নিজের পয়সায় টিকিট কেটে বাড়ি ফিরছে পরিযায়ী শ্রমিকরা সব প্রতিশ্রুতি আশার বাণী এক নিদারুণ রসিকতা তাদের কাছে

মোহাম্মদ মারুফ কলকাতা : দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আটকে থাকা পরিযায়ী শ্রমিক দের ঘোরে ফেরাতে শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন চালাতে শুরু করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। লকডাউন এর প্রভাবে রোজগার ও সহায় সম্বলহীন মানুষগুলোর থেকেও এই বাবদ ভাড়া নেওয়া হবে বলে জানায় রেল মন্ত্রক। এতে বিরোধী দলগুলো সরকারের তীব্র সমালোচনা করে। শ্রীমতী সোনিয়া গান্ধী জানিয়ে দেন সমস্ত শ্রমিকের ঘরে ফেরার ভাড়ার দায়িত্ব নেবে জাতীয় কংগ্রেস। নানাবিধ সমালোচনার মুখে পড়ে সরকার জানায় শ্রমিকের থেকে কোন ভাড়া নেওয়া হবে না। ভাড়ার ৮৫ শতাংশ ভর্তুকি দেবে ভারতীয় রেল, বাকি ১৫ শতাংশ বহন করবে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার।

    কিন্তু কে জানত এই ভয়ঙ্কর দুর্যোগের সময়ে এই সব আশার বাণী এক নিদারুণ রসিকতা হয়ে দেখা দেবে শ্রমিকদের কাছে। সোমবার দুটি বিশেষ ট্রেনে উত্তরপ্রদেশে ফিরেছেন প্রায় ৪২০০ জন শ্রমিক। এর মধ্যে গুজরাট থেকে আসা কিছু শ্রমিক দাবি করেন টিকিট বাবদ তাদের কাছ থেকে ৬৫৫ টাকা নেওয়া হয়েছে। যে সামান্য টাকা তারা বহু কষ্টে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন, তা শেষ হয়ে গেছে ট্রেনের ভাড়া দিতে। এই মুহূর্তে তারা নিঃস্ব, কপর্দকশূন্য। মহারাষ্ট্র থেকে আসা আরেকটি ট্রেন এর শ্রমিকেরা দাবি করেন তাদের থেকে ৬৯০ টাকা নেওয়া হয়েছে ট্রেন ভাড়া বাবদ। তারা টিকিটের প্রতিলিপি ও দেখান সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধি দের।বহু শ্রমিকের কাছে এটাই ছিল সর্বসাকুল্যে সঞ্চয়। অনেকের কাছে টাকা না থাকায় তারা ধার করেও ভাড়া মিটিয়েছেন বলে জানা গেছে।

    লকডাউনের প্রভাবে প্রায় ৪০ দিন আটকে পড়া রোজগারহীন, নিঃস্ব, ঘরে ফিরতে উদগ্রীব শ্রমিকদের সাথে এই নিদারুণ রসিকতার কোন প্রয়োজন ছিল ভারতীয় রেল তথা কেন্দ্রীয় সরকারের? ধনবান এলিট শ্রেণীর জন্য বিনামূল্যে বিমানে ফেরার ব্যবস্থা হয়ে যায়,আর হতদরিদ্র শ্রমিকদের ভাড়া গুনতে হয় তাদের শেষ সঞ্চয় টুকু দিয়ে।হায় রে আমার ভারতবর্ষ।