প্রিয় পশুর মুখে আহার তুলে দিতে মুটের কাজ

নিজস্ব প্রতিবেদক:- শেওড়াফুলির বাসিন্দা বছর আঠারোর রিতম৷ সেখানকারই একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র সে৷ হঠাৎই একদিন রিতমকে ছেড়ে চলে যায় তার বাবা। তারপর মাও ছেড়ে চলে যায় ছেলেকে৷ তবে সেই কঠিন মুহূর্তেও তার সঙ্গ ছাড়েনি তিন বছরের ল্যাব্রাডর প্রজাতির সারমেয় গুব্বু। এরপর শুরু নতুন লড়াই৷ নিজের পাশাপাশি প্রিয় পশুর মুখে আহার তুলে দিতে মুটের কাজ করত রিতম৷ যা আয় হত, তাতে দুবেলা দুমুঠো খাবার জোগাড় করতে পারতো না সে৷ তার ওপর মূল্যবৃদ্ধি, তাই বেশিরভাগ দিনই না খেয়ে কাটাতে হতো৷ পোষ্যের মুখেও খাবার তুলে দিতে পারত না সে৷ ফলে আস্তে আস্তে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে রিতম।এমনই বাবা-মা ছেড়ে যাওয়া এক সন্তানের কঠিন জীবনের ঘটনা জানতে পেরে চোখে জল সোদপুরের বাসিন্দা পশু-প্রেমী স্নিগ্ধা চৌধুরীর। তিনি ছুটে যান রিতমের কাছে৷ সব শুনে গুব্বুকে নিজের দায়িত্বে নিয়ে আসতে চাইলেও, আইনের কথা ভেবে রিতমকে তাঁর বাড়িতে নিয়ে আসতে চাইলেন না স্নিগ্ধা৷ এ কথা শুনে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে রিতম৷ পোষ্যকে ছাড়া বাঁচবে না বলে কাতর আবেদন তার৷সেই সময় আবাসনের সবার সাথে কথা বলেন স্নিগ্ধাদেবী। কেউ আপত্তি না করায় স্থানীয় প্রশাসনকে লিখিতভাবে বিষয়টি জানান তিনি। অনুমতি মিললে, রিতম ও তার পোষ‍্যর ঠিকানা হয় স্নিগ্ধা দেবীর সোদপুরের অমরাবতীর বাড়ি। খড়দহ থানায়ও গোটা বিষয়টি জানানো হয়েছে।অসহায় রিতমকে পড়াশোনা করানোর ইচ্ছা রয়েছে স্নিগ্ধা দেবীর। তাকে জীবনের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগী হয়েছেন তিনি। স্নিগ্ধাদেবীর এই উদ্যোগে গর্বিত তার স্বামী, পেশায় ব্যবসায়ী, কৌশিক চ্যাটার্জি। পাশাপাশি রিতম যাতে তার মা-বাবাকে ফিরে পায় সে বিষয়েও উদ্যোগী হবেন তিনি বলে জানান৷