অনিন্দ্যসুন্দরী ‘হুর’ দের বর্ণনা

ফিরোজ জামান: সত্যের দিশারী পবিত্র কুরআনে ‘হুর ‘শব্দটি চার বার উল্লেখিত হয়েছে এবং বহু স্থানে এদের চরিত্র ও রূপ সৌন্দর্যের বৈশিষ্ট্যের বর্ণনা পরিলক্ষিত হয় | সুরা ওয়াকিয়ায় ২২ থেকে ২৪ সংখ্যক বাক্যে উল্লেখিত হয়েছে -“সুনয়না সুন্দরী হুরগণ থাকবে |যেন তাঁরা প্রচ্ছন্নমুক্তা বা লুক্কায়িত মুক্তোর ন্যায়| তাঁরা ( অর্থাৎ সৎকর্মশীলেরা) যে সব কৃতকর্ম করেছিল – এটা তাঁদেরই পুরষ্কার স্বরূপ|”সুরা রহমানের ৭০ থেকে ৭৩ সংখ্যক বাক্যে উল্লেখিত হয়েছে- “সেখানে(অর্থাৎ স্বর্গবাগিচায়) সচ্চরিত্রা পরমারূপসী হুরগণ থাকবে|সুতরাং তোমরা তোমাদের প্রভূর কোন্ সম্পদকে অস্বীকার করবে?সেই সুলোচনা সুন্দরীগণ পট মন্ডপসমূহের মধ্যে উপবিষ্ট থাকবে|”সুরা তুরের ২২ সংখ্যক বাক্যে উল্লেখিত হয়েছে- ” সারিবদ্ধ পালঙ্কে তারা হেলান দিয়ে বসবে আর তাদেরকে(প্রভূভীরুদেরকে) মিলায়ে দেবো ডাগর চোখা হুরদের সাথে|” সুরা দুখানে ৫১ থেকে ৫৪ সংখ্যক বাক্যে উল্লেখিত আছে- “নিশ্চয় প্রভূভীরুরা থাকবে নিরাপদ স্থানে, বাগ বাগিচায় ও ঝর্ণাধারার মধ্যে, তারা পরিধান করবে পাতলা ও পুরু রেশমীবস্ত্র এবং বসবে মুখোমুখি হয়ে, এরূপই ঘটবে আর তাদেরকে বিয়ে দেবো ডাগর নয়না হুরদের সাথে|”

    হুর শব্দের সমার্থক শব্দ রূপে কিন্নরী, গন্ধর্ব, অপ্সরা প্রভৃতি শব্দগুলি অন্যান্য গ্রন্থে পাওয়া যায়|
    হুরদের বৈশিষ্ট্য
    ১) পবিত্র সঙ্গিনীগণ: কুরআনের পরিভাষায় ‘আযওয়াজুম মুতাহহারাতুন’ বলা হয়|পবিত্রতার মধ্যে থাকবে, ভালোবাসার কাঙ্ক্ষিত হবে আর সৌন্দর্যের ছাচে ঢালা অপূর্ব কোমল রমনী হবে |রোগ শোক, ব্যাধি, মলমূত্র হবে না |
    ২)বিশেষ ছাচে গঠিত: কুরআনের পরিভাষায় ‘ইনশায়া’ বলা হয় |আল্লাহ তাদের(হুরদের)
    বিশেষ সুন্দর প্রেমের দৃষ্টান্ত হিসেবে দেহ অবয়ব সৃজন করেছেন |
    ৩)চিরকুমারী ও অবিবাহিত:কুরআনের পরিভাষায় ‘আবকারা’ বলা হয় | সৎকর্মশীলরা যখন চিরকালের স্বর্গবাগিচায় প্রবেশ করবে,তখন বিয়ে করবে, মুখোমুখি হয়ে আলাপ ভাব বিনিময় করবে ও তাঁরা প্রবেশ করে প্রথম স্পর্শ করবে |
    ৪)সোহাগিনী ও সমবয়স্কা:কুরআনের পরিভাষায় ‘উরুুুবান আতরাবা’ বলা হয় | ভালোবাসা পরশে সোহাগিনী ও বয়স চিরকিশোরী হয়ে থাকবে|
    ৫)নির্মীলিত নয়না: কুরআনের পরিভাষায় ‘কাসিরাতুত তারফি আইনা”|চোখের নয়ন খুব সুন্দর ও সৌন্দর্যময় পাঁপড়ি যুক্তা অপলকভাবে
    ভালোবাসার দৃষ্টিতে চেয়ে আনন্দ উচ্ছ্বাসে মেতে উঠবে|
    ৬)প্রচ্ছন্ন মুক্তা সদৃশ:কুরআনের পরিভাষায় “ললুুুয়োল মাকনুন” বলা হয় |দেহের রঙ ও সৌন্দর্য বৈশিষ্ট্যতা মুক্তোর উজ্জ্বলতায় ন্যায় |
    ৭)পদ্মরাগমণি ও প্রবাল: কুরআনের পরিভাষায় ‘ ইয়াকূত ওয়ামারজান’ বলা হয়| পদ্মমরাগমণি ও প্রবাল এ রঙ ও উজ্জ্বলতায়
    দেহের রূপ লাবণ্য বিকশিত হবে|
    ৮)সচ্চরিত্রাবান সুন্দরী :কুরআনের পরিভাষায় ‘খাইরাতুন হিসান’বল হয় |চরিত্রের সমস্ত নারীসুলভ উত্তম আদর্শিত গুণে গুণন্বিত হবে|
    ৯) সুরক্ষিত ডিম্ব সদৃশ:কুরআনের পরিভাষায় ‘বায়জায়িল মাকনুন’ বলা হয় |দেহের হাড় হাড্ডিসহ অঙ্গ প্রতঙ্গের অবস্থা দৃশ্যমান হবে
    ডিমের সদৃশ রূপ বলে পরিলক্ষিত হবে
    ১০)যুবতীবয়সের যৌবনযুক্তা: কুরআনের পরিভাষায় ‘কাওয়ায়িবা আতরাবা’ বলা হয়| কায়াবা শব্দ থেকে কাওয়ায়িবা শব্দ এসেছে |
    যার মূল আভিধানিক অর্থ হলো একাধিক উচ্চস্থান বিশিষ্টতা | আসলে কুরআনের যে শব্দচয়নের বৈশিষ্ট্য গভীর অনুভূতির বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে |দুটি উচুস্তন বিশিষ্ট যুবতীদের বুঝিয়েছেন |কাওয়ায়িবা মানে এমনই স্তনগুলি যা শিথিল ঢিলেঢালা নয়, শক্ত নমনীয় সৌন্দর্য বিশিষ্ট ছোট টিলা সদৃশ|

    On Tue 13 Aug, 2019, 10:15 PM Firoj Jaman, <[email protected]> wrote: