বসত বাড়ি হারানোর ভয়ে বাঁশি বাজানোর শিক্ষা

নিজস্ব প্রতিবেদক, নতুন গতি, নদীয়া: বসত বাড়ি হারানোর ভয়ে আতঙ্কে দিন কাটছে অসহায় বাঁশিওয়ালা। নদিয়ার হাঁসখালীর বাঁশিওয়ালা নামে খ্যাত বংশীধারী নারদ বিশ্বাস। বিখ্যাত এই বাঁশিওয়ালা বসবাস করে ভারত বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী চিত্রশালি এলাকার হাজারী নগরে বসবাস করেন দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে। গরীব অসহায় পরিবারের একমাত্র সন্তান নারদ বাবু । ছোট বেলায় বাবা মারা যাওযাই মাকে নিয়ে চিন্তায় ট্রেন তিনি। সংসার চালাতে বাবার পথ অনুসরণ করে নারদ বাবু। বাবাও ভালো বাঁশী বাজাতেন,তৈরি করতেন বিঞীও করতেন । বাবার কাছে অনেকেই আসতেন বাঁশী বাজানো হাতে করে শিখতে প্রতিদিন নানা ধরনের বাঁশী বানিয়ে অর্থ উপার্জন করতেন।বাবার মৃত্যুর পর নারদ বাবু সেই পথ অনুসরণ করেন আর এই বাঁশীর জন্য যে বাশ লাগে যে বাঁশ দিয়ে তৈরি হয় বাসি আমাদের রাজ্যে পাওয়া যায় না। ত্রিপুরার পাহার থেকে নিয়ে আসতে হয়। অল্প দিনের মধ্যেই নারদ বাবুর বাঁশীর সুরে মুগ্ধ হয়ে অনেকেই বাঁশী বাজানো শিখতে শুরু করে। নারদ বাবুর বাঁশীর সুখ্যাতি জেলা থেকে রাজ্য এমনকি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে। নিজের কোনো সম্পত্তি নেই তিনি বসবাস করেন পিডব্লিউডি রাস্তার ধারে শিল্পী নারদ বিশ্বাসের ছোট্ট একটি ভাঙাচোরা টালির ঘরে বসবাস করে। আমাদের রাজ্যের বাইরে থেকে ত্রিপুরা থেকে বাঁশ এনে বাঁশি তৈরি করে বিক্রয় করেন কলকাতায়। কিন্তু দীর্ঘ লকডাউনের ফলে কলকাতায় যেতে পারছেন না বাঁশি বিক্রয় করতে। নিজের তৈরি করা প্রচুর বাঁশি জমে গেছে বাড়িতে বিক্রয়। লকডাউনের মধ্যে মানুষ কর্মস্থান হারিয়েছে অনেকে।

    এদিকে বৃদ্ধা মা আশি উর্দ্ধে বয়স তাঁকে নিয়ে খুবই চিন্তিত নারদ বাবু। বয়সের ভারে তিনিও ক্লান্ত সরকারি ভাবে ১০০০ টাকা করে ভাতা পান তিনি ।অভাবের সংসার,পেটতো মানেনা তাই শরীর সাঁই না দিলেও এখন বাঁশী নিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়াচ্ছেন কিন্তু ক্রেতার অভাবে বাঁশী বিক্রয় হচ্ছে না।ফলে অসহায়ের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন বাঁশিওয়ালা নারদ বিশ্বাস।তারই অসহায়তার সুযোগ নিয়ে কেউ কেউ বাড়ী থেকে তুলে দেবার জন্য ভয়ও দেখাচ্ছেন বলে অভিযোগ নারদ বাবুর। তাঁকে ওখান থেকে তুলে দেওয়া হতে পারে এই ভয়ে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন বৃদ্ধা বাঁশিওয়ালা।এত সত্বেও নারদ বাবু প্রশাসনকে জানাতেভয় পাচ্ছে।কারন যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাবে তারা যে ধনী সেই আতঙ্কে ই কুরে কুরে খাচ্ছে নারদ বাবু কে। রাজ্য সরকার শিল্পীদের যে ভাতা দেয় সেটাই দিয়ে কিনার আপাতত কোনো রকমে জীবনযাপন করছে।