|
---|
আতাউল্লাহ আহমেদ,নতুনগতি:
যদি আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে ও ডায়াবেটিস থাকে তাহলে প্রায়ই ফোঁড়া হতে পারে। বেশিরভাগ ফোড়াই অক্ষতিকর এবং কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ভালো হয়ে যায়। যদি ফোঁড়াতে তীব্র ব্যথা হয় ও না ফাটলে কিন্তু জ্বর চলে আসে। তাহলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। কিছু সহজলভ্য উপাদানের মাধ্যমে ফোঁড়ার ব্যথা ও অস্বস্তি কমিয়ে নিরাময় করা যায়। এই উপাদান গুলো ব্যবহারের মাধ্যমে ফোঁড়া নরম হয়ে ফেটে ব্যাকটেরিয়া বাহির হয়ে যায় ইনফেকশন কমায়।
ত্বকের উপর ছোট, শক্ত ও যন্ত্রণাদায়ক লালা পিন্ড যখন আস্তে আস্তে বড় ও নরম হতে থাকে যার মুখটি হলুদাভ-সাদা বর্ণ ধারণ করে এবং এর মধ্যে পুঁজ সৃষ্টি হয়ে ব্যথা বাড়তে থাকে তখন তাকে ফোঁড়া বা বিষফোঁড়া বলা হয়। ত্বকের চুলের গোঁড়ায় স্টেফাইলোকক্কাস অরিয়াস ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের কারণেই ফোঁড়া হয়ে থাকে। সাধারণত মুখ, ঘাড়, বগল, কাঁধ ও নিতম্বে ফোঁড়া হয়ে থাকে। চোখের পাতায় যে ফোঁড়া হয় তাকে আজনি বা অজন বা অজনিকা বলে।
যখন অনেক গুলো ফোঁড়া একসাথে হয় তখন তাকে carbuncles বলে। পুষ্টির ঘাটতি ও অপরিছন্নতা এবং কোন রাসায়নিক দ্রবের সংস্পর্শের কারণেই ফোঁড়া হয়ে থাকে। যদি আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে ও ডায়াবেটিস থাকে তাহলে প্রায়ই ফোঁড়া হতে পারে। বেশিরভাগ ফোড়াই অক্ষতিকর এবং কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ভালো হয়ে যায়। যদি ফোঁড়াতে তীব্র ব্যথা হয় ও না ফাটে এবং জ্বর আসে তাহলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
কিছু সহজলভ্য উপাদানের মাধ্যমে ফোঁড়ার ব্যথা ও অস্বস্তি কমিয়ে নিরাময় করা যায়। এই উপাদান গুলো ব্যবহারের মাধ্যমে ফোঁড়া নরম হয়ে ফেটে ব্যাকটেরিয়া বাহির হয়ে যায় ও ইনফেকশন কমায়। ফোঁড়ার নিরাময়ে ব্যবহৃত উপাদান গুলো হচ্ছে :
১। নিম:
অ্যান্টিসেপ্টিক, অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল ও অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান আছে বিধায় নিম ত্বকের সংক্রমণ রোধ করতে পারে। তাই ফোঁড়া নিরাময়েও নিম কার্যকরী ভূমিকা রাখে। একমুঠো নিম পাতা পিষে পেস্ট তৈরি করে ফোঁড়ার উপর লাগান অথবা ১/২ গ্লাস পানিতে একমুঠো নিমপাতা দিয়ে সিদ্ধ করেতে থাকুন যতক্ষণ না পানিটি অর্ধেক পরিমাণ হয়ে আসে। এবার মিশ্রণটি ঠান্ডা হতে দিন। উষ্ণ গরম থাকা অবস্থায় আক্রান্ত স্থানটি এই মিশ্রণটি দিয়ে ধুয়ে নিন। এভাবে দিনে ৩-৪ বার করুন।
২। কালো জিরা:
কালোজিরা ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি ফোঁড়া নিরাময়েও সাহায্য করে। কালোজিরার ঔষধি গুনাগুণ ফোঁড়ার ব্যথা কমাতে সক্ষম। কিছু কালোজিরা পিষে ভালোভাবে পেস্ট তৈরি করে নিন। ফোঁড়ার উপরে কালোজিরার পেস্ট লাগান। কালোজিরার তেল ফোঁড়াতে ব্যবহার করতে পারেন। ঠান্ডা অথবা গরম পানীয়ের সাথে আধা চা চামচ কালোজিরার তেল মিশিয়ে পান করুন। বেশ কিছুদিন দিনে দুইবার এই পানীয়টি পান করুন।
৩। হলুদ:
ফোঁড়ার নিরাময়ে হলুদ সবচেয়ে বিশ্বস্ত প্রতিকার। কারণ এতে অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি, রক্ত বিশুদ্ধকারী ও নিরাময়কারী উপাদান আছে যা ফোঁড়াকে নিজে নিজেই গলে যেতে সাহায্য করে। অভ্যন্তরীণ ভাবে হলুদ গ্রহণ করলে তিন দিনের মধ্যে ফোঁড়া ভালো হয়ে যায়। ভালো ফল পাওয়ার জন্য গরম পানিতে এক চামচ হলুদ মিশিয়ে দিনে তিনবার পান করুন। যদি আপনি এটা সেবন করতে না পারেন তাহলে হলুদ ও পানি ভালোভাবে পিষে পেস্ট তৈরি করুন। তারপর মিশ্রণটি দিনে তিনবার ফোঁড়ার উপর লাগান।
৪। গরম ভাপ:
গরম ভাপ ফোঁড়াকে নরম হয়ে ফেটে যেতে সাহায্য করে। গরম পানিতে লবণ যোগ করলে এর কার্যকারিতা আরো দ্রুত হয়। এতে ব্যথা কমে ও পুঁজ বাহির হয়ে যায়। ফোঁড়া ও এর চারপাশের ত্বক হাল্কা সাবান ও উষ্ণ গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। উষ্ণ গরম পানিতে লবণ মিশান। পরিষ্কার নরম কাপড় এই পানিতে চুবিয়ে কাপড়টি নিংড়ে অতিরিক্ত পানি ঝড়িয়ে নিন। এবার ফোঁড়ার উপরে এই গরম কাপড়টি রেখে দিন ১৫-২০ মিনিট। এভাবে দিনে ৩-৪ বার গরম ভাপ দিন। ভাপ দেয়ার পর কাপড়টি ভালো ভাবে পরিষ্কার করে ধুয়ে নিবেন। সম্ভব হলে প্রতিবার নতুন করে কাপড় নিন এবং ব্যবহৃত কাপড়টি ফেলে দিন।
এছাড়াও আদা-চা এর ভাপ নেয়া, ইপসম লবণ, টি ট্রি অয়েল, পাউরুটি উষ্ণ গরম দুধে বা পানিতে ভিজিয়ে ফোঁড়ার উপর লাগানো যায়, আলু, রসুন ও পেঁয়াজ ও ফোঁড়ার নিরাময়ে ব্যবহার করা যায়।