গভীর রাতে জানলার শিক ভেঙে চুরি, মাত্র ৪০ মিনিটে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করল নিউ আলিপুর থানার পুলিশ। সূত্র: ফেলে যাওয়া একপাটি চপ্পল।

নতুন গতি নিউজ ডেস্ক। ২৫ জুলাই রাত ২.৩০ নাগাদ কলকাতা পুলিশের কন্ট্রোল রুমের ১০০ নম্বরে একটি ফোন আসে। অরিন্দম চ্যাটার্জি নামের একজন জানান, খানিক আগেই জানলার শিক ভেঙে চোর ঢুকেছিল তাঁর বাড়িতে। শব্দ শুনে ঘুম ভেঙে যাওয়ায় তিনি দেখেন, অন্ধকারে একটি ছায়ামূর্তি ঘরের ভিতর চলাফেরা করছে। প্রথমে ভয় পেলেও বাড়িতে চোর ঢুকেছে বুঝে তাকে ধাওয়া করেন অরিন্দম। কিন্তু ধরার আগেই জানলা গলে পালিয়ে যায় সেই চোর। অন্ধকারে তাকে দেখে রোগাটে চেহারার একজন কিশোর বলেই মনে হয়েছিল অরিন্দমের।

    অরিন্দম চ্যাটার্জি দক্ষিণ কলকাতার সাহাপুরের শীতলাতলা রোডের বাসিন্দা। জলের পাইপ বেয়ে তাঁর বাড়ির দোতলায় উঠেছিল সেই চোর। তারপর জানলার শিক ভেঙে ঢুকে আসে ঘরে। অরিন্দম জেগে যাওয়ায় ২টি দামি মোবাইল ফোন এবং কিছু নগদ টাকা ছাড়া আর বিশেষ কিছুই হাতাতে পারেনি চোর।

    লালবাজার কন্ট্রোল রুম থেকে যোগাযোগ করা হয় নিউ আলিপুর থানার সঙ্গে। দ্রুত অরিন্দমের বাড়িতে পৌঁছয় নিউ আলিপুর থানার বিশেষ টিম। বাড়ির পাঁচিলের সামনে একপাটি চপ্পল খুঁজে পান তদন্তকারী অফিসারেরা। চুরির ধরন দেখে মনে হচ্ছিল, স্থানীয় কোনো চোরেরই কাজ এটা। বাড়ির কোথায় কী থাকে সব খবরই তার কাছে ছিল।

    নিউ আলিপুর এবং মাঝেরহাট স্টেশন এলাকায় নজরদারি শুরু করে তদন্তকারী টিম। কড়া নজরদারি চলতে থাকে নিউ আলিপুর স্টেশনের প্ল্যাটফর্মেও। হঠাৎ নিউ আলিপুর স্টেশনের প্ল্যাটফর্মেই একজনকে দেখতে পান তদন্তকারী অফিসারেরা। বয়স উনিশ-কুড়ির বেশি না। পায়ে সেই একপাটি চপ্পল। অরিন্দমবাবুর বাড়ির পাঁচিলের সামনে এই একই চপ্পলের খোঁজই মিলেছিল।

    দ্রুত পাকড়াও করা হয় তাকে। তল্লাশিতে চুরি যাওয়া ২টি মোবাইল ও নগদ টাকার গোটাটাই উদ্ধার হয় তার জিম্মা থেকে। তদন্ত শুরুর মাত্র ৪০ মিনিটের মধ্যেই ধরা পড়ে অভিযুক্ত।

    ধৃত ছেলেটির নাম শেখ রাকেশ। বয়স ১৯। এই বয়সেই রীতিমতো হাত পাকিয়ে ফেলেছে চুরিতে।জিজ্ঞাসাবাদের সময় তদন্তকারী অফিসারদের বারবার বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছিল রাকেশ। ঠিকানা জিজ্ঞেস করলে কখনও বলছিল সোনারপুর, কখনও বলছিল শিয়ালদা। অবশেষে, জেরার মুখে ভেঙে পড়ে নিজের আসল ঠিকানার হদিশ দেয় রাকেশ। দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার দোলারহাটে তার বাড়ি। এরপর রাকেশের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ১৩টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করে নিউ আলিপুর থানার তদন্তকারী টিম। বলাই বাহুল্য, প্রতিটি মোবাইল ফোনই চুরি করে আনা।

    ছবি রইল তদন্তকারী দলের,ফিরে পাওয়া দুটি মোবাইল এবং উদ্ধার হওয়া টাকা সহ অরিন্দম চ্যাটার্জীর।অভিযুক্তের এবং উদ্ধার হওয়া ১৩টি মোবাইল ফোনের ছবিও থাকল।

    ছবিতে দাঁড়িয়ে, বাঁ দিক থেকে, হোমগার্ড প্রণব চ্যাটার্জী, সাব ইনস্পেক্টর মলয় কুমার গাঙ্গুলী, অমিতাভ দে, রিটন দাস এবং কল্লোল রায়, অ্যাডিশনাল ওসি নিউ আলিপুর থানা, ইনস্পেক্টর শৈবাল রায়, সাব ইনস্পেক্টর গৌতম রায় এবং প্রভিন সুব্বা। বসে, ওসি নিউ আলিপুর থানা, ইনস্পেক্টর অমিত শঙ্কর মুখার্জী।