|
---|
কলকাতা: কলকাতা পুলিশের গুন্ডাদমন শাখা এবং রিজেন্ট পার্ক থানার পুলিশের যৌথ অভিযানে ফলতা থেকে গ্রেপ্তার করা হলো রিজেন্ট পার্কে খুনের ঘটনার মূল অভিযুক্ত।
আসল ঘটনা
বেশ কয়েক বছর আগে উত্তরপ্রদেশ থেকে কলকাতায় আসেন বছর পঁয়তাল্লিশের দিলীপ চৌহান। নতুনপল্লির অটো স্ট্যান্ড থেকে কিছুটা দূরে এক আত্মীয়র বাড়িতে থাকতেন তিনি। বাদাম বিক্রির টাকা পাঠাতেন বাড়িতে। অভিযুক্ত সুজিত মল্লিকও পেশায় বাদাম বিক্রেতা। সে পাশেই একটি বাড়িতে পরিবার নিয়ে থাকত। শুক্রবার সকাল থেকেই দোলের উৎসবে মেতে উঠেছিল পাড়াটি। একে অপরকে রং লাগানোর সঙ্গে সঙ্গে চলছিল দেদার মদ্যপান। এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা পুলিশকে জানান, দিলীপ প্রতিবেশী সুজিতের স্ত্রীকে রং মাখান। প্রথমে ওই গৃহবধূ আপত্তি করেছিলেন। যদিও দোলের দিন বলে কিছু বলতে পারেননি। কিন্তু স্বামী সুজিতের বিষয়টি একেবারেই পছন্দ হয়নি। তাই দুই প্রতিবেশীর মধ্যে গোলমাল বাধে। বচসা ও ধাক্কাধাক্কি হয়। এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যস্থতায় তখনকার মতো বিষয়টি মিটে যায়।
দুপুরে ফের চলতে থাকে মদ্যপান। আর তখনই ফিরে আসে গৃহবধূকে রং লাগানোর প্রসঙ্গ। ফের দুই প্রতিবেশী বন্ধুর মধ্যে শুরু হয় বচসা। এরপরই অভিযুক্ত বলতে থাকে, তার কাছে আগ্নেয়াস্ত্র আছে। বাড়াবাড়ি করলে গুলি চালিয়ে খুন করে দেবে। তার এই দাবি ফুৎকারে উড়িয়ে দেন দিলীপ। বলেন, ক্ষমতা থাকলে তা করে দেখাতে। এভাবেই কয়েক মিনিট ধরে চলে চ্যালেঞ্জ ও পালটা চ্যালেঞ্জের পালা। তারপরই ঘরের ভিতর থেকে অভিযুক্ত নিয়ে আসে আগ্নেয়াস্ত্র। তাঁর শরীরের দিকে তাক করে। দিলীপ বিশ্বাস করতে পারেনি যে ‘বন্ধু’ তাঁর ক্ষতি করতে পারে। কাছেই থাকা অন্য সঙ্গীরা সুজিতকে বাধা দিতে যান। কিন্তু তার আগেই গুলি চালিয়ে দেয়। তলপেটে গুলি লাগায় আর্তনাদ করে পড়ে যান দিলীপ। গুলির শব্দ পেয়ে সবাই বেরিয়ে আসেন। শুরু হয় দৌড়াদৌড়ি, চেঁচামেচি, কান্নাকাটি। এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে সুজিত পালিয়ে যায়। কয়েকজন আত্মীয়ের বাড়িতেও যায় সে। এরপর ফলতায় গা ঢাকা দেয়। গোপন সূত্রে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে কলকাতা পুলিশের গুন্ডাদমন শাখা এবং রিজেন্ট পার্ক থানার পুলিশের যৌথ অভিযানে অভিযুক্ত সুজিত মল্লিককে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে এখনও খুনে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রটি উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। ধৃতকে জেরা করে সে সংক্রান্ত তথ্য পাওয়া যাবে বলেই আশা তদন্তকারীদের।