দিলীপের ডাকা বৈঠকে অনুপস্থিত মুকুল রায়

নতুন গতি নিউজ ডেস্ক: বিধানসভা ভোটে মুখ থুবড়ে পড়েছে দিলীপ ঘোষরা! আর এই অবস্থার পর থেকেই দলের মধ্যে বিদ্রোহ। দলের থেকে মুখ ফিরিয়েছেন একাধিক নেতা। শুধু তাই নয়, প্রকাশ্যে মমতাকে চিঠি দিয়ে অনেকেই তৃণমূলে ফিরতে চেয়েছেন। এই অবস্থায় আজ মঙ্গলবার দলের রাজ্য স্তরের নেতাদের নিয়ে বৈঠকে বসেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।

    অথচ সেই বৈঠকে অনুপস্থিত বিজেপির প্রথমসারির নেতা মুকুল রায়। নেই বিধাননগরের প্রাক্তন মেয়র সব্যসাচী দত্ত এবং রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ও। মুকুলের পুত্র শুভ্রাংশুও নেই ওই বৈঠকে।

    মুকুল-শুভ্রাংশুর না থাকা নিয়ে জল্পনা

    গত কয়েকদিন আগেই বিজেপির আত্মসমালোচনা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছিলেন মুকুল-পুত্র। এরপরে অভিষেকের সঙ্গে সাক্ষাৎ। শুধু তাই নয়, প্রকাশ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেকের প্রশংসা করা নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়। এমনকি তাঁর ভুলের খেসারত তাঁর মাকে দিতে হচ্ছে বলেও তাৎপর্যপূর্ণ বৈঠক করেন শুভ্রাংশু রায়। তবে তাঁর মায়ের সুস্থতার পরেই তৃণমূলে যাওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন তিনি। এমনটাই জানিয়েছেন তিনি। ফলে বিজেপি যে ছাড়ছেন শুভ্রাংশু তা কার্যত পরিষ্কার। তবে মুকুল রায় নিয়ে ধোঁয়াশা রয়ে গিয়েছে। গত কয়েক মাস আগে টুইট করে জানান, তিনি বিজেপিতেই আছেণ। কিন্তু তাঁর স্ত্রীকে দেখতে যাওয়া নিয়ে দিলীপ-মুকুল দন্দ প্রকাশ্যে চলে আসে।

    ভিড় এড়িয়ে যাচ্ছেন মুকুল!

    তবে এই বৈঠকে মুকুল রায়ের অনুপস্থিতি নিয়ে জোর বিতর্ক তৈরি হয়েছে। যদিও দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন, মুকুল রায় অসুস্থ। সদ্য করোনা মুক্ত হয়েছেন। শুধু তাই নয়, তাঁর পরিবারের সবথেকে কাছের মানুষ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আর সেই কারণে মুকুল রায় এই বৈঠকে আসতে পারেননি বলে খবর। যদিও গেরুয়াশিবিরের দাবি, দিলীপের ডাকা বৈঠকে উপস্থিত থাকার কথাই নয়। কারণ, তিনি রাজ্য কমিটির সদস্য নন। অনুপস্থিত রাজীবও রাজ্য কমিটির পদাধিকারী নন। কিন্তু তাঁকে দলের বিভিন্ন বৈঠকে ‘বিশেষ আমন্ত্রিত’ হিসেবে ডাকা হত। সব্যসাচী রাজ্য কমিটির সদস্য। কিন্তু তিনিও মঙ্গলবারের বৈঠকে আসেননি।

    বৈঠকের বিষয়ে জানতেন না নাকি মুকুল!

    তবে এক সংবাদমাধ্যমকে মুকুল রায় বৈঠক প্রসঙ্গে জানিয়েছেণ, কোন বৈঠক? আমাকে কেউ বৈঠকের ব্যাপারে জানায়নি। তাঁর এই মন্তব্য ঘিরে শুরু হয় জোর রাজনৈতিক চর্চা। শুধু তাই নয়, তাঁর এই মন্তব্য ঘিরে আরও জল্পনা বাড়ল। তাহকে কি এবার বিজেপি ছাড়ছেণ মুকুল রায়? যদিও ওই সংবাদমাধ্যমকে বৈঠকে না যাওয়া নিয়ে মুকুল জানিয়েছেন, আমি এ সবের মধ্যে নেইও। আমি এখন নিজের যন্ত্রণায় জ্বলছি” এসবের মধ্যে নেই বলতে কি বিজেপি দলের কথা বোঝালেন মুকুল? যদিও এই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন, সবাইকে সূচনা দেওয়া হয়েছিল। তবে সময় পেলে আসবেন বলে মুকুল রায় জানিয়েছিলেন বলে দাবি মুকুল রায়ের।

    ভোটের সময় থেকেই কার্যত নীরব মুকুল

    বিধানসভা ভোটের সময় থেকেই কার্যত নীরব মুকুল। কৃষ্ণনগর উত্তর কেন্দ্র থেকে জিতে বিধায়ক হয়েছেন বটে। কিন্তু জয়ের পরেও তিনি বিশেষ মুখ খোলেননি। কোনওক্রমে একদিন বিধানসভায় গিয়ে বিধায়ক পদে শপথ নিয়ে এসেছেন। সেখানেও তৃণমূলে একদা তাঁর সতীর্থ সুব্রত বক্সির সঙ্গে তাঁর কথোপকথন নিয়ে জল্পনা ছড়িয়েছে। তার পর স্ত্রী-র অসুস্থতা নিয়ে রাজ্য সভাপতি দিলীপের সঙ্গে মুকুলের সম্পর্কের ‘শৈত্য’ প্রকাশ্যে এসে পড়েছে। সে কারণেই দিলীপের বৈঠকে তাঁর অনুপস্থিতি নতুন জল্পনার জন্ম দিয়েছে। যদিও বিজেপি-র দফতরে দলীয় নেতাদের সশরীরে উপস্থিত থাকার কথা বলা হয়েছিল। সেই বিষয়টিকে সামনে রেখেই মুকুল-ঘনিষ্ঠদের ব্যাখ্যা, সদ্য কোভিড থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন তিনি। এই সময়ে তাঁর জনাকীর্ণ স্থানে যাওয়া উচিত নয়। সেই বিধি মানতে গিয়েই বিজেপি-র রাজ্য সভাপতির বৈঠকে গরহাজির রয়েছেন তিনি।