বীরভূমের রাজনগরে এক কোটি ষাট লক্ষ টাকায় বোখারী বাবার মাজার তৈরির কাজ শুরু

খান আরশাদ, রাজনগর: বীরভূমের রাজনগর ব্লকের অন্তর্গত গাইসারা গ্রামে বুধবার শুরু হল বোখারী বাবার মাজার তৈরির কাজ। বীরভূমের রাজনগর ব্লক এর গাইসারা গ্রামে পীর সৈয়দ মোহাম্মদ আলী বোখারী ও সৈয়দ আবুল হোসেন বোখারীর বংশের মাজার তৈরির কাজ শুরু হলো। এই উপলক্ষে বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলো এখানে। এই উপলক্ষে খানকাহে বোখারিয়াতে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে এই পীর সাহেবদের বংশের ঐতিহ্যের কথা তুলে ধরেন উপস্থিত বিভিন্ন আলেম উলামারা। এই ধর্মীয় মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন গদ্দীনশিন পীর সৈয়দ শাহ্‌ নুরুল হোসেন বোখারী ও তার সুযোগ্য পুত্র সৈয়দ শাহ্‌ সাইফুল হোসেন বোখারী। জানা যায় প্রায় চারশো বছর আগে রাশিয়ার বোখারা প্রদেশ থেকে সৈয়দ আহমেদ আঞ্জুম বোখারি পাকিস্তান হয়ে ভারতে আসেন এবং পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার অন্তর্গত হজরতপুর গ্রামে এসে নিজের আস্তানা গড়ে তোলেন। সেখানে বহু মানুষ তার মুরিদ অর্থাৎ শীষ্যত্ব লাভ করেন। আহমদ বোখারির বড় ছেলে এনায়েতুল্লাহ বোখারি বীরভূমের হজরতপুর গ্রামে এসে বসবাস শুরু করেন। মেজ ছেলে সৈয়দ আমির হোসেন বোখারী পুরুলিয়া এক জঙ্গলের মধ্যে গিয়ে তিনি ঈশ্বর উপাসনায় মগ্ন হয়ে পড়েন এবং এখন থেকে প্রায় সাড়ে তিনশো বছর আগে সৈয়দ আহমদ বোখারির ছোট ছেলে সৈয়দ মোহাম্মদ আলী শাহ্‌ বৈরাগ বোখারি বীরভূমের রাজনগরে জঙ্গল ঘেরা এক গ্রাম গাইসারাতে এসে নিজের আস্তানা গড়ে তোলেন। এই সুফি সাধকের কাছে এলাকার বহু মানুষ দীক্ষা লাভ করেন। তিনি নিজে নিঃসন্তান থাকায় তার ভাইপোকে এখানে এনে পীরত্ব প্রদান করেন। এরপর থেকে এই বংশের লোক এখানে থেকে যান এবং বর্তমানে এখানে গড়ে উঠেছে খানকাহে বোখারিয়া। এখানে এই বংশের বর্তমান পীর সৈয়দ শাহ নূরুল হোসেন বোখারী ও তার সুযোগ্য পুত্র সৈয়দ শাহ্‌ মহঃ সাইফুল হোসেন বোখারি তাদের শীষ্যদের সহযোগিতায় তৈরি করতে চলেছেন বোখারি বাবার মাজার শরীফ। প্রায় এক কোটি ষাট লক্ষ টাকা ব্যায়ে এই মাজার শরীফ তৈরি হতে চলেছে। বিহার, ঝাড়খন্ড, বীরভূম, বর্ধমান, বাঁকুড়া ও জলপাইগুড়ির প্রায় একশোটি গ্রামের মানুষ এখানের পীর সাহেবের কাছে এসে দীক্ষা গ্রহণ করেছেন। তারা এখানে নিয়মিত এসে তাদের বিভিন্ন সমস্যার কথা জানান এবং মানতও করে থাকেন। বুধবার গাইসারা গ্রামে সৈয়দ শাহ নুরুল হোসেন বুখারী ও তার পুত্র সৈয়দ শাহ্‌ মহঃ সাইফুল হোসেন বুখারী নিজের হাতে মাটি কেটে মাজার তৈরীর কাজ শুরু করলেন। এই উপলক্ষে এখানে উপস্থিত হোয়েছিলেন বেশ কয়েক হাজার ভক্ত মানুষ।