতে চাই। ২০২২ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষায় পঞ্চম স্থান অধিকার করেছেন বর্ধমান বিদ্যার্থী গার্লস হাই স্কুলের ছাত্রী সামিয়া ইয়াসমিন। সামিয়া ইয়াসমিনের প্রাপ্ত নাম্বার ৬৮৯। ফল প্রকাশ হওয়ার পর শুক্রবার জেলা শিক্ষা দপ্তর থেকে সামিয়ার বাড়িতে গিয়ে সম্বর্ধিত করা হয়। বর্ধমান জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান তথা মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য ও শিক্ষক নেতা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, হাজী মোহাম্মদ মহসীন ফাউন্ডেশন এর সম্পাদক শেখ মনোয়ার হোসেন সামিয়া ইয়াসমিনকে সম্বর্ধিত করেন। সামিয়া ভৌত বিজ্ঞান ও গণিত দুটি বিষয়েই ১০০ করে পেয়েছে। বাংলাতে ৯৯, ইংরেজিতে ৯৮, জীবন বিজ্ঞানে ৯৯, ইতিহাসে ৯৫ এবং ভূগোলে ৯৮ পেয়েছে। সামিয়া বর্ধমান শহরের বড় বাজারের যে এলাকাটিতে থাকে সেখানে শিক্ষার খুব একটা ভালো পরিবেশ ছিল না। দারিদ্র ও পার্শ্ববর্তী এলাকার প্রতিকূল পরিস্থিতিকে উপেক্ষা করে সকলের নজর কেড়েছে। সামিয়া ইয়াসমিন এই প্রতিবেদককে জানায়, একাদশ শ্রেণিতে সে পিওর সাইন্স নিয়ে পড়াশোনা করতে চাই। ভবিষ্যতে তার ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছা। সামিয়া ছোটবেলা থেকেই খুবই সহানুভূতিশীল। সে নিজে দারিদ্রসীমার নিচে বসবাস করেও এই শ্রেণির লোকদের নিয়ে সে সদা চিন্তিত। ভবিষ্যতে সে ডাক্তার হয়ে এই সমস্ত মানুষদের সেবা করতে চায়। উল্লেখ্য, সামিয়া বিদ্যালয়ের কন্যাশ্রী ক্লাবের একজন সক্রিয় সদস্য। বাল্যবিবাহ, কুসংস্কার বিরোধী আন্দোলন ও জনসচেতনতা প্রসারে সে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকে। সামিয়ার বাবা মোঃ গোলাম ফারুফ। বি সি রোডে তার একটি বইখাতার ছোট দোকান আছে। এখান থেকে সামান্য রোজগার করে মেয়ের পড়াশোনা চালাতে হিমশিম খেতেন তিনি। সামিয়ার মা আয়েশা সুলতানা গৃহবধূ। পলিটিক্যাল সাইন্সে গ্র্যাজুয়েশন করে এম এ ভর্তি হয়েও তিনি তা সম্পূর্ণ করতে পারেননি বলে আক্ষেপ করেন। আয়েশা সুলতানা বলেন, মেয়ে কারও কষ্ট দেখলে চুপ করে থাকতে পারে না। এগিয়ে গিয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। সামিয়া এখনও মোবাইল ফোন ব্যবহার করে না। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা তথা সামিয়া ইয়াসমিনের এলাকার কাউন্সিলর পামেলা চট্টোপাধ্যায় বলেন, সামিয়া খুবই ভালো ছাত্রী। আমাদের বিশ্বাস ছিল সে ভালো ফল করবেই। সামিয়া যাতে ফ্রিতে কোচিং নিতে পারে সে ব্যাপারে প্রধান শিক্ষিকা তিনি সব রকমের ব্যবস্থা করবেন বলে জানান।