রক্তদান না করার জন্য দেশ মিডিয়া লাল রংয়ের সম্প্রচার বন্ধ করেছিল

নিউগতি নিউজ ডেক্স :: ইউরোপের দেশগুলিতে রক্ত ​​সংকট রয়েছে, তার মধ্যে রোমানিয়া প্রথম সারিতে। সে দেশের ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ব্লাড ট্রান্সফিউশন এর প্রদত্ত পরিসংখ্যান অনুযায়ী মোট জনসংখ্যা মাত্র 1.4 শতাংশ মানুষ রক্তদান করে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তাও আবার পরিবারের কারও রক্ত ​​প্রয়োজন হয়। ফলত রক্তের অভাবে শিশুমৃত্যু, অপারেশন টেবিল রোগীর মৃত্যু বা প্রসূতির প্রাণ সংশয় কার্যকরী মহামারী চেহারা। সংকট কাটাতে ২015 সালে একটি বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়। সরকারি স্তর না, একেবারে বেসরকারীভাবে। মূলত এগিয়ে আসেন সেদেশের এক সংবাদ চ্যানেল ‘অবজারভেটর’ এবং আরবিজি আর ‘আনটোল্ড মিউজিক ফেস্টিভাল’ এর আয়োজকরা। ‘অবজারভেটর’ তাদের সংবাদ ‘অন-এয়ার’ করার সময় পর্দা থেকে লাল রং ব্যবহার বন্ধ করে দেয়। দর্শকরা টিভিতে যা দেখেন, তা হলুজ-সবুজ রঙের সংমিশ্রণ।

    অনেকে ভাবেন তাঁদের টিভি সেটটি খারাপ হয়ে গিয়েছে৷ এমন অবস্থায় নিউজ অ্যাঙ্কররা বলতে থাকেন, ‘আপনাদের টিভি খারাপ হয়নি মোটেই৷ দেশ থেকে রক্ত উধাও৷ সেটারই প্রতিফল পড়ছে পর্দায়৷ সমাজে রক্ত দরকার৷ মানুষ যেন এ-ব্যাপারে অবহিত হোন৷ রক্ত দিতে এগিয়ে আসেন৷’ গণমাধ্যমের এই উদ্যোগে বিপুল সাড়া পড়ে যায়৷ ধীরে-ধীরে রক্তদানের পরিমাণ বাড়তে থাকে৷রক্ত ​​দানগুলি রাজধানীতে 100% এবং দেশের বাকি অংশে 50% বেড়েছে। 14 মিলিয়ন রোমানিয়ান চার সপ্তাহের মধ্যে পৌঁছেছিল এবং সরকার তার বাজেটে 300% রক্তদান বৃদ্ধি করেছিল।
    অ্যান্টেনার টিভি সংবাদ উপস্থাপক আন্দ্রেয়া বেরসিলানু বলেন, “আমার বিরল রক্তের ধরন, হে নেতিবাচক, উদারতার প্রয়োজন সম্পর্কে এবং সচেতনদের জন্যও আমার উদ্বেগ সম্পর্কে সচেতন করে তোলে। অন্যদিকে, আরেকটি ক্যামপেন শুরু হয় ‘পে উইথ ব্লাড’ শিরোনামে৷ ‘আনটোলড মিউডিক ফেস্টিভ্যাল’-এর আয়োজকরা বিজ্ঞাপন দিতে থাকেন, যাঁরা বুখারেস্টের মোবাইল ব্লাড কালেকশন ইউনিটে রক্ত দেবেন, তাঁরা পাবেন ওই বিখ্যাত ফেস্টিভ্যাল-এ প্রবেশ করার ছাড়পত্র, একেবারে বিনামূল্যে৷ ২০১৫30 জুলাই থেকে ২ আগস্ট পর্যন্ত চলা এই ফেস্টিভাল-এ ‘পে উইথ ব্লাড’ ক্যাম্পেন হাজার হাজার মানুষ রক্ত ​​দেয়। রোমানিয়ার রক্তের হাহাকার বেশ কিছুটা প্রশমিত। রোমানিয়র এই উদাহরণ কি আমাদের দেশ কার্যকর হবে? রক্তদান বিষয়ে সচেতনতা কি সত্যিই সংকট কাটাতে লাগে? সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্র বিশেষজ্ঞ এবং অ্যাক্টিভিস্টরা বলছে, রক্তদান যে শরীরের কোনও ক্ষতি করে না, এটি মানুষকে বোঝাতে পারলে নিশ্চয়ই কাজ করবে। রক্ত কোন বিকল্প নেই। এটা আলাদা ভাবে তৈরি করা যায় না। কেউ রক্ত ​​দিলে, যে অন্যের প্রয়োজন, বা পরোক্ষ নিজের বা নিজের পরিবারের কাউকেও প্রয়োজন হয়, কাজে লাগবে, যত তাড়াতাড়ি মানুষ বুঝবে, ততই মঙ্গল। আর এই সচেতনতা উদ্যোগ নিতে হবে খুব দ্রুত।